ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠায় রক্ত দিয়েছে আওয়ামী লীগ : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

চাঁদপুর প্রতিদিন ডেস্ক :
যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গণতন্ত্রের লেবাসধারী কয়েকটি দেশ আছে, তারা খালি গণতন্ত্র খুঁজে বেড়ায়। অথচ এ দেশে আইন করে আমরা স্বাধীন নির্বাচন কমিশন করেছি। ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য রক্ত দিয়েছে আওয়ামী লীগ। আজ আমাদের শুনতে হয় ভোটের অধিকারের কথা।

বুধবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসলে ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে কিছু মোড়ল দেশ এখানে এমন সরকার চায়, যারা তাদের পদলেহন করবে। তারা যাদের বন্ধু হয় তাদের আর শত্রু লাগে না। ইউক্রেন বন্ধু হয়েছিল, তাদের আজ কী অবস্থা।

তিনি বলেন, তারা মানবাধিকার, গুম-খুনের কথা বলে। আমার বাবা-মায়ের খুনি রাশেদ আমেরিকায়। তাকে ফিরিয়ে দিতে বারবার অনুরোধ করেছি। খুনিকে কেন তারা লালন-পালন করে। আরেকজন নুর। কানাডায় রয়েছে। ফেরত দেয় নাই। ডালিম, রাশেদ পাকিস্তানে। মুসলেম উদ্দিনের খোঁজ পাওয়া যায় না। বাকি যাদের পাওয়া গেছে তাদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।

১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে খুনি মোশতাক এবং তাদের দোসর মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান জড়িত ছিলেন বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত না থাকলে, মোশতাক কখনও এটা করতে সাহস পেত না। করতে পারত না। খুনি জিয়া যে জড়িত ছিল এটা সম্পূর্ণভাবে প্রমাণিত।

জিয়াউর রহমান জড়িত না থাকলে মোশতাক সাহস পেত না: প্রধানমন্ত্রী

বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, ১৫ আগস্টের খুনিদের বিচার হবে না, এই অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছিল। শুধু তাই নয়, খুনিদের চাকরিও দেওয়া হয়। এই খুনিরা বিভিন্ন দূতাবাসে যখন চাকরি পায়, অনেক দেশ কিন্তু নেয়নি তাদের।

মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের প্রতিশোধে নিতে ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছিল বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা বলেন, পাপ কাউকে ছাড়ে না। যেভাবে জিয়াউর রহমান জাতির পিতাকে হত্যা করেছিল, তাকেও একইভাবে খুন হতে হয়েছিল। সেও খুন হয়। তার লাশের কিন্তু খবর নাই। সংসদ ভবনে সেখানে যে কবরটা দেওয়া আছে, সেখানে জিয়াউর রহমানের লাশ নাই। জেনারেল এরশাদ কিন্তু এই কথা বলে গেছে। বলেছিল তার লাশ তো পাওয়া যায়নি। কারণ, জিয়ার লাশ খালেদা জিয়া দেখে নাই। জিয়ার লাশ তার ছেলে তারেক রহমান দেখে নাই। কোকো দেখে নাই, তার পরিবার-পরিজন আত্মীয়-স্বজন কেউ দেখে নাই।

তিনি আরও বলেন, জেনারেল এরশাদ একটি বাক্স এনে জনগণকে ধোকা দিয়ে সংসদ ভবনের জায়গায় মাটি দিয়ে রেখেছে। সেটাও অবৈধ স্থাপনা। বিএনপি নেতাকর্মীরা সেখানে ফুল দেয়। কাকে দিচ্ছে ফুল তারা কী সেটা জানে? জানে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যখন ১৫ আগস্ট শোক দিবস পালন করি, আমাদের চেনা-পরিচিত অনেকেই ১৫ আগস্ট জন্মদিন পালন করে না। এদিনে কতগুলো মানুষকে হত্যা করেছে, বিএনপি ১৯৯১ সালে জামায়াতের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ক্ষমতা আসার পরে শুনলাম খালেদা জিয়ার জন্মদিন ১৫ আগস্ট। কত বড় বেইমান, অমানবিক হলে পরে যেদিন সারাদেশে মানুষ শোক পালন করে, সেই দিনটাকে জন্মদিনের হিসেবে পালন করে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, খালেদা জিয়ার বিয়ের সময় তার জন্ম তারিখ ১৫ আগস্ট ছিল না। খালেদা জিয়া মেট্রিক পরীক্ষা দিয়েছিল, যদিও ফেল করেছে, সেখানেও তার জন্ম তারিখ ১৫ আগস্ট নয়। একটা মানুষ কতটা অমানবিক হলে শোক দিবসের দিন জন্মদিন পালন করে।

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরের পরিচালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সহ-সভাপতি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ফজলে নূর তাপস, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফি, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি সাদেক খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ডা. দিলীপ কুমার রায়, মিজবাউর রহমান ভূঁইয়া রতন, সাজেদা বেগম, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মতি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আক্তার হোসেন, গোলাম সারোয়ার কবির, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবিএম মাজহার আনাম, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহেরুন্নেসা মেরী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কাজী মোরশেদ কামাল প্রমুখ।

শেয়ার করুন