জমি অধিগ্রহণের সঙ্গে আমার বা আমার পরিবারের কোনো সম্পর্ক নেই : শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি

যদি কেউ কোনভাবে জড়িত থাকে তাদের বিরুদ্ধে যেন যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হয়

চাঁদপুর প্রতিদিন ডেস্ক :
চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চাঁবিপ্রবি) ভূমি অধিগ্রহণের বিষয়ে গণমাধ্যমে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, তা অসত্য, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ভিত্তিহীন বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর হেয়ার রোডে সরকারি বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন মন্ত্রী। চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে- সে বিষয়ে কথা বলতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমি বা আমার পরিবারের কোন জমি নেই। কাজেই আমাদের কোন অর্থনৈতিক স্বার্থ সেখানে নেই। এটিতে কোন দুর্নীতি হয়েছে কি না- সেটি দেশে সরকারের রাষ্টের বহু রকমের মেকানিজম আছে, বহু কর্তৃপক্ষ আছেন যারা দুর্নীতি হয়েছে কি না এ বিষয়টি খতিয়ে দেখতে পারেন। আমি দাব করবো, সেভাবে যেন এ বিষয়টি তদন্ত হয় এবং যদি কেউ কোনভাবে জড়িত থাকে তাদের বিরুদ্ধে যেন যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হয়।
মন্ত্রী বলেন, জমি অধিগ্রহণের সঙ্গে আমার বা আমার পরিবারের আর্থিক কোনো সম্পর্ক নেই। একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে এই বিষয়ে আমার ভাই ও আমাকে রাজনৈতিকভাবে জড়ানো হয়েছে। তবে আমি খুব স্পষ্টভাবে কিছু তথ্য জানাতে চাই, সেটি হলো, চাঁদপুরে আমার ক্রয়সূত্রে কোনো জমি নেই। উত্তরাধিকার সূত্রে আমার পৈত্রিক ভিটায় কোনো জমি হয়ত থাকতে পারে। কিন্তু আমার কোনো জমি নেই।
তিনি বলেন, রিপোর্টে নাম এসেছে ডা. টিপু, তিনি একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। তিনি আমার বড় ভাই। তিনি একটি হাসপাতাল ও বৃদ্ধাশ্রম করতে কিছু জমি কেনেন। পরে শিক্ষা মন্ত্রী দাবি করেন, প্রকাশিত রিপোর্টে আরও কিছু মানুষকে আমার পরিবারের সদস্য বলা হয়েছে। তারা আমার রক্তের পরিবারের সদস্য নয়। কিন্তু তারা আমার রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য। আমি জানি না আমার রক্তের পরিবারের সদস্যরা আমার জন্য কোনো ঝুঁকি নেবেন কি-না! কিন্তু আমার রাজনৈতিক পরিবারের সদস্যরা আমার জন্য ঝুঁকি নেবেন।
চাঁদপুরের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের এ বিষয়ে কোনো ইন্ধন আছে কি-না, এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, এখনই আমি কিছু এ বিষয়ে বলতে চাই না। দলীয় ফোরামে আমি এটি উত্থাপন করব। এখন আমি কিছু বলতে চাই না।
ভূমি অধিগ্রহণের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ভূমির মূল্য নির্ধারণ করেন জেলা প্রশাসক। এখানে ৬২ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। ১৩ জনকে একটি কমিটি করে প্রাক্কলন করা হয়। এর বাজার মূল্য ১৯৩ কোটি টাকা। এর আগে এর প্রাক্কলন ধরা হয়েছে ৫৫৩ কোটি টাকা। আমি মোটা দাগে যেটা বুঝি ১৯৩ কোটি টাকার ২০ গুণ কখনোই ৫৫৩ কোটি টাকা নয়।
চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি নির্বাচন প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, এটি ভাঙনপ্রবণ জায়গা, এখানে স্থাপনা টিকবে না এমন অভিযোগ ছিল। চাঁদপুর শহর ভাঙনের কারণে অনেক ছোট। অনেক ঘনবসতি রয়েছে। আমরা জানি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কোনো সমস্যা হলে হাইওয়ে বন্ধ হয়ে যায়। সেই বিবেচনায় আমরা জমিটি পছন্দ করি। এছাড়াও আমরা কোথায় জমি পছন্দ করছি এর সঙ্গে প্রশাসনের লোকজনও জড়িত ছিল বলে জানান তিনি।
এসময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যে স্থানে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে সেখানে স্থায়ীভাবে দু’টি বাঁধ রয়েছে। পার্শ্ববর্তী জেলায় সহজে যাতায়াত করা যায় বলে সেখান থেকে শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা করার সুযোগ পাবে। সেসব বিষয় গুরুত্ব দিয়ে জমি নির্ধারণ করা হয়।
এসময় মন্ত্রী উল্লেখ করেন এই জমির সঙ্গে টেকসই বাঁধ রয়েছে। এছাড়াও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্রও ছিল।
চাঁদপুর মেডিকেল কলেজের বিষয়েও একই সমস্যার কথা অনেকে জানিয়ে তিনি বলেন, আসলে যখনই কোনো বড় প্রকল্প শুরু হচ্ছে, তখনই এমন বাধা আসছে। দলের ভেতরের প্রতিযোগিতা কেউ কেউ প্রতিহিংসা পর্যায়ে নিয়ে গেছেন।
এ বিষয়ে কোনো তদন্ত করা হবে কি-না সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, এখানে শিক্ষা মন্ত্রণালয় তদন্ত করবে না। ভূমি মন্ত্রণালয় চাইলে তদন্ত করতে পারে। তবে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসকের বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে অপারগতা জানান।

শেয়ার করুন

Leave a Reply