হাইমচরে সাপের কামড়ে গৃহবধূর মৃত্যু

হাসান আল মামুন :
হাইমচরে সাপের কামড়ে রুমা বেগম (২৫)নামের এক গৃবধূর মৃত্যু হয়েছে। ২ সেপ্টম্বর শনিবার রাত ১০ টার দিকে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
মৃত রুমা বেগম হাইমচর উপজেলার নদীর পশ্চিমপাড় ১নং গাজিপুর ইউনিয়ন পরিষদের মনিপুর গ্রামের সাইফুল পাটোয়ারীর স্ত্রী। তিনি ৬ বছর বয়সি ছেলে সন্তানের জননী ছিলেন।
সাপের কামড়ে গৃহবধূর মৃত্যুর ঘটনার পর থেকে এলাকাবাসীর মধ্যে দেখা দিয়েছে সাপ আতংক। নদীর জোয়ারের পানি বাড়ার সাথে সাথে ভেসে আসছে বিভিন্ন প্রজাতির বিষধর সাপ। সাপ আতংকের মধ্যে দিন কাটছে নদীর পশ্চিমপাড়ের চরাঞ্চলের বসবাসরত এলাকাবাসীর।
স্থানীয় ও পরিবারের সূত্রে জানাজায়, ২ সেপ্টেম্বর শনিবার রাত ৮টায় এশারের নামাজে সিজদা অবস্থায় রুমা বেগমের হাতে সাপে কামড় দেয়। তার চিৎকার শোনে আশে পাশের লোকজন এগিয়ে এসে হাতে কাপড় দিয়ে বাঁধ দেন। ব্যাথা না থাকায় হাতের বাঁধন খুলে ফেলেন তিনি। পরে ব্যথা অনুভব হলে স্থানীয় লোকজন তাকে হাইমচর স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে রেপার করেন। সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় ১০ মিনিট পরেই সে মারা যায়। পরের দিন ৩ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টায় তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাপন করা হয়।
এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেন জানান, আমরা জানি সাপে কামড় দিলে সাপে কাটা রোগীদের জীবন রক্ষাকারী ইঞ্জেকশন এ্যান্টিভেনম দিতে হয়। উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে কেন তা থাকে না। তার জন্য জেলা শহর চাঁদপুরের যেতে হয়। সেখানে যেতে যেতে রোগীতো পথেই মারা যায়। এই গৃহবধূকে যদি সাথে সাথে জীবন রক্ষাকারী ইঞ্জেকশন এ্যান্টিভেনম দেয়া যেতো তাহলে তাকে বাঁচানো যেতো। আমরা নদীর পশ্চিমপাড় চরে বসবাস করি। সেখান থেকে নদী পাড় হয়ে হাইমচর স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে আসতে সময় লাগে প্রায় ১ ঘন্টার মত। এখান থেকে আবার চাঁদপুরে যেতে সময় লাগে আরও ১ ঘন্টার মত। সাপে কাটা কোন রোগীকে চাঁদপুরের নিতে নিতে তার পুরো শরীর বিষে ভরে যায়। তাই আমাদের অনুরোধ আমাদের চর অঞ্চলে জীবন রক্ষাকারী ইঞ্জেকশন এ্যান্টিভেনম ব্যবস্থা না রাখলেও অন্তত যেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমেপ্লক্সে রাখা হয়।

গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সবুজ জানান, চরঞ্চলে এমনিতেই সাপের আনাগোনা বেশি। এছাড়া মেঘনা নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। পানির সাথে বিভিন্ন সাপ ভেসে আসতে পারে । সাপের কামড়ে গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। সাপে কাটা রোগীদের জন্য জীবন রক্ষাকারী ইঞ্জেকশন এ্যান্টিভেনম যেন উপজেলা স্বাস্থ্যকমেপ্লক্সে রাখা হয়। এই এ্যান্টিভেনম সঠিক সময়ে শরীরে প্রয়োগ করতে পারলে সাপে কাটা রোগীদের জীবন রক্ষা পেতো। এই সময়ে অতি জরুরী ভাবে উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে সাপে কাটা রোগীদের জন্য জীবন রক্ষাকারী ইঞ্জেকশন এ্যান্টিভেনম ব্যবস্থা রাখা প্রয়োজন ।

শেয়ার করুন