সরকার আইসিটি এ্যাক্ট করেছে ভুঁইফোড় গণমাধ্যম ও অপসাংবাদিকতা রোধ করতে : পিআইবি মহাপরিচালক
চাঁদপুরে সাংবাদিবতায় পিআইবি’র ৩দিন ব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপনি
: আশিক বিন রহিম :
প্রেস ইনস্টিটিউট বায়লাদেশ (পিআইবি) এর আয়োজনে চাঁদপুর জেলার সাংবাদিকদের নিয়ে ৩ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপনি ও সদনপত্র বিতরণ হয়েছে। ১৬ সেপ্টেম্বর বুধবার বিকেল চাঁদপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন এবং প্রশিক্ষণে অংশ নেয়া সাংবাদিকদের হাতে সনদপত্র তুলে দেন পিআইবির মহাপরিচালক ও প্রখ্যাত সাংবাদিক, কবি জাফর ওয়াজেদ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মো. জিল্লুর রহমান জুয়েল।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পিআইবির মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ বলেন, চাঁদপুরের সাংবাদিকরা অনেক মেধাবী এবং পরিশ্রমি। বাংলাদেশে প্রথম চক্ষুদান করেছিলেন চাঁদপুরের মাজহারুল হক চক্ষু হাসপালের ডা. মাজহারুল হক। অথচ এসব বিষয়ে কেউ কথা বলে না। আমরা জাতি হিসেবে অকৃতজ্ঞ, বলেই অন্যের ভালোটা দেখতে পারি না। এখানে একজন একজনকে টেনে ধরে রাখতে চায়।
আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে সারা দেশে তথ্য-প্রযুক্তির বিকাশ ঘটেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০২১ সনকে ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণা করেছিলেন। যার করোনার এই ঘরবন্দী জীবনে অনেককেই ঘরে বসে তথ্য-প্রযুক্তির সুবিধা নিয়ে কাজ করেছেন। করোনকালে আমরাও প্রযুক্তির সহযোগিতা নিয়ে অনলাইনে সারাদেশের সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা করিয়েছি।
তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকার যে আইসিটি অ্যাক্ট করেছে সেটা সত্যিকারের গণমাধ্যমের জন্য নয়, ভুঁইফোড় গণমাধ্যমেদের জন্য। এটি মূলত ফেসবুক ও ভুঁইফোড় অনলাইন আর অপ সাংবাদিকতা বন্ধে করা হয়েছে। সাংবাদিকের কাজ হচ্ছে যে সংবাদ সমাজ ও মানুষের কল্যান বয়ে আনে সে সংবাদ লেখা। মানুষের কল্যানে তথ্য সংগ্রহ করে সংবাদ প্রকাশ করতে হবে।
জাফর ওয়াজেদ আরো বলেন, তথ্য-প্রযুক্তি তথা মোবাইলের কানসে আমাদের কাজ অনেক সহয হয়ে গেছে। এখন কেবল সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে। এজন্যে নিজের দক্ষতা বাড়াতে হবে। চাঁদপুরে সাংবাদিক ইউনিয়ন নেই। এটি করতে হবে। চাঁদপুর একটি প্রচীণ জনপদ। এই জনপদের অনেক কৃতি সন্তান সমাজ বিনির্মাণে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রেখেছেন। অথচ শান্তিদেব ঘোষ, সাগরময় ঘোষ কিংবা শঙ্খ ঘোষকে জীবদ্দশায় চাঁদপুরে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। বলা হয়নি আপনারা চাঁদপুরে এসে নিজেন পৈত্রিক ভিটে ঘুরে যান। আপনারা তাদের নিয়ে গর্ব করতে পারেন।
পৌর মেয়র মোঃ জিল্লুর রহমান জুয়েল বলেন, সমাজ বিনির্মাণে সাংবাদিকদের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। কারণ, তাদের লেখা পড়ে মানুষ ভালোমন্দ দেখতে পায়। চাঁদপুরে সাংবাদিকদের সাথে রাজনীতিবিদ ও জনপ্রতিনিধিদের চমৎকার সুসম্পর্ক রয়েছে। এখানে ভালো সাংবাদিকতার চর্চা হয়। এই জেলার সাংবাদিকদের নিয়ে আজকের এই উদ্যোগের জন্যে পিআইবিকে অন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। তিনি পিআইবিকে চাঁদপুরের সাংবাদিকদের আরো বেশি সহযোগীতা করার অনুরোধ জানান।
চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রহিম বাদশার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, রিসোর্স পার্সন এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক ও গণযোগাযোগ বিভাগের অধ্যাপক ড. প্রবীর কুমার পাণ্ডে, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কাজী শাহাদাত, গোলাম কিবরিয়া জীবন, শহীদ পাটোয়ারি, গিয়াস উদ্দিন মিলন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোহেল রুশদী, লক্ষ্মণ চন্দ্র সূত্র ধর, আহসান উল্লাহ, চাঁদপুর টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি আল ইমরান শোভন, সিনিয়র সাংবাদিক আব্দুর রহমান, অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন, আব্দুল আউয়াল রুবেল, ফারুক আহমেদ, শাহাদাত হোসেন শান্ত।
প্রশিক্ষণার্থীদের পক্ষ থেকে অনুভূতি ব্যক্ত করেন ফটোজার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কেএম মাসুদ, সাংবাদিক আব্দুল গণি, আশিক বিন রহিম, এইচএম নিজাম, শরীফুল ইসলাম, ইব্রাহিম খান।
এ সময় চাঁদপুরের সিনিয়র সাংবাদিক ও পিআইবির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
৩ দিন ব্যাপী এই কর্মশালায় সাংবাদিবতায় দুই বিভাগে দু’টি বিষয়ে ৭০ জন সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন। এরমধ্যে সাংবাদিবতায় বুনিয়াদি প্রশিক্ষণে ৩৫জন এবং অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা ৩৫ জন অংশ নেন।