স্বাধীনতা বিরোধীদের সব স্থান থেকে প্রতিহত করতে হবে : শিক্ষামন্ত্রী

চাঁদপুর সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন উদ্বোধন
: আশিক বিন রহিম :
চাঁদপুর শহরের বাবুরহাট এলাকায় সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে। ৬ নভেম্বর শনিবার সকালে প্রধান অতিথি হিসেবে ফিতাকেটে কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি।
তিনি বলেন, আজকে যে কমপ্লেক্স উদ্বোধন করা হয়েছে তা প্রধানমন্ত্রীর অবদান। যাদের কারনে আজ বাংলাদেশ স্বাধীন তাদের ত্যাগকে গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছি। স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সকল শহীদ, বিরাঙ্গনাসহ যারা অকুতোভয়ে দেশের জন্য জীবন দিয়েছে তাদের প্রতি জানাই সশুদ্ধ সালাম। সেদিন জীবনে ঝুঁকি নিয়ে যারা যুদ্ধে নেমেছে, তাদের কেউ ফিরেছে, কিউ ফিরেনি। দেশ স্বাধীন করতে হবে, তাদের এমন অদম্য চিন্তায় আজ আমরা স্বাধীন দেশে বাস করছি।
ডা. দীপু মনি এমপি বলেন, স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তিকে প্রতিহত করতে হবে। যারা স্বাধীনতাকে বিকৃত করে তাদেরকে চিহৃত করতে হবে। স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির সাথে থাকতে হবে। আজকে যে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করা হয়েছে, সেখানে যদি সপ্তাহে ১ দিন মুক্তিযোদ্ধারা নতুন প্রজন্মদের স্কুল কলেজের ছাত্র ছাত্রী নিয়ে মুক্তিযোদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে আলোচনা করে তাহলে তারা মুক্তিযোদ্ধকে জানতে পারবে। দেশকে জানবে, স্বাধীনতাকে জানবে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী সব সময় মুক্তিযোদ্ধাদেকে সম্মান করেন। মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে ভাবেন। কিভাবে তাদেরকে ভাল রাখা যায়, সে বিষয় নিয়ে কাজ করছেন। প্রধানমন্ত্রী দরিদ্র মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসনের ব্যবস্থা করেছেন। সম্মানী ভাতা বৃদ্ধি করছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের ছেলে, মেয়ে, নাতি নাতনীদের চাকরি দিচ্ছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের কারনেই এ দেশ স্বাধীন হয়েছে। তারা এদেশ স্বাধীন না করলে আমরা আজ এখানে বসতে পারতাম না।
প্রধানমন্ত্রীর সঠিক নের্তৃত্বের কারনেই এগিয়ে যাচ্ছে। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে মুক্তিযোদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে হবে।
তিনি বলেন, স্বাধীনতা বিরোধীচক্র ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর স্বপরিবার হত্যা করেছে। জাতীয় ৪নেতাকে হত্যা করেছে। তাদেরকে হত্যা করে ঘাতকচক্র স্বাধীনতার ইতিহাসকে ধ্বংস করতে চেয়েছে। ঘাতকচক্র স্বাধীনতার যেন কোন চিহৃ না থাকে সেপথে এখনো হাঁটছে। যারা বঙ্গবন্ধু অবর্তমানে মুক্তিযোদ্ধাকে নের্তৃত্ব দিয়েছে, তাদের ইতিহাস সমাজে অম্লান হয়ে থাকবে। মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান।
তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতা বিরোধীদের সবস্থান থেকে প্রতিহত করতে হবে। তাদের কোথায় ও স্থান দেওয়া যাবেনা। সবাই কাঁদে কাঁদ মিলিয়ে যুদ্ধে গিয়েছে। কে হিন্দু কে মুসলিম তা কেউ ভাবেনি। আজকে মন্দিরে আমাদের ধর্মীয় গ্রন্থ কোরআন শরীফ মন্দিরে রেখে দেশকে অস্থির করার চেষ্টা করেছিল। জাতীর পিতা কখনো বাংঙালীদেরকে আলাদা করে দেখেনি। যারা ধর্মের উপর আঘাত করে তাদেরকে শক্ত হাতে দমন করতে হবে। ধর্মের উপর আঘাত করা যাবেনা। বঙ্গবন্ধু সংগ্রাম আন্দোলনের মধ্যমে অসংবাধিত নেতা হয়েছে। মনে রাখতে হবে। যারা ৭১ রে স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ছিল এখনো তারা স্বাধীনতার বিপক্ষে রয়েছে।
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশের সভাপতিত্বে ও সদর উপজেলা প্রকৌশলী এএসএম রাশেদুর রহমানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ পিপিএম বার, এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ইউনুছ হোসেস বিশ্বাস, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত নারী মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ সৈয়দা বদরুন্নাহার, ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডঃ জাহিদুল ইসলাম রোমান, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার সিরাজুল ইসলাম বরকন্দাজ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আবুল কালাম চিশতী।
অনুষ্ঠানে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তাফাজ্জল হোসেন এসডু পাটওয়ারী, সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আইউব আলী বেপারী, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আবিদা সুলতানা, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সহ সভাপতি এএইচএম আহসান উল্ল্যাহ, ১৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর খায়রুল ইসলাম নয়ন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জহির উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন খান, সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এবিএম রেজওয়ানসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেওলায়াত পাঠ করেন সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ২বারের নির্বাচিত কমান্ডার আবু কালম চিশতী, গীতাপাঠ করেন মুক্তিযোদ্ধা স্বাধন সরকার।

 

শেয়ার করুন

Leave a Reply