চাঁদপুরে ঈদ উদযাপনে ব্যাপক প্রস্তুতি

* ঈদের সময় বাসা-বাড়ির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে
* লঞ্চে যাত্রী হয়রানিরোধে পদক্ষেপ নিতে হবে
* নদীতে বাল্কহেড চলাচল করতে দেয়া হবে না
* চাঁদপুরে আসা-যাওয়া সকল যাত্রীদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে
* পুরনো কোন লঞ্চ বা ছোটাকৃতির লঞ্চ কোনভাবেই চলতে পারবে না
* বিতর্কিত কোন ইমামকে ঈদের জামাতে ইমামতি করতে দেয়া যাবে না : জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ
চাঁদপুর প্রতিদিন রিপোর্ট :
চাঁদপুরে আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উদযাপন উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা সম্পন্ন হয়েছে।
বুধবার (২০ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টায় চাঁদপুর জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে এ সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় সভাপতির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) অঞ্জনা খান মজলিশ। তিনি বলেন, আমরা এ সভায় সার্বিক যে সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছি, তা সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হলে আসন্ন ঈদ যাত্রা নিরাপদ হবে এবং চাঁদপুরবাসী আমরা সবাই মিলে ঈদ আনন্দে পালন করতে পারবো।
জেলা প্রশাসক বলেন, রেলের ছাদে বসে যাত্রীরা গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা করে, অনেক সময় ছাদ থেকে পড়ে যাওয়ার মত দূর্ঘটনা ঘটে , এধরণের দুর্ঘটনা যেন না ঘটে তার জন্যে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। রেলের ছাদে বা রেলে ঝুলে যেতে না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। জেলা প্রশাসক বলেন, বাসের যাত্রীদের নিয়ে একধরণের অসুস্থ প্রতিযোগিতা লক্ষ্য করা যায়, সেদিকে সংশ্লিষ্টদের নজর রাখতে হবে। ঈদের সময় অনেকেই গ্রামে যায় তখন শহরের বাসা-বাড়ি কিছুটা নিরাপত্তাহীনতায় থাকে, এসময় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ বিভাগকে অনুরোধ জানান তিনি।
চাঁদাবাজির প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক বলেন, ঈদকে কেন্দ্র করে অনেকসময় মার্কেট, যানবাহনের মধ্যে চাঁদাবাজি হয়। এ চাঁদাবাজি যেন না হয় সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখবেন পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী অন্যান্য সংস্থাগুলো।
বড় স্টেশন মোলহেডে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু পর্যটন পার্ক সম্পর্কে জেলা প্রশাসক বলেন, শহরে বড় কোনো পার্ক বলতে বড়স্টেশনের মোলহেডের বঙ্গবন্ধু পর্যটন পার্ককেই বুঝানো হয়। এ পর্যটন পার্ক নিয়ে আমাদের বড়রকমের পরিকল্পনা ছিলো। জেলা প্রশাসন ও পৌরসভার সমন্বয়ে আমরা প্রবেশদ্বার করেছি। পাশাপাশি কিছু বসার স্থানসহ নানা কাজ করেছি। আরো সুন্দরভাবে গড়ে তোলারও পরিকল্পনা রয়েছিলো। কিন্তু রেল বিভাগের কারণে আমরা তা করতে পারিনি । এখন এখন জেলা প্রশাসন আর এইখানে নেই। যেহেতু রেলের সম্পত্তি তারা আমাদের কোন কাজ করতে দিবে না, আমরাও কোন কাজ আর করছি না, পুরোটাই এখন রেলের তত্ত¡াবধানে। তাই সেখানে সিএনজি অটোরিকশা এবং ঘুরতে আসা পর্যটকদের দায়দায়িত্ব এখন রেলের। এ দায়দায়িত্ব এখন প্রশাসন বা পৌরসভার নয়। যেহেতু আমাদের কোনরূপ কাজ করতে দেয়া হচ্ছে না তাই আমরাও আর কোন দায়দায়িত্ব নিচ্ছি না।
জেলা প্রশাসক বলেন, কোন জামাতে কোন ইমাম ইমামতি করছেন, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেয়া হয় তার তালিকা করার জন্যে। বিতর্কিত কোন ইমামকে ইমামতি করতে দেয়া যাবে না।
জেলা প্রশাসক নৌ- পথ সম্পর্কে বলেন, চাঁদপুর দেশের অন্যতম নৌ বন্দর। এখানের অন্যতম প্রধান চলাচলকারি পথই হচ্ছে নদী পথ অর্থাৎ নদী পথে লঞ্চ চলাচল। তিনি বলেন, স্টীমার এবং লঞ্চঘাটে যাত্রী হয়রানি, অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে লঞ্চ ছাড়া এগুলো কোনভাবেই চলতে দেয়া যাবে না। ঘাটে সিএনজি অটোবাইকের চালকদের দৌরাত্ম্য, বিশৃংখলা সৃষ্টি, ভাড়া বেশি আদায় এসবের দিকে নজর দিতে হবে। পুরনো কোন লঞ্চ বা ছোটাকৃতির লঞ্চ কোনভাবেই চলতে পারবে না। এগুলো দেখভাল করার দায়িত্ব যারা আছেন, আপনারা এ কাজগুলো অবশ্যই তদারকি করবেন। লঞ্চযাত্রীদের প্রসঙ্গে বলেন, চাঁদপুরে আসা-যাওয়া সকল যাত্রীদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। নৌকা দিয়ে মাঝ নদী থেকে যাত্রী উঠা নামা করা যাবে না। যাত্রী হয়রানি রোধে সকল ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কোন ধরণের বাল্কহেড চলাচল করতে দেয়া হবে না। লঞ্চঘাটে ভ্রাম্যমাণ টয়লেটের ব্যবস্থা করতে হবে। যেসব জায়গাতে যাত্রী হয়রানি হয় সেসব জায়গাতে আমাদের পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি বলেন, ঈদের ৫/৭ দিন আগে থেকেই এবং ঈদোত্তর পরবর্তী কমপক্ষে ৭ থেকে ১০ দিন উপরোক্ত বিষয়গুলো নিয়ে বিশেষ সজাগ থাকতে হবে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. ইমতিয়াজ হোসেন এর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) সুদীপ্ত রায়, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব নাছির উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, পৌরসভার মেয়র অ্যাড. জিল্লুর রহমান জুয়েল, এনএসআইর উপপরিচালক শেখ আরমান, প্রেসক্লাবের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন মিলন, সাবেক জেলা কমান্ডার যোদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ ওয়াদুদ, প্রমুখ।
এসময় সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply