চাঁদপুরে ব্যবসায়ী হত্যার বিচারের দাবিতে লাশ নিয়ে সড়ক অবরোধ
অভিজিত রায় :
চাঁদপুরে অপহরণ হওয়া ব্যবসায়ী হান্নান মৃধা হত্যার বিচারের দাবিতে লাশ নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করেছে পরিবারের লোকজন ও এলাকাবাসী। মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক সড়কের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবরোধ করেন বিক্ষুদ্ধ জনতা। হান্নান মৃধা চাঁদপুর পৌর ১৫ নং ওয়ার্ডের বিষ্ণুদী এলাকার আবুল হোসেন মৃধার ছেলে। সে ওই এলাকার ভ্যারাইটিজ দোকানী ব্যবসায়ী।
এদিকে সড়কে অবরোধ করায় শহরের দুই পাশের দীর্ঘ প্রায় ৪ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে এ্যাম্বুলেন্স ও স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ দুর্ভোগে পড়েন। অনেকেই পায়ে হেটে গন্তব্যে পৌঁছাতে দেখা গেছে।
নিহত হান্নানের বোনের জামাতা রুবেল ও চাচাতো ভাই আল-আমিনসহ পরিবারের সদস্যরা জানায়, আমরা হান্নানের স্ত্রী আয়শা, শ্যালক হিরা ও শাওনকে দ্রæত আইনের আওতায় আনতে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি। আমরা চাঁদপুর সদর মডেল থানার এসআই রাশেদুজ্জামানকে নিখোঁজ ডায়েরি করার পর বেনাপোল যেতে কয়েকবার অনুরোধ করি। এছাড়া হান্নানের লাশ আনার সময়ও তাকে যাওয়ার জন্য বলা হয়। তার গাফিলতির কারণে হান্নানের মৃত্যু হয়। আমরা এসআই রাশেদের প্রত্যাহার ও শাস্তি কামনা করছি। এছাড়া তারা হত্যাকারীদের দ্রæত গ্রেফতারের মাধ্যমে ফাঁসির দাবি জানায়।
হান্নানের ভাতিজা সাগর মৃধা বলেন, আমার চাচাকে পরিকল্পিত হত্যা করা হয়েছে। আমরা পুলিশকে জানিয়েও বিচার পাইনি। এই হত্যাকান্ডের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের বিক্ষোভ চলতে থাকবে। আমরা প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) সুদীপ্ত রায় বলেন, আপনারা যে দাবি নিয়ে সড়কে নেমেছেন, তার বিচারের জন্য আমাদের সময় দিতে হবে। পুলিশ জনগণের জন্যই কাজ করে। আমরা তদন্তপূর্বক দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে। তার জন্য সকলের সহযোগিতা করতে হবে।
উল্লেখ, গত ১ মার্চ হান্নান তার শ্বশুরবাড়ি চাঁদপুর সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নে যান। সেখান থেকে চাঁদপুর শহরের বিষ্ণুদী রোডে তার নিজ বাড়িতে ফেরার পথে নিখোঁজ হয়। পরদিন ২ মার্চ চাঁদপুর মডেল থানায় নিখোঁজ জিডি করে পরিবার। এরপর ৬ মার্চ একটি নাম্বার থেকে এক লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। তারা বেনাপোলে আসতে বলে। তাদের দাবি মতে প্রথমে ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। টাকা পাঠানোর পর তাদের নাম্বার বন্ধ করে দেয়। সর্বশেষ ১৩ মার্চ রোববার বেনাপোল সীমান্ত এলাকায় হান্নানের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর থেকে হান্নানের পরিবার ও এলাকাবাসী বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ শুরু করে।