অন্তঃসত্ত্বা ভাবীকে হত্যার দায়ে দেবরের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক :
চাঁদপুরে ভাবী শারমীন আক্তারকে হত্যার দায়ে দেবর ইয়াছিন মিজিকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে চাঁদপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালত। রবিবার বিকেলে আসামীর উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন বিচারক এস.এম. জিয়াউর রহমান। রায়ে আসামীকে ১০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়।
২০১৭ সালে ৫ সেপ্টেম্বর রাতে এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। হত্যার শিকার শারমীন ৩ মাসের অন্তসত্তা ছিলেন। এ ঘটনায় ৬ সেপ্টম্বর চাঁদপুর মডেল থানায় মৃত শারমীনের বাবা তাজুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
দন্ডপ্রাপ্ত আসামী মো. ইয়াছিন মিজি (২২) চাঁদপুর সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর এলাকার আবদুর রহিম মাওলানার ছেলে।
হত্যার শিকার শারমীন আক্তার আসামীর বড় ভাই ইউসুফ মিজির স্ত্রী ও ফরিদগঞ্জ উপজেলার উত্তর কেরোয়া এলাকার তাজুল ইসলাম পাটওয়ারীর মেয়ে।
মামলার বিবরনে জানাযায়, ২০১৪ সালে রামচন্দ্রপুর এলাকার আবদুল রহিমের সৌদি আরব প্রবাসী ছেলে ইউসুফ মিজির সাথে ফরিদগঞ্জ উপজেলার উত্তর কেরোয়া এলাকার তাজুল ইসলাম পাটওয়ারীর মেয়ে শারমীনের বিবাহ হয়। বিয়ের পর থেকেই ইউসুফের ছোট ভাই ইয়াছিন বিদেশ যাওয়ার জন্য তার ভাইকে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। দীর্ঘ দিন অতিবাহিত হলেও তাকে বিদেশে না পাঠানোর কারণে ভাবীকে সন্দেহ করেন ইয়াছিন। তাকে বিদেশ নেওয়া সম্ভব না হওয়ায় তাদের সংসারে কলহ লাগে। এ নিয়ে তাদের পারিবারিকভাবে একাধিকবার শালিস দরবারও করা হয়। এক পর্যায়ে ইয়াছিন বাহারাইনে পাড়ি জমায়। এর পরে ২০১৭ সালে ৩ জুলাই সে দেশে ফিরে আসে এবং তার ভাই ও ভাবীকে বিভিন্নভাবে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখাতে থাকে।
ঘটনার দিন ২০১৭ সালে ৫ সেপ্টম্বর রাতে আসামী ইয়াছিন তার বড় ভাই ইউসুফের বাড়ি যায় এবং তার ভাবী শারমীনকে একা পেয়ে ছুরি দিয়ে তলপেটে উপর্যুপরি আঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে শারমীনকে দ্রুত তাকে উদ্ধার করে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) মোক্তার আহমেদ অভি বলেন, তিন বছরের অধিক সময় মামলাটি চলমান অবস্থায় ১৮জন সাক্ষীর মধ্যে আসামীর পিতা, মাতা ও বোনসহ ১৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহন করেন। সাক্ষ্য প্রমান ও মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা করে আসামী ইয়াছিনের উপস্তিতিতে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
আসামী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাড. মাসুম ভুঁইয়া ও সফিকুল ইসলাম ভুঁইয়া।
মামলার বাদী তাজুল ইসলাম পাটওয়ারী বলেন, আমি আমার মেয়ে হত্যার সঠিক বিচার পাইনি। আমি ন্যয় বিচারের জন্য উচ্চ আদালতে যাব।

শেয়ার করুন

Leave a Reply