শয্যাশায়ী সাবেক চেয়ারম্যান আ. রশিদের অবস্থা দেখে কাঁদলেন মেয়র লিপন
শাখাওয়াত হোসেন শামীম :
হাজীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যাপক ও উপজেলা পরিষদ এবং পৌরসভার সাবেক দুই দুই বারের চেয়ারম্যান এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক আব্দুর রশিদ মজুমদার দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থতায় ভুগছেন।
অসুস্থ সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আ.রশিদকে দেখে নিজেও কাঁদলেন অন্যদেরকেও কাঁদালেন পৌর মেয়র আ.স.ম মাহবুব-উল আলম লিপন।
গতকাল শনিবার (২ এপ্রিল) অসুস্থ সাবেক চেয়ারম্যানকে দ্বিতীয় বারের মত তাকে দেখতে তার বাসভবনে ছুটে যান হাজীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি রাজনৈতিক সহযোদ্ধা আ. স. ম. মাহবুব-উল আলম লিপন।
পৌর মেয়র লিপনকে দেখে দেশের জনপ্রিয় পুরস্কার প্রাপ্ত সাবেক চেয়ারম্যান ও অধ্যাপক আব্দুর রশিদ মজুমদারের দুচোখে যেন অশ্রুধারায় রূপান্তরিত হয়েছে। তেমনি প্রিয় নেতার শারীরিক অবস্থা বেগতিক দেখে দুচোখে কান্নার টলমল অবস্থায় নিজের আবেগ ধরে রাখতে পারেনি পৌর মেয়র লিপন। এক প্রকার কোলে টেনে নিয়ে মাথায় হাত জড়িয়ে ধরে এক দীর্ঘধ্বনি নিশ্বাস প্রশ্বাসের প্রশান্তি খোজেন এক সময়ের রাজপথ কাপানো এ দুই নেতা। তাদের এ নিরবতা যেন চারদিক কিছু সময়ের জন্য নিস্তব্ধতা পরিবেশে রূপ নেয়। তিনি দীর্ঘ সময় অধ্যাপক আব্দুর রশিদ মজুমদারের বাসায় অবস্থান করেন। তার চিকি’সার খোঁজ খবর নেন। প্রয়োজনে উন্নত চিকি’সার ব্যাপারে পরামর্শ দেন মেয়র আ.স.ম মাহবুব-উল আলম লিপন।
সব ঠিক হয়ে যাবে, ঔষুধ ঠিক মত খাওয়াবেন, কোন কিছুর প্রয়োজন হলে নক করবেন আমি দেখবো বলে প্রিয় নেতার দেখবাল করা দায়িত্বরতদের বলে বিদায় নেন মেয়র মাহবুব-উল আলম লিপন।
মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক আদর্শ বাস্তবায়নে, দলীয় সভানেত্রী, জননেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চলমান উন্নয়ন কর্মকান্ডকে এগিয়ে নিতে এবং ভিশন ২১ ও ৪১ তৃণমূলে বাস্তবায়নে একজন ক্ষুদ্র অংশিদার হয়ে সক্রিয়ভাবে জড়িত থেকে কাজ করেছেন তিনি।
পৌরসভাধীন মকিমাবাদ গ্রামের মজুমদার বাড়ির মৃত আলহাজ্ব আ. মতিন মজুমদারের ছেলে আলহাজ্ব অধ্যাপক আবদুর রশিদ মজুমদার। বিএ (সম্মান) ও এমএ অর্থনীতি’তে ডিগ্রিধারী অধ্যাপক আব্দুর রশিদ মজুমদার ১৯৮০ সালে হাজীগঞ্জ ডিগ্রী কলেজে শিক্ষকতার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। এরপর ২০০৮ সাল পর্যন্ত তিনি কর্মরত ছিলেন। ছাত্রলীগের প্রার্থী হিসেবে ১৯৬৯ সালে আমিন মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হয়ে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে সক্রিয়ভাবে অংশ গ্রহণ করেন অধ্যাপক আবদুর রশিদ মজুমদার । ২০০৮ সালে প্রথমবারের মতো উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে অধ্যাপক আবদুর রশিদ মজুমদার দেশের শ্রেষ্ঠ উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার হতে পুরস্কার ও এ্যায়ওয়ার্ড লাভ করে উপজেলাকে সম্মানিত করেছেন। এরপর তিনি ২০১৪ সালে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে উপজেলা চেয়ার্যান নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন। এর আগে তিনি হাজীগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যান হিসেবে দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৭২ সালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ ও পরবর্তীতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সক্রিয় সদস্য ছিলেন অধ্যাপক আবদুর রশিদ মজুমদার। জনপ্রিয়তা, জয়জয়কার, সব-ই ছিলো চোখে পড়ার মতো। পাশে ছিলো রাজনৈতিক, জ্ঞ্যানী, গুণী, বিশিষ্টজন। হয়তো এখন পাশে থাকার, দেখার কেউ নেই, কিন্তু মৃত্যুর পর জানাযায় অনেক মানুষ হবে, অনেক কান্না করবে, গুণকীর্তি স্বীকার করবে, হৃদয় উজাড় করা ভালোবাসা, মায়া, শ্রদ্ধা, ভক্তি, সম্মানের কোন কমতি হবেনা। কিন্তু সেই দেখা সময়ের মধ্যে হলে বেঁচে থাকতো ভালোবাসা, পাশে থাকাই উত্তম স্বস্তিক। হাজীগঞ্জে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক অঙ্গনে ও জনপ্রতিনিধি হিসাবে অধ্যাপক আব্দুর রশিদ মজুমদার মডেল হিসাবে খ্যাতিমান একজন ব্যক্তি। তিনি (সাবেক) অধ্যাপক- হাজীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ। (সাবেক) সভাপতি – হাজীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ। (সাবেক) দুই দুইবারের চেয়ারম্যান – হাজীগঞ্জ পৌরসভা। (সাবেক) দুই বারের চেয়ারম্যান – হাজীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ। দীর্ঘদিন অসুস্থ, মৃত্যু পথযাত্রী প্রিয় নেতার সুস্থ্যতা ও নেক হায়াত কামনা করে রাজনৈতিক সহযোদ্ধা হাজীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আ. স.ম. মাহবুব-উল আলম লিপন বলেন, আওয়ামী লীগের ত্যাগী, পরিশ্রমী, মেধাবী সকল গুনের অধিকারী হলেন অধ্যাপক আব্দুর রশিদ মজুমদার। তার মত নেতা আজ আওয়ামী লীগে বিরল। আমি তার সুস্থতা কামনা করছি।