চাঁদপুরে যেভাবে করোনা ল্যাব এবং সেন্ট্রাল অক্সিজেন হয়ে গেছে, সেভাবে আইসিইউও হয়ে যাবে

নিজস্ব প্রতিবেদক :
চাঁদপুর জেলায় চিকিৎসা সেবায় আমূল পরিবর্তন এবং অভাবনীয় সাফল্য যে দুজন মানুষের বদান্যতায় হচ্ছে, সে দুজন হচ্ছেন ভাষাবীর এমএ ওয়াদুদ সাহেবের সন্তান শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এবং তাঁর বড় ভাই ডাঃ জেআর ওয়াদুদ টিপু। তাঁদের দুজনের বিশাল ত্যাগ এবং ত্বরিত সিদ্ধান্তে চাঁদপুরে করোনা টেস্টের ল্যাব হয়েছে এবং সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্টও হয়েছে। আর এর সুফল ভোগ করছেন পুরো জেলাবাসীসহ চাঁদপুরের আশপাশের কয়েকটি জেলার মানুষ। এখন আইসিইউও তাঁদের সরাসরি তত্ত্বাবধানে হয়ে যাবে বলে আশাবাদী চাঁদপুরবাসী। এই আশাবাদকে আরো সুদৃঢ় করলেন ডাঃ জেআর ওয়াদুদ টিপু। তিনি খুব দৃঢ়তার সাথে বললেন, চাঁদপুরে যেভাবে করোনা টেস্টের ল্যাব এবং সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্ট হয়েছে, সেভাবেই আড়াই শ’ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল কেন্দ্রিক আইসিইউও হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। এ ক্ষেত্রেও ভাষাবীর এমএ ওয়াদুদ মেমোরিয়াল ট্রাস্টের পক্ষ থেকে সকল ধরনের সহযোগিতা এবং সাপোর্ট থাকবে।
চাঁদপুরের জন্যে যে তিনটি আইসিইউ বেড বরাদ্দ হয়েছে এর সুফল কবে নাগাদ মানুষ পেতে পারে সে বিষয়ে এই প্রতিবেদক কথা বলেন ডাঃ জেআর ওয়াদুদ টিপুর সাথে। তিনি এ বিষয়ে বেশ খোলামেলা কথা বললেন। তিনি বলেন, চাঁদপুরের আড়াই শ’ বেডের হসপিটালের জন্যে আইসিইউর যে তিনটি বেড বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, তা শুধু করোনা রোগীদের জন্যেই স্থাপন করা হবে না, করোনা নিয়ন্ত্রণে চলে আসলে অন্য মুমূর্ষু রোগীরাও যাতে এ হাসপাতালে আইসিইউর সেবা পায় সেভাবেই আইসিইউর বেড স্থাপন করা হবে। অর্থাৎ এটি আইসোলেশন ওয়ার্ডে না করে হাসপাতালের ভবনেই আলাদা জায়গায় করার চিন্তা ভাবনা করছি। যাতে অন্য রোগীরাও এর সুবিধা ভোগ করতে পারে। আশা করি এটি আমরা করতে পারবো। এর জন্যে আমি সহসা চাঁদপুরে এসে সিভিল সার্জন, হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়ক এবং অন্য চিকিৎসকদের সাথে কথা বলবো, পরিকল্পনা করবো এবং সরজমিনে সব কিছু দেখবো। ডাঃ টিপু বেশ দৃঢ়তার সাথে বলেন, চাঁদপুরে যেভাবে করোনা টেস্টের ল্যাবরেটরি হয়েছে, হাসপাতালে অক্সিজেন প্লান্ট হয়েছে, ইনশাআল্লাহ সেভাবে আইসিইউও হয়ে যাবে। তিনি বলেন, করোনা টেস্টের ল্যাবরেটরির জন্যে যদি সরকারি বরাদ্দ এবং সরকারিভাবে ভবন করাসহ সকল কিছুর দিকে চেয়ে থাকতে হতো, তাহলে হয়ত এতোদিনেও চাঁদপুরে এই ল্যাবরেটরি আলোর মুখ দেখতে পেতো কি না সন্দেহ। যখন দেখা গেলো চাঁদপুরে করোনা টেস্টের রিপোর্ট পেতে ৮/১০ দিনেরও বেশি সময় লেগে যেতো, তখন আমি এবং আমার বোন শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এ বিষয়ে কিছু একটা করতে উদ্যোগী হলাম। চাঁদপুরে আমরা কোভিড-১৯ শনাক্তকরণ পরীক্ষাগার করার উদ্যোগ নিলাম। এ ক্ষেত্রে ডাঃ দীপু মনি তাঁর সমুদয় সঞ্চয় এবং আমার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে বেশ কিছু অর্থ এখানে ব্যয় করার সিদ্ধান্ত নিলাম। একইভাবে আড়াই শ’ বেডের হসপিটালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্ট করার চিন্তা ভাবনা করলাম। অবশ্য এ ক্ষেত্রে ডাঃ দীপু মনিকে বিপুল উৎসাহ বা প্রেরণা দিয়েছেন এবং সহযোগিতার আশ^াস দিয়েছেন আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর উৎসাহ এবং সাহস পেয়ে আমাদের বাবার নামে প্রতিষ্ঠিত ভাষাবীর এম এ ওয়াদুদ মেমোরিয়াল ট্রাস্টের নামে ল্যাব এবং সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্ট করার কাজে হাত দিলাম। আলহামদুলিল্লাহ সফল হয়েছি। এখন এর সুফল ভোগ করছে চাঁদপুর জেলাবাসীসহ আশপাশের কয়েকটি জেলার মানুষ। আর এ কাজে স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে আসে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস ইউনিভার্সিটি (সিভাসু)। এটির উপাচার্য অধ্যাপক গৌতম বুদ্ধ দাশের আন্তরিকতা এবং সহযোগিতার জন্যে আমরা তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ।
ডাঃ টিপু বলেন, করোনা টেস্টের ল্যাবরেটরি যেভাবে হয়ে গেছে, আইসিইউও সেভাবে হয়ে যাবে। তিনি আরো বলেন, শুধু আইসিইউও বেড হলেই হবে না। এর জন্যে প্রয়োজনীয় আরো সরঞ্জামাদি, প্রশিক্ষিত লোকবল, অক্সিজেন সাপোর্টসহ আরো অনেক কিছু সম্পৃক্ত আছে। এ সবেরও ব্যবস্থা করতে হবে। আর এ সব কিছু নিয়ে আমরা জেলা প্রশাসক, তত্ত্বাবধায়ক, সিভিল সার্জন এবং বিএমএ নেতৃবৃন্দসহ হাসপাতালের দায়িত্বশীল ডাক্তারদের সাথে আমার এবং শিক্ষামন্ত্রীর সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, আমরা রাজনীতি করি মানুষের কল্যাণের জন্যে। জনগণের কল্যাণে যা কিছু করা দরকার আমরা তা-ই করার জন্য সবসময় প্রস্তুত আছি। চাঁদপুরবাসীসহ দেশবাসীর কাছে দোয়া চাচ্ছি আমরা যেনো জীবনের বাকি সময়টাও জনগণের সেবায় আত্মনিয়োগ করতে পারি।

শেয়ার করুন

Leave a Reply