রোকেয়া দিবসে চাঁদপুরে ৯ জয়িতা সংবর্ধিত
সমাজকে এগিয়ে নিতে হলে নারী-পুরুষ সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে : জেলা প্রশাসক
: অভিজিত রায় :
” আন্তর্জাতিক নারী প্রতিরোধ এবং বেগম রোকেয়া দিবস উদযাপন উপলক্ষে “জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ” শীর্ষক কার্যক্রমের আওয়তায় শ্রেষ্ঠ জয়িতাদের সম্মাননা প্রদান চাঁদপুর সদর উপজেলা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
৯ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসন ও মহিলা বিষয়ক এবং জাতীয় মহিলা সংস্থার আয়োজনে ৫টি ক্যাডাগরিতে ৯ জন জয়িতার হাতে সম্মাননা স্মারক ও সনদপত্র তুলে দেন প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ। প্রধান অতিথির জেলা প্রশাসক তার বক্তব্যে বলেন, নারীদের জন্য আজকের দিনটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বেগম রোকেয়া নারীদের ধর্মীয় গোঁড়ামী থেকে তুলে আনতে কাজ করে গেছেন। তিনি শত বছরেরও অধিধকাল পূর্বে সমাজে নারীদের অধিকার আদায়ে কাজ করে গেছেন। তিনি বলেন, সমাজকে এগিয়ে নিতে হলে নারী-পুরুষ সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। আর তখনই সুসমাজ গড়ে তোলা সম্ভব। সকল অনুষ্ঠানে আগে নারীদের এগিয়ে আসতে হবে। নারী নির্যাতনের সকল ঘটনাতেই যে পুরুষদের সম্পৃক্ততা রয়েছে তা কিন্তু নয়। জেলা প্রশাসক বলেন, আমরা এমনও দেখি যে, কিছু সমাজে পরিবারে অনেক নারী ননদ, শাশুড়ি, জা – এর ভূমিকায় কিংবা অন্য কোন পরমাত্মীয় হয়ে সমাজে, পরিবারে নির্যাতন কিংবা সহিংসতায় অংশ নেয়। তা কখনোই কাম্য নয়। জেলা প্রশাসক বলেন, পরিবারে সবার আগে ছেলেটিকে শিক্ষিত করুন যেন সে বুঝতে পারে নারীর সম্মান ও মর্যাদটা। আর নারীকে তো স্বাবলম্বি হতে হলে, অধিকার সৃষ্টিতে অবশ্যই শিক্ষিত হতে হবে। জেলা প্রশাসক বলেন, সরকার নারীীর ক্ষমতায়নে, সমাজ রাষ্ট্রে নারীরর অংশ রহন নিশ্চিতে বিশেষ ভূমিকা রেখে চলেছে। এখন দেশের সকল সেক্টরে নারীদের কর্মকাণ্ড অনেক উজ্বল। দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকই নারী। আর নারীর প্রতি সংহিসংতা রোধে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। আর তা হলেই ত নারীর প্রতি সংহিসতা কমে আসবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব রাখেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইমতিয়াজ হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায়, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শানজিদা শাহনাজ, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী, জেলা শিক্ষা ও গবেষণা বিষয়ক কর্মকর্তা মাসুদুল আলম ভূঁইয়ার, ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী জাতীয় মহিলা সংস্থার কর্মকর্তা শাহ আলম মুন্সী, অর্থনৈতিক ভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারী সোহেলী সুলতানা স্বপ্না, সফর জননী নারী সাহিদা সোলাইমান।
জাতীয় মহিলা সংস্থার চাঁদপুর জেলা শাখার চেয়ারম্যান অধ্যাপিকা মাসুদা নূরের পরিচালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ পরিচালক আমেনা বেগম।
বক্তারা তাদের বক্তব্যে বলেন, বেগম রোকেয়া ১৮৮০ জন্ম নিয়ে মাত্র ৫২ বছর এ মহিয়ৈষী নারী জীবিত ছিলেন। ওনার জন্ম ও প্রয়ান দিবস একই দিনে। বেগম রোকেয়াকে শ্রদ্ধা ও সম্মান করতে হবে। আজ র্ট্রাপতি ও প্রধানমন্ত্রী বানী দিয়েছেন। আমাদের দেশের মাননীয় প্রধামন্ত্রী বিশ্বের ১০০ ক্ষতাধর নারী মধ্যে ৪৩ নম্বরে। নারীর ক্ষমতায়নে বিরাট ভূমিকা রেখে চলেছেন প্রধানন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশের রাষ্ট্রপতি পদটি ছাড়া আর প্রায় সকল পদে নারী বসেছেন। হয়তো কোন একদিন আমার দেশের রাষ্ট্রপতি পদে নারী বসবেন। চাঁদপুরে অনেকে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের অফিস অনেকে চিনেন না। আপনারা আপনাদের কাজের বিষয়ে তেমন কিছু প্রকাশ করেন না। আপনার কর্মকান্ড প্রচার প্রচারনা না করলে সমাজের নারীরা আগাতে পারবে না।
বক্তার আরো বলেন, একশত বছরের অধিককাল পূর্বে নারীর ক্ষমতায়নে কাজ করে গেছেন বেগ রোকেয়া।প্রত্যেক ঘরেই সন্তানরা তাদের মায়ের থেকে বেশী সহযোহিতা পেয়েছেন। বর্তমান সরকারের আমনে জয়িতা অন্বেষণ কার্যক্রমটি শরু করে। এতে সমাজে নারীর অংশ গ্রহন আরো বৃদ্ধি পাবে।
৫টি ক্যাটাগরিতে ৯জন জয়িতাকে নির্ধারন করা হয়েছে। জেলা সদর কমিটি কর্তৃক নির্বাচিত ৫ ক্যাটগরিতে ৫ জয়িতারা হলেন: সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রেখেছেন যে নারী রোকেয়া সুলতানা বকুল, শিক্ষা ও চাকুরী ক্ষেত্রে সাফল অর্জনকারী নারী (হাজীগঞ্জ উপজেলা) শাহীনুর আক্তার, ফাতেমা আক্তার, নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করেছেন যে নারী (জেলা পর্যায়ে) মিনু বেগম ও সমাজ উন্নয়নে অসাসান্য অবদান রেখেছেন যে নারী (মতলব দক্ষিণ উপজেলা) আনজুমান বেগম।
জেলা সদর কমিটি কর্তৃক নির্বাচিতর ৪ ক্যাটগরিতে ৪ জয়িতারা হলেন: অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারী সোহেলী সুলতানা স্বপ্না, সফল নারী সাহিদা সোলাইমান, সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রেখেছেন যে নারী রোকেয়া সুলতানা বকুল ও শিক্ষা ও চাকুরী ক্ষেত্রে সাফল অর্জনকারী নারী (হাজীগঞ্জ উপজেলা) শাহীনুর আক্তার।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন ঝুমা আক্তার পবিত্র গীতা পাঠ করেন মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ইতি রানী।