চাঁদপুরে লকডাউনে গাড়ি রাস্তায় নামলে আটক, ছাড় তিন দিন পর

আশিক বিন রহিম :
লকডাউন অমান্য করে যাত্রীবহন করায় চাঁদপুর ট্রাফিক পুলিশ গত দুইদিনে প্রায় দুই শতাধিক অটোবাইক আটক করেছে। আটক অটোবাইকগুলো ছেড়ে দেয়ার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে চালকরা। বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মাটিতে বসে কিছু সময় অবস্থান কর্মসূচি পালন করে চালকরা।
ট্রাফিক পুলিশ জানায়, চালকদের দাবির পর জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারের নির্দেশনা অনুযায়ী যেসব গাড়ি আটক করা হচ্ছে তা পর্যায়ক্রমে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে তাদেরকে বলে দেয়া হচ্ছে- যেন তারা লকডাউনের মধ্যে আর রাস্তায় না নামে। লকডাউন চলাকালে কোন গাড়ি ধরা পড়লে তা আটক করা হবে। সেগুলো তিন দিন পর ছেড়ে দেয়া হবে।
চালকরা সাংবাদিকদেরকে জানান, বিনা শর্তে তাদের অটোবাইকগুলো ছেড়ে দেয়া হউক। কারণ তাদের রােজগার না থাকায় পরিবার পরিজন নিয়ে খুবই কষ্টে আছে। আবার অনেকের কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে হয়।
এদিকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করার সময় চালকদেরকে ডেকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ট্রাফিক পুলিশের সাথে আলাপ করে সমাধানের কথা বললে তারা চলে আসে।
চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান বলেন, সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নের কারণে ট্রাফিক পুলিশ অটোবাইকগুলো আটক করে। যারা অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে এসেছে জেলা
প্রশাসক মহােদয়ের সাথে আলাপ করে অটোবাইকগুলো পর্যায়ক্রমে ছেড়ে দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। ট্রাফিক বিভাগ গাড়িগুলো ছাড়ার ব্যবস্থা করবেন।
এদিকে বিকেলেই জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের নির্দেশে বেশকিছু অটোরিকশা ও সিএনজি বিনা জরিমানায় ছেড়ে দেয়া হয়। এর মধ্যে ২৩টি অটোরিকশা, ১৪টি সিএনজি, ১টি মোটরসাইকেল। বর্তমানে ২৩৭টি গাড়ি জব্দ রয়েছে। এগুলোও পর্যায়ক্রমে ছেড়ে দেয়া হবে।
চাঁদপুর জেলা ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক (টিআই) মো. জহিরুল ইসলাম ও সদর ট্রাফিকে কর্মরত টিআই ফখরুদ্দিন আজম মোল্লা জানান, মূলত লকডাউন না মেনে যাত্রী বহন করার কারণে শহরের বিভিন্নস্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে এসব গাড়ি জব্দ করা হয়। করোনাকালে সাধারণ মানুষ এবং চালকদের সচেতন এবং সর্তক করতেই আমাদের এই কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। তবে এদেরকে কোন প্রকার জরিমানা করা হয়নি।
চাঁদপুর জেলা ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক (টিআই) মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, আমরা আজকে ৩৮টি গাড়ি ছেড়ে দিয়েছি। যেগুলো গত ১৮ এপ্রিল আটক করা হয়েছিল। বাকী ২৩৭টি গাড়ি এখনো আটক আছে।
তিনি বলেন, লকডাউন মানার জন্য আমরা প্রতিদিনই অভিযান চালাবো। যেসব গাড়ি আটক হবে সেগুলো তিন দিন পর ছেড়ে দিব। তারা লকডাউনের মধ্যে আর রাস্তায় নামবে না এই শর্তে গাড়িগুলো ছাড়া হচ্ছে।
অপরদিকে লকডাউনের শুরু থেকে কর্মহীন হয়ে পড়া অটোবাইক ও অটোরিকশা চালকদের মধ্যে প্রায় দুই শতাধিক চালককে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫ কেজি করে চাল প্রদান করা হয়েছে। বিভিন্ন পেশার লোকদের মাঝে জেলা প্রশাসনের ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply