বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণে কেউ বাঁধা দিলে আমরা ঘরে বসে থাকবো না : জিল্লুর রহমান জুয়েল

নিজস্ব প্রতিবেদক :
বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশহিসেবে কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাংচুর ও ভাস্কর্য নির্মাণে বিরোধীতার প্রতিবাদে চাঁদপুর থিয়েটার ফোরামের আয়োজনে মানববন্ধন ও গণসংগীত পরিবেশন করা হয়েছে। এছাড়া চাঁদপুর হানাদার মুক্ত দিবস উপলক্ষে থিয়েটার ফোরামের সকল নাট্যশিল্পীরা র‌্যালিসহকারে মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য অঙ্গীকার পাদদেশে পুষ্পস্তর্বক অর্পণ করে। মানববন্ধন ও গণসঙ্গীত পরিবেশনকালে একত্মতা পোষণ করে উপস্থিত হয়েছিলেন চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র অ্যাডঃ জিল্লুর রহমান জুয়েল। তিনি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মানববন্ধনে অংশনেন এবং প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
গতকাল ৮ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গনে চাঁদপুর থিয়েটার ফোরামের সভাপতি শহীদ পাটোয়ারীর সভাপতিত্বে ও স্বরলিপি নাট্যগোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এমআর ইসলাম বাবুর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র অ্যাডঃ জিল্লুর রহমান জুয়েল। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, যে ব্যক্তি স্বাধীনতার জন্য নিজের সারাটা জীবনের বেশির ভাগ সময় জেলে কাটিয়েছেন, তিনি হলেন আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি একখণ্ড স্বাধীন ভূ-খণ্ডের জন্য দীর্ঘসময় জেলে কাটিয়েছেন। তিনি ছিলেন আমাদের প্রতীকি। সেই প্রতীকির উপর যখন হামলা, ভাংচুর হয়, তখন কেউ ঘরে বসে থাকতে পারে না। তাই চাঁদপুর থিয়েটার ফোরাম আজকে মানববন্ধন ও গণসঙ্গীত পরিবেশন করে তাদের প্রতিবাদের ভাষা ব্যক্ত করেছেন। চাঁদপুরের মাটিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মিত হবে। যদি কোনো অপশক্তি হামলা ও ভাংচুর করতে চায়, আমরা চুপ করে ঘরে বসে থাকবো না। আমরা তাদের দাঁত ভাঙা জবাব দিবো। কুষ্টিয়ায় যারা ভাস্কর্য ভাংচুর করেছে, তাদের কোনো ধর্ম নেই। এটি আন্তর্জাতিক চক্রের চক্রান্ত। তাদের নির্দেশে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাংচুর করা হয়েছে। তারা ইসলামের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। আমরা স্বাধীন ভূ-খণ্ডে দাঁড়িয়ে আছি। আমরা জানি, এ চক্রটি কোনোভাবেই দাঁড়াতে পারবে না। আমরা প্রতিবাদ করি, করে যাবো। এ প্রজম্মকে সত্যিকার ইতিহাস শিক্ষা দিতে হবে। চাঁদপুর পৌরসভা এ সকল সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে আছে এবং থাকবে। এ মৌলবাদী চক্রকে আপনাদের মাধ্যমে প্রতিহত করতে হবে।
এ সময় বক্তব্য ও উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর থিয়েটার ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ও বর্ণচোরা নাট্যগোষ্ঠীর সভাপতি শুকদেব রায়, অনুপম নাট্যগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক গোবিন্দ মণ্ডল, বর্ণমালা থিয়েটারের সভাপতি হাবিবুর রহমান, মেঘনা থিয়েটারের সভাপতি তবিবুর রহমান রিংকু, অনন্যা নাট্যগোষ্ঠীর সহ-সভাপতি জয়রাম রায়, বর্ণচোরা নাট্যগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক শরীফ চৌধুরী, অনন্যা নাট্যগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক মৃণাল সরকার, অনুপম নাট্যগোষ্ঠীর সাংগঠনিক সম্পাদক কার্তিক সরকার, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহনবাঁশি স্মৃতি সংসদের সভাপতি অজিত দত্ত ও সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমানসহ সকল নাট্য সংগঠনের নাট্যশিল্পীবৃন্দ। মানববন্ধনে গণসঙ্গীত পরিবেশন করে বর্ণচোরা নাট্যগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক শরীফ চৌধুরী, অনন্যা নাট্যগোষ্ঠীর কণ্ঠ ও নাট্যশিল্পী সম্পা, মেধা, কাজী কাবীশা, সামিয়া, ডানা দেবনাথ প্রমুখ। তবলায় ছিলেন অনন্যা নাট্যগোষ্ঠীর সদস্য অনিক নন্দী। মানববন্ধন শেষে ৮ ডিসেম্বর চাঁদপুর হানাদার মুক্ত দিবস উপলক্ষে র‌্যালিসহকারে অঙ্গীকার-এর পাদদেশে শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদান করেন চাঁদপুর থিয়েটার ফোরাম-এর নেতৃবৃন্দসহ নাট্যশিল্পীরা।

শেয়ার করুন

Leave a Reply