চাঁদপুর লঞ্চটার্মিনালে অব্যবস্থাপনা-বিশৃঙ্খলায় যাত্রীদের দুর্ভোগ

আশিক বিন রহিম :
চরম অবব্যস্থপনা আর বিশৃঙ্খলায় মধ্যদিয়ে চলছে চাঁদপুর লঞ্চঘাটে যাত্রীসেবার কার্যক্রম। লঞ্চঘাটের টার্মিনালে যত্রতত্র অবৈধভাবে ভ্রাম্যমান দোকান অর যাত্রী নিয়ে একদিকে লঞ্চ শ্রমিক অন্যদিকে সিএনজি চালকদের টানাহেঁচড়ায় চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে যাত্রিরা। অথচ এসব দেখার যেনো কেউ নেই। বিষয়টি নিয়ে বিআইডব্লিওটিএ’র ট্রাফিক কর্মকর্তা (টিআই) দোষ চাপাচ্ছেন বন্দর কর্মকর্তার উপর আর বন্দর কর্মকর্তা বলছে ট্রাফিক কর্মকর্তা অভিযোগ দেয়নি।
গতকাল ১৮ অক্টোবর রোববার দুপুরে সরেজমিনে চাঁদপুর লঞ্চঘাটে গিয়ে দেখা যায়, টার্মিনালের গ্যাংওয়ের পাশে অর্থের বিনিময়ে গড়ে উঠেছে অসংখ্য অবৈধভাবে ভ্রাম্যমান দোকান। এতে করে লঞ্চ ছাড়ার সময় হলে যাত্রীরা দ্রুত পল্টুন পর্যন্ত আসলেও দোকানীদের মালামালের জন্য লঞ্চে উঠতে গিয়ে দুর্ভোগে পড়ছে। অন্যদিকে গ্যাংওয়েরতে পাশাপাশি বেঁধে রাখা দুটি লঞ্চের শ্রমিকরা যাত্রীদের টানাহেঁচড়া করতেও দেখা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন যাত্রী জানায়, লঞ্চঘাটের পল্টুনে কোন ধরনের দোকান বসার নিয়ম নেই। বিআইডব্লিউটিএর কয়েকজনের অসাধু কর্মকর্তার সাথে অর্থের বিনিময়ে এ দোকানগুলো ভ্রাম্যমান ব্যবসায়ীরা দোকান বসিয়ে থাকেন। পল্টুনের ফলের দোকানদারা গ্যাংওয়ের উপরে এসে দোকানদারি করেন এবং সেখানে অবস্থানরত যাত্রীদের সাথে খারাপ আচরন করেন।
রায়পুর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাওয়া রাজিব জানায়, আমি আমার অসুস্থ পিতাকে ডাক্তার দেখানোর জন্য নিয়ে যাচ্ছিলাম। সাথে মা, স্ত্রী ও সন্তানরা ছিল। লঞ্চ ছাড়ার ১০ মিনিট পূর্বে রায়পুর থেকে চাঁদপুর লঞ্চঘাটে আসি। আমার পিতার হাটতে সমস্যা হয়। আর আমার পরিবারের সদস্যদের সংখ্যায় বেশী হওয়ায় গ্যাংওয়ের উপরে এসে লঞ্চে উঠার জন্য চেষ্টা করে ব্যর্থ হই। কারন এ সময়ই অন্য যাত্রীরা একটি লঞ্চ থেকে নামছিল। আমরা গ্যাংওয়ের উপর পর্যন্ত দোকানে ভীড় থাকায় অসুস্থ পিতা ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে লঞ্চ উঠতে পারি নাই। পরে ফলের দোকানদারকে গ্যাংওয়ে ছেড়ে বসার জন্য বললে তার লোকজন আমাদের সাথে খারাপ আচরণ করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিএ’র টিআই মাহতাব জানান, এসব বিষয় দেখার দায়িত্ব আমার না। আমাকে প্রশ্ন না করে বন্দর কর্মকর্তাকে প্রশ্ন করেন। তবে টার্মিনালে শৃঙ্খলা রাখতে প্রতিটি লঞ্চ নির্ধারিত বোলার্ডে বার্দিং করার জন্য বিআইডব্লিউটিএ’র পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
চাঁদপুর বন্দর কর্মকর্তা কায়সারুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, ঘাটে বিশৃঙ্খলা দেখা দিলে টিআই যদি লিখিতভাবে অভিযোগ করে, তবে আমরা ব্যবস্থা নিবো।
এদিকর বিষয়টি দেখা এবং কার্যত ব্যাবস্থা নেয়ার জন্যে জেলা প্রশাসন, বিআইডব্লিউটিএ, নৌ থানা পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন যাত্রীরা।

শেয়ার করুন

Leave a Reply