চাঁদপুরে শেষ কর্মদিবস পর্যন্ত পরিচ্ছন্ন থাকার চেষ্টা করবো : জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান

অভিজিত রায় :
চাঁদপুরের নবাগত জেলা প্রশাসক কামরুল হাসানের সাথে চাঁদপুর প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ ও মাঠ পর্যায়ের অন্যান্য সাংবাদিকদের পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। ২ জুন বৃহস্পতিবার দুপুরে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে এই পরিচিতি সভায় নবাগত জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান বলেন, সাংবাদিকদের সকলের চোখ মিলে আমার তৃতীয় আরেকটি চোখ, যা দিয়ে আমি চাঁদপুরের সমস্যা এবং সম্ভাবনাগুলো দেখতে চাই। আমি সবসময় ইতিবাচক মনোভাবের মানুষ। আমি সমালোচনা গ্রহণ করতে পারি। সাংবাদিকদের লেখার হাত হবে উন্মুক্ত। সেই হাতে আমরা কখনোই শিকল লাগাতে যাবো না। যদি খুব ক্রটিবিচ্যুতি কিছু থাকে, তবে সম্ভব হলে রিপোর্ট করার আগে আমাদের সাথে একটু আলোচনা করে নেওয়ার অনুরোধ রইলো।
তিনি আরও বলেন, আমি এই সভার মাধ্যমে চাঁদপুর সম্পর্কে অনেক তথ্য জেনে নিজেকে সমৃদ্ধ করলাম। আজকের এ সভাটি না করলে হয়তো পরবর্তী ছয় মাস সময় লেগে যেতো তথ্য জানতে। এখান থেকে পাওয়া গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো নিয়েই আমার কর্মপরিকল্পনা সাজাবো। সম্ভব হলে প্রতি ৩ মাস অন্তর অন্তর এই রকম সভা করে আমাদের কাজের অগ্রগতির ফলোয়াপ তুলে ধরবো।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘চাঁদপুরে কতদিন কাজ করতে পারবো তা জানি না। তবে আমি প্রতিদিন সাদা ও নীল শার্ট পরিহিত অবস্খায় আমাকে অফিসে পাবেন। আমার এ শার্ট যেন সাদা থাকে সে দিকে খেয়াল রেখেই আমার কাজগুলো করবো। সাদা শার্ট যেন চাঁদপুর থেকে যাওয়ার শেষ দিন পর্যন্ত সাদা থাকে। এখানের শেষ কর্মদিবসটি পরিচ্ছন্নভাবে শেষ করতে পারি। যাতে আমার কাজে কিংবা গায়ে কোন কাদা না থাকে। আমি আপনাদের কাছে সে দোয়া এবং সহযোগিতাই কামনা করছি।
সভায় চাঁদপুরের সাংবাদিকরা তাদের বক্তব্যে নবাগত জেলা প্রশাসকের কাছে বিভিন্ন পরামর্শ এবং প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, চাঁদপুরে দ্রুত একটি আধুনিক নৌ-বন্দর গড়ে তোলা, একটি শিশু পার্ক তৈরি করা, শহরের লেকটি সংস্কার, চাঁদপুরে যানজট নিরসন, চাঁদপুর-রায়পুর সেতুর টোল আদায় বন্ধ করা এবং নদী ভাঙন থেকে চাঁদপুরকে রক্ষায় এবং ইলিশের অভয়াশ্রম যেন কেউ বালু তুলে নষ্ট না করতে পারে, আর কেউ যাতে অবৈধভাবে পদ্মা-মেঘনা থেকে বালু উত্তোলন করতে না পারে, সে বিষয়ে প্রশাসনকে সজাগ থাকা, আপিল বিভাগের রায় যেন লংঘন যেন কেউ না করে তাতে দৃষ্টি, শিশু পার্ক ও মেডিকেল কলেজের জন্য জমি, বিগত জেলা প্রশাসক যে জন গুরুত্বপূরণ কাজগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন সেগুলোর ধারাবাহিকতা, পর্যটনের উন্নয়ন, জেলা শিল্পকলা একাডেমির দৈন্যদশা এবং এর কমিটি গঠন , ঐতিহ্যবাহী টাউনহল মাকের্টে যেন আবার টাউন হলের মঞ্চ হয় সেটি বিবেচনায় নেওয়া, পৌর অডিটরিয়ামের দীর্ঘদিনের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করা।
এছাড়াও, চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় যেন দ্রুত বাস্তবায়ন হয়। এ প্রসঙ্গে প্রেসক্লাব সভাপতি গিয়াস উদ্দিন মিলন বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়টি কোথায় হয় বা হবে, সেটা আমরা বলবো না, আমরা চাই এটি চাঁদপুরে দ্রুত হোক।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. ইমতিয়াজ হোসেনের পরিচালনায় জেলা প্রশাসককে শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি বিভিন্ন প্রস্তবনা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন মিলন, সাধারণ সম্পাদক রিয়াদ ফেরদৌস, সাবেক সভাপতি কাজী শহাদাত, সাবেক সভাপতি শহীদ পাটোয়ারি, ইকবাল হোসেন পাটোয়ারি, দৈনিক চাঁদপুর সংবাদ পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক আব্দুর রহমান, প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রহিম বাদশা, সোহেল রুশদী, লক্ষ্মণ চন্দ্র সূত্রধর, জিএম শাহীন, এ এইচ এম এম আহসান উল্যা, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক আবদুল আওয়াল রুবেল, ও আলম পলাশ, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাদাত হোসেন শান্ত, চাঁদপুর জেলা ফটোজার্নালিস্ট , সভাপতি এমএ লতিফ, সাধারণ সম্পাদক কেএম মাসুদ, সিনিয়র সহসভাপতি অভিজিত রায়, চাঁদপুর টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি আল ইমরান শোভন, সাধারণ সম্পাদক কাদের পলাশ, , শাওন পাটওয়ারী, তালহা জোবায়ের, শরীফুল ইসলাম প্রমুখ

শেয়ার করুন

Leave a Reply