নিভে গেল শেষ আলোকবর্তিকা
——- মাকছুদুর রহমান পাটওয়ারী
চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার গত শতাব্দীর সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিল চান্দ্রা ইমাম আলী উচ্চ বিদ্যালয়। একজন প্রাক্তন ছাত্রের এমন মূল্যায়ন স্হুল হতেই পারে। কিন্তু দলমত নির্বিশেষে এই মূল্যায়নটা ফরিদগঞ্জ উপজেলার এবং একবাক্যে স্বীকৃত। ৭০-এর দশকে ঐ বিদ্যালয়ের অন্যতম জনপ্রিয় শিক্ষক ছিলেন জনাব মো: হাবিবুর রহমান স্যার। সমসাময়িক কালের চান্দ্রা স্কুলের প্রায় সকল শিক্ষকই ব্যক্তিত্বে, আদর্শে, চিন্তায়, চেতনায়, মেধায়, যোগ্যতায়, পান্ডিত্যে ছিলেন অনন্য, অতুলনীয়, অসাধারণ। এক একজনের পাণ্ডিত্য আবার এক একদিকে-কেবল সুদূর আকাশের নীলিমার সঙ্গে তুলনীয়। তবে, হাবিব স্যার সকল গন্ডির বাহিরে, এক কথায় চৌকস।
সোনালি দিনগুলোর সর্বশেষ আলোকবর্তিকা, হাসিমাখা, চির চঞ্চল, অক্লান্ত পরিশ্রমী, চৌকস, মহান শিক্ষাগুরু হাবিব স্যার গত ২৫শে নভেম্বর রাতে নিভে গেলেন চিরতরে।
সেই মহান শিক্ষক এবং সমসাময়িক কালের সুখময় স্মৃতিতে একটু অবগাহন করতে চাই। তাহলে চলুন সময়ের চাকাটি একটু পিছনে ঘুরিয়ে নেই এবং স্মৃতির ভান্ডার উন্মোচন করি।
চান্দ্রা স্কুলের অবস্থান-একবারেই অজপাড়াগাঁয়ে। দুর্গম অঞ্চল। যাতায়াতের জন্য একমাত্র রাস্তাটিও ছিল সংকীর্ণ। বর্ষাকালে কাদামাটিতে এক হাঁটু ডুবে যেতো। বর্ষা-শুষ্ক নির্বিশেষে পার্শ্ববর্তী সেকদিসহ ঐ এলাকার শিক্ষার্থীদের দুঃখটা ছিল চীনের “হোয়াংহো”-র মতো। ছোট ছোট কোসা এবং তালের নৌকা (স্হানীয়ভাবে কোঁদা) আর বৃষ্টি হতে মাথা গুজা ও বই-খাতা রক্ষাকল্পে বড় কচু পাতার ছাতাই ছিল সম্বল। এতো বাহিরের অবয়ব মাত্র। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি ছিল পড়ালেখা, ক্রীড়া, কৃষ্টি-সংস্কৃতির অথৈই ভান্ডার। সব প্রতিকূলতা ভ্রকুন্ঠিত করে মৌমাছি মধু আহরণে ছড়িয়ে পড়ে। সেই সময়ে সুদূর লক্ষ্মীপুর, হাজীগঞ্জ, চাঁদপুর সদর ইত্যাদি স্থান যেন “সাতসমুদ্র তেরো নদী” দূরে। কিন্তু মৃগনাভির সৌরভকে নিশ্ছিদ্র সিন্ধুকে বন্দী করে কি রাখা যায়? জ্ঞান পিপাসু শিক্ষার্থীগণ জ্ঞানসুধা আহরণের জন্যে চান্দ্রা স্কুলের পাদ-প্রদ্বীপে এসে স্কুলটিকে আরও আলোকোজ্জ্বল করতেন। এজন্য মেধাবী, খ্যাতিমান শিক্ষকগণেরও আরাধ্য ছিল স্বপ্নের চান্দ্রা স্কুলের সম্মানিত শিক্ষক হওয়ার। আর তাঁরা সবকিছু উজাড় করে দিতেন স্কুলটিকে। সেভাবেই সম্ভবত ১৯৬৭ বা ১৯৬৮ সনে চান্দ্রা স্কুলে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিতে আগমন ঘটে আমাদের পরম শ্রদ্ধেয় হাবিব স্যারের।
প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ করা যায় যে, পাকিস্তান আমলে সবদিকেই পূর্ব পাকিস্তানকে বঞ্চিত করেছে পাকিস্তানিরা। সরকারি চাকরির সুযোগ ছিল একবারেই সীমিত। উচ্চ পদগুলো পশ্চিম পাকিস্তানীদের জন্য আগেই নির্দিষ্ট করে রাখা হতো। সেখানে পূর্বের জন্য যোগ্যতার বিচার শূন্যের কোঠায়। এদিকে শিক্ষার হারও খুবই কম। তবে, মান ছিল গগনচুম্বী। লোকসংখ্যাও কম। মানুষের চাহিদাও অনেক কম। এলাকার বাহিরে, দূর-দূরান্তে চাকরির সংস্কৃতি ছিল বিরল। শিক্ষকতা ছিল মহান পেশা, সমাজের সুউচ্চ অবস্থানে। ফলে বাড়ির নিকটে অবস্থিত বিদ্যাপীঠে শিক্ষাদান, সকাল-সন্ধ্যা বাড়ির প্রয়োজনীয় গৃহস্থালি সম্পাদন, পিতামাতার যত্নদান, “হোমসিকনেস” ইত্যাদি কারণে উঁচু মানের মূল্যবোধ, সুশিক্ষিত, মেধাবী, জ্ঞানী, পন্ডিত, মহান ব্যক্তিদেরকে পূর্ব পাকিস্তান পেয়েছে সুশিক্ষক হিসেবে। তবে, ১৯৭৫-এর পরে সামরিকতন্ত্র, স্বৈরতন্ত্র দেশের সব মূল্যবোধকে ভূলুণ্ঠিত করেছে। এর কুপ্রভাব পড়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও। মামুতন্ত্র, খালুতন্ত্র, আত্মীয়তন্ত্র, দলীয়তন্ত্র, ঘুষ-দুর্নীতিতন্ত্র ইত্যাদি অবৈধ পথে কোন কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অযোগ্য লোককে নিয়োগ দেয়া হয়েছে মর্মে জনশ্রুতি রয়েছে । জাতির অনেক ক্ষতি হয়েছে। তবে, সৌভাগ্যের বিষয় এই যে, বর্তমান সরকার বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যোগ্য শিক্ষক নিয়োগের জন্য পদ্ধতিগত ব্যবস্হা প্রবর্তন করেন। ফলে সেই পুরনো গৌরব, রেনেসাঁ ঘটবে মর্মে আশা করা যায়।
হাবিব স্যার মূলত পড়াতেন ইংরেজি। অন্য বিষয়েও ছিলেন সমান পারদর্শী। গ্রামের শিক্ষার্থীদের কাছে ইংরেজি ছিল সাক্ষাৎ যমদূতের মতোই। অন্য কোন বিষয়ে ভালো নম্বর পেয়েছে। কিন্তু ইংরেজি দেখলে বা শুনলেই মাথায় হাত, বর্জপাত, ফেল নির্ঘাত! অদেখা জিনের আছর! আর সেই জিন-ভূত তাড়ানোর সাক্ষাৎ “ওঝা” ছিলেন হাবিব স্যার। হিমালয়-ডিঙ্গানো কঠিনতম বিষয়কে হাসি-ঠাট্টা, রসবোধ, বিচিত্র রকমের গল্প বলে শ্রেণির পরিবেশকে করে তুলতেন প্রাণবন্ত, স্বতঃস্ফূর্ত, আমুদে।
বয়সের একটা ধর্ম আছে। স্কুল বয়সের “হিরোইজম” হলো- স্কুল পালানো, বাজারে আড্ডা দেয়া, সেলুনে বসে বেহুদা চুলের ‘আলফ্রেড’ করা, লুকোচুরি করে সিনেমা দেখা, মেয়ে দেখলে উসাইন বোল্টের দৌড়ের মতো সাইকেল চালানো, লুকিয়ে লুকিয়ে আরও কতো কী! চান্দ্রা স্কুল এবং চান্দ্রা সিনিয়র মাদ্রাসা যেন জমজ সন্তান। গায়ে গায়ে ঘেঁষা। নিরানন্দ ক্লাস থাকলে স্কুলের দোতলা বেয়ে চান্দ্রা মাদ্রাসার ঝুঁকিপূর্ণ ছাঁদ বেয়ে স্কুল পালানো ছিল হিরোইজম ও গর্বের কাজ। কিন্তু বিকালে হাবিব স্যারের ক্লাস থাকলে ঐ সব মহাফাঁকিবাজরাও নিশ্চিত ক্লাসে উপস্হিত। “এই আইজ হাবিব স্যারের ক্লাস আছে-রে। আইজ আর চোরামি কইরতাম না। স্যার যেভাবে গল্প কইরা পড়ায়, মনে হয় কেলাসে পড়াডা মুখাস্ত অইয়া যায়। ইংরাজিতে দুর্বল, ভয়ে হাডু কাঁফে। দূর আইজ হাকিজুকির কতা কইছ না।” লাভের ভাগ পাগলেও বুঝে। তাই ক্লাস ভর্তি ছাত্র। নিঃশ্বাস নেয়ার ফুরসৎ নাই।
ছোট কালে ‘ঠাকুর মার ঝুলি’ বা ‘আরব্যোপন্যাস’ পড়ে নাই এমন ছাত্র খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। কিন্তু কিসের ঠাকুর মার ঝুলি বা গা হিমশীতল করা আরব্যোপন্যাস! কতো গল্প যে তাঁর পেটে জমা থাকতো আল্লাহ ছাড়া কেহ জানে না। দুই লাইন পড়াতেন। ফাঁকে দু’টো রেডিমেড গল্প হাযির। হাসতে হাসতে পেটে খিল ধরে যেতো। অত্যন্ত গুরুগম্ভীর এবং দার্শনিক কিছিমের দুই চারজন শিক্ষার্থীও ছিল। তারা আবার সেরা। তাদের কি হাসা শোভা পায়? তাহলে-তো ভালো ছাত্রের তকমাটি থাকে না। কিন্তু কৌতুকপ্রিয় স্যারের সাবলীল ভঙ্গিতে রসালো গল্পে দমবন্ধ হয়ে যেতো সবার এবং হাসির ফোয়ারা ফুটতো ক্লাসে।
গত শতাব্দীর ৮০ বা ৯০-এর দশক পর্যন্ত দেশের আর্থ-সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় অবস্থা ছিল এখানকার অবস্থা থেকে একবারেই আলাদা। দিন আনতে পান্তা ফুরানোর অবস্থা। আজকের মতো শিক্ষকদের প্রাইভেট কোচিং-বানিজ্য, শ্রেণিকক্ষে পাঠদানে অমনোযোগিতা, দ্রুত অর্থ-বিত্তের মালিক হওয়া ইত্যাদি শিক্ষাবিমুখ মানসিকতা হতে যোজন যোজন দূরে ছিলেন সেই সময়ের শিক্ষকগণ। লজিং প্রথা ছিল অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং সর্বতো গ্রহণযোগ্য ও মহান পেশা। দূর দূরান্তের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীগণের অনেকেই লজিং থাকতেন। এঁদের মাধ্যমে অকাতরে বিদ্যা-ধন বিতরণ হতো। যেই আসতো, বিণা বাক্য ব্যয়ে এবং বিণা মূল্যে বিদ্যা বিতরণ করে নিজেরা ধন্য হতেন। এই সংস্কৃতি উঠে যাওয়ায় অন্তত শিক্ষা ক্ষেত্রে অনেক ক্ষতি হয়েছে মর্মে কেউ কেউ মনে করেন। লজিং সংস্কৃতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হাবিব স্যার ছিলেন এমনই একজন। আজকের দিনে এটা কি ভাবা যায়? শিক্ষকের মর্যাদা হ্রাসের এটা কি অন্যতম কারণ নয় কি? বেশি নম্বর প্রাপ্তির লক্ষ্যে না খেয়ে, না পরে কোচিং বানিজ্যের নামে কিছু শিক্ষকের হাতে কতো অর্থ দিচ্ছেন অভিভাবকবৃন্দ। দুর্ভাগ্যবশত এটা অনেকটা রেওয়াজ হয়ে গেছে। শুভবুদ্ধির উদয় হোক-সমাজ এটাই চায়।
স্কুলের কোল ঘেঁষে ডাকাতিয়া নদী। পাশেই বিশাল চর। সেকালে স্কুলে বিদ্যুতের সুশীতল বাতায়নে দেহ-মন জুড়িয়ে যাবে-পাগলও এমন কল্পনা করতো না। তাই নদী তীরে দাঁড়িয়ে মৃদুমন্দ সমীরণে প্রান জুড়ানোর সুযোগ ঘটতো কেবল বিরতির সময়ে। দূরদর্শী হাবিব স্যার নদী তটে রোপণ করলেন কয়েকটি রেন্ট্রি কড়ই গাছ। চারিদিক উন্মুক্ত। মাত্র কয়েক বছরেই হয়ে গেল বিশাল মহীরুহ। হাজার পাখির কলতান, শিক্ষার্থী-খেলোয়াড় -দর্শনার্থীদের ছায়া দান, পেয়েছি একের ভিতর বহু অবদান। পরবর্তীতে বিশাল বৃক্ষরাজি কেটে স্কুলের প্রয়োজনে তৈরি করা হয়েছে চেয়ার-টেবিল ইত্যাদি। তিনি অনুপস্থিত। কিন্তু পরবর্তী সময়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত করে গেছেন নিজেকে।
তিনি সাধারণত সাদা, হালকা হলুদ বা নীল রংয়ের খাটো পাঞ্জাবি পরতেন। আর দাপিয়ে বেড়াতেন পুরো স্কুলে। হাতে ঠিকই দেড় হাতি মোটা বেত থাকতো। কিন্তু এর ব্যবহার কখনো হয়েছে কিনা জানা নেই। আর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তাঁর পদচারণা ছিল সবার উপরে। সকল ক্ষেত্রেই ছিল সমান পদচারণা। তাঁকে দেখলেই আপনা-আপনি হাসি চলে আসতো। সদালাপী, হাস্যোজ্বল, একবারেই খোলামেলা, মুখে হাসির ফোয়ারা জমানো এই মহান শিক্ষাগুরু অন্য দশজনের মতো Homesickness হতে বিমুক্ত থাকবেন, তা হয় না। সেই যুগে বেসরকারি স্কুলের একজন শিক্ষকের বেতন-ভাতা-সম্মানি-মাইনে ছিল যৎসামান্য। কিন্তু চলনে-বলনে, কথায়-কাজে এর বিন্দুমাত্রও আছড় পড়তো না। বর্তমান সময়ের সঙ্গে কোনভাবেই তুলনীয় নহে। মূলত তাঁরা শিক্ষকতাকে মহান পেশা হিসাবে নিয়েছেন-শিক্ষার্থীদের মাঝে নিজেদের উজাড় করে দেয়া, ত্যাগ, সম্মান, মানুষ গড়ার জন্যে পার্থিব বিষয় ছিল শূন্য।
জগতধর্ম বলে একটি বিষয় আছে। একে অস্বীকার করার কোন উপায় নাই। অধিকন্তু, মতলব হাই স্কুলও তখন ছিল দেশ-সেরা। কিংবদন্তী শিক্ষক মরহুম ওয়ালী উল্লাহ পাটোয়ারী স্যারের তখন দেশজোড়া খ্যাতি, সর্বজন শ্রদ্ধেয়, মহান শিক্ষক। ফলে নিজ এলাকা, খ্যাতিমান একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং শীর্ষস্হানীয়, মহান শিক্ষাবিদ ও প্রধান শিক্ষক ওয়ালী উল্লাহ পাটোয়ারী স্যারের উদাত্ত আহ্বানে স্বাভাবিকভাবেই তিনি সাড়া দিলেন। চলে গেলেন আরেক প্রত্যাশিত বিদ্যাপীঠ মতলব হাইস্কুলে ১৯৭৬ সনে।
হাইস্কুল জীবনে হাসির এ্যাটম বোম ফোটানো এমন সম্মানিত শিক্ষক আর পাইনি। তবে, আপসোস নাই এ কারনে যে, তিনি মতলব হাইস্কুলকেও তাঁর জ্ঞানভান্ডার উজাড় করে আলোকিত করেছেন। সেখানেও তিনি সমানভাবে সমাদৃত এবং জনপ্রিয় শিক্ষক ছিলেন আজীবন।
সময় পেলেই তিনি তাঁর পুরনো স্কুলে আসতেন। আমাদের চান্দ্রা স্কুলের আরেক সাদামনের শিক্ষাগুরু মরহুম নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী স্যারের সাহচর্য নিতে কখনও ভুল করতেন না। একই বাড়ির হওয়ায় হাবিব স্যারের সান্নিধ্য পেয়ে ধন্য হতাম।
২০০৫ সনে তিনি পূর্ণ অবসরে চলে যান। তবে, তাঁর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল টেলিফোন, মোবাইলের মাধ্যমে। আমাদের সময়ের মাত্র দুইজন শিক্ষাগুরু জীবিত ছিলেন। বাড়িতে গেলে পার্শ্ববর্তী বাড়ির পরম শ্রদ্ধেয় হরিপদ দত্ত স্যারের সঙ্গে দেখা হবে না, দোয়া নিব না-এটাতো হতে পারে না। এ বছরে শেষ বাতি হরিপদ দত্ত স্যারও চলে গেছেন চিরতরে। তাঁর বিদেহী আত্মার পরিপূর্ণ শান্তি কামনা করছি।
হৃদয়ের টান অনেক বড়। সেই শিক্ষাগুরুদের কি আদৌ ভোলা যায়? Alexander the Great তাঁর মহান শিক্ষাগুরু দার্শনিক Aristotle-কে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, “I am indebted to my father for living, but to my teacher for living well”. মুসলিম সমাজে পবিত্র কোরআন শরিফের একটি বিখ্যাত আয়াত -“রাব্বির হাম হুমা কামা রাব্বি ইয়া-নি সাগিরা”। বহুল পঠিত এবং আলোচিত আয়াতটি যেন বাংলা ভাষার বিখ্যাত পংক্তি হয়ে গেছে। মহান শিক্ষকগণের অবারিত অবদানের জন্যই আমরা প্রত্যেকেই বর্তমান অবস্থানে। পিতামাতার মতোই তাঁদের জন্য দোয়া করা আমাদের প্রাত্যাহিক জীবনের আবশ্যিক দায়িত্ব এবং কর্তব্য হওয়া বাঞ্ছনীয়। এর ধারাবাহিকতায় বেশ কয়েকজন সতীর্থকে নিয়ে আমাদের সকল প্রয়াত শিক্ষকদের শিয়রে দাঁড়িয়েছিলাম। আর দয়াময় মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে তাঁদেরকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব দানের জন্য কায়মনোবাক্যে দোয়া করেছি এবং এখনও করছি।
আমাদের সময়ের শেষ বাতিঘর ও আলোকবর্তিকা হাবিবুর রহমান স্যারকে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন যেন দয়াপরবশ হয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসের সুশীতল ছায়ায় চিরশান্তিতে রাখেন-এই দোয়া করার জন্য সকলের কাছে সবিনয়ে অনুরোধ করছি।
লেখক পরিচিতি : সদস্য, পিএসসি, সাবেক সিনিয়র সচিব এবং প্রাক্তন শিক্ষার্থী, চান্দ্রা ইমাম আলী উচ্চ বিদ্যালয়, ফরিদগঞ্জ, চাঁদপুর।