হাজীগঞ্জে মাইক্রো চালকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার

শাখাওয়াত হোসেন শামীম :
হাজীগঞ্জ পৌরসভার মাইক্রো চালক মজনু হোসেন (৩০)কে গলা কেটে খুন করে দুর্বৃত্তরা। গতকাল মঙ্গলবার সকালে মজনুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মজনু হাজীগঞ্জ পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড টোরাগড় মিজি বাড়ীর বাসিন্দা। ওই বাড়ীর আনোয়ার হোসেন মিজির বাসার দ্বিতীয় তলায় ভাড়া থাকতেন মজনু ও তার পরিবার।
মঙ্গলবার সকালে মজনুর ভাই মন্টু প্রথমে রক্তাক্ত মৃতদেহ দেখতে পেয়ে চিৎকার দেয়। পরে চাঁদপুর পিবিআই ও হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়।
বাড়ীর মালিকের মেয়ে উম্মে সাবরিনা বলেন, সকাল সাড়ে ৫ টার দিকে মন্টু চিৎকার দিয়ে তার ভাই খুন হয়েছে বলে জানান। পরে তার বোন হিরা আক্তার বাড়ীর গেইটের তালা খুলে দেয়। প্রতিদিন মজনুর পরিবার বাড়ীর গেইটের তালা বন্ধ করতো।
সাবরিনা আরো জানান, গত সোমবার ৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় মজনুর ভাইয়ের স্ত্রী মাহমুদা তাদেরকে চা খাওয়ায়। ওই চা খেয়ে সে ও তার মা মাজেদা বেগম, ছেলে নাফিসহ ৫জন অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন চা তিতা লেগেছিল।
এদিকে মজনুর ভাই প্রবাসী মফিজুল ইসলামের স্ত্রী মাহমুদা বেগম বলেন, রাতে মজনু ভাত খায়নি। শুধু একটু দুধ খেয়েছে। তিতা বলে বেশি খায় নি। পরে মা রুপবান বেগম ও সে দুধ খেয়েছে। রাত ১১ টার দিকে মন্টু ও তার স্ত্রী শান্তা বেগম ওই বাসায় ছিল। তারা মিলে চা খেয়েছি। সকালে মন্টু ভাইয়ের চিৎকার শুনে তার ঘুম ভাঙে। ঘুম ভাঙলে দেখে তার পা বাঁধা ছিল। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা এসে পায়ের বাঁধন খুলে দেয়।
মজনুরা আট ভাই। সে পরিবারে সপ্তম সন্তান। জানতে চাইলে ভাই মন্টু বলেন, সকালে ঘুম থেকে উঠে মজনুর দরজা খোলা দেখে। মজনুর কাছ থেকে সে ৭ লাখ টাকা পাওনা। এ বিষয় নিয়ে সপ্তাহখানেক আগে ভাইয়েরা মিলে বৈঠক হয়। সেখানে মাসে ১০ হাজার টাকা দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
এদিকে মন্টু ও তার স্ত্রী শান্তা বেগম আরো বলেন, মজনু ঠিকাদার কাউসারের কাছ থেকে ৭০ লাখ টাকা পাবে। কাউসারের সাথে এক বছর ধরে দ্বন্দ্ব চলছে। প্রায় ৬/৭ বছর কাউসারের সাথে বন্ধুত্ব ছিল মজনুর। পরিবারের সবার আয়ের টাকা মজনুর কাছেই ছিল।
এ বিষয়ে কাউসারের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
নিহত মজনুর মা রুপবান বেগম বলেন, মজনুরে কে খুন করলো, বিচার চাই। রাতে সে ভাত খায়নি। শুধু একটু দুধ খেয়েছে।
হাজীগঞ্জ থানা তদন্ত কর্মকর্তা আবদুর রশিদ বলেন, সোমবার রাতে পরিবারের সদস্যরা মিলে যে দুধ ও চা খেয়েছে, তা জব্দ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফজাল হোসেন জানান, খুনের রহস্য উদঘাটনে তদন্ত কাজ চলছে। প্রাথমিকভাবে বাসায় ডাকাতি হওয়ার আলামত পাওয়া যায়নি। তবে খুনের সাথে পরিবারের কেউ জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পরিবারের পক্ষ থেকে হাজীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা রুজ করা হবে বলেও তিনি জানান।
ওইসময় উপস্থিত ছিলেন হাজীগঞ্জ থানা অফিসার ইনর্চাজ মো. আলমগীর হোসেন রনি ও পিবিআই কর্মকর্তা আবু বকর ছিদ্দিক।

শেয়ার করুন

Leave a Reply