ফরিদগঞ্জ আসনে প্রার্থী হচ্ছেন বিএনএম মহাসচিব শাহজাহান

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন : চাঁদপুর-৪

নিজস্ব প্রতিবেদক :

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চাঁদপুর-৪ আসনে নতুন রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের (বিএনএম) প্রার্থী হতে যাচ্ছেন দলটির মহাসচিব গ্লোবাল পিস অ্যাম্বাসেডর ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. মো. শাহজাহান। শুধু তাই নয়, বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এই আসন থেকে জয়ী হওয়ার আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। এই আসনে বিএনএম থেকে একমাত্র তিনিই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।

জানা গেছে, বিএনএমের মহাসচিব ড. মো. শাহজাহান বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফেডারেশন (বিএইচআরএফ) এবং ডা. মো. শাহজাহান ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান, গ্লোবাল ইন্টার ফেইথ ডায়ালগ ফর পিস অ্যান্ড হারমোনির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ব্যুরো অব হিউম্যান রাইটস বাংলাদেশ (বিএইচআরবি) এবং সাউথ এশিয়ান ফারটার্নিটির (এসএফ-বিডি)।

নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে মো. শাহজাহান বলেন, ‘চাঁদপুর-৪ আসনের প্রার্থী হিসেবে আমাদের পার্টি আমাকে মনোনীত করেছে। আমি মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছি। পার্টি চিন্তা করছে, আমাকে সেখান থেকে মনোনয়ন দেবে। আমাদের দল থেকে এই আসনে আর কেউ মনোনয়নপত্র উঠায়নি। আশা করি, এখান থেকে আমি নির্বাচন করবো।’

নির্বাচনের জন্য এলাকায় কত দিন ধরে প্রচারণা চালিয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি ফরিদগঞ্জের রাজনীতিতে বহু পুরনো। সেই ১৯৭৩ সাল থেকে ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম। ফরিদগঞ্জ কলেজের এমন কোনও প্যানেল নেই, যেখানে আমার সম্পৃক্ততা ছিল না। আমার সহায়তায় বহু ভিপি তৈরি হয়েছে। পৌর চেয়ারম্যান, বিএনপির যত নেতা, যত ইউনিয়ন চেয়ারম্যান—সবাই তো আমার হাত দিয়ে তৈরি। ফরিদগঞ্জের এমন কোনও বাড়ি নেই, এমন কোনও ঘর নেই যেখানে আমি খাইনি, জনসংযোগ করিনি। আমি চাঁদপুর জেলার সামাজিক-সাংস্কৃতিক বহু সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপির রাজনীতি দিয়ে আমার যাত্রা শুরু হয়েছিল। আমি বিএনপির সহযোগী সংগঠন ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম। ১৯৯১ সালে বিএনপি চেয়ারপারসনের কিছু কাজকর্ম করার ব্যস্ততার কারণে আমাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। ২০০৮ সালে চেয়ারপারসন আমাকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে মনোনয়ন দিয়েছেন।’

চাঁদপুর-৪ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে ১৮ জন মনোনয়ন চেয়েছেন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী দিলে সেক্ষেত্রে নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে কতটুকু আশাবাদী এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘গ্রামেগঞ্জে মানুষের সঙ্গে বহুদিন ধরেই মিশেছি। যদি নির্বাচন সুষ্ঠু হয় তাহলে জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী। আমাদের জোর দাবি অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক।’

তিনি বলেন, ‘আমি সব সময় পরিচ্ছন্ন রাজনীতি করেছি এবং করবো। এটি একেবারে আমার ছাত্ররাজনীতি থেকেই শুরু হয়েছে। অন্য কোনও রাজনৈতিক দলের কর্মী আমার আচরণে ভিকটিম, কেউ কষ্ট পাবে সেটি শিখিনি। সব দলের কাছে আমার গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। এলাকায় ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ অন্য যেকোনও দলের যে কাউকে জিজ্ঞেস করলে সবাই বলবে, শাহজাহান ভাইকে আমরা ভালো জানি, তিনি একজন ভালো মানুষ। এটি যে কেউই বলবে। তবে আমি তো ফেরেশতা নই। আমার অনেক দোষত্রুটি থাকতে পারে। কিন্তু আমার জ্ঞানত জীবনে কারও ক্ষতি করিনি, কারও হক আত্মসাৎ করিনি, শব্দচয়নে কাউকে কষ্ট দিইনি। কেউ আমাকে গালি দিলেও আমি তাকে বোঝানোর চেষ্টা করি।’

চাঁদপুরের আর কোনও আসনে বিএনএমের প্রার্থী আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার আসলে অনেকগুলো বিষয় দেখতে হচ্ছে। আমরা সাব কমিটি করে দিয়েছি। আমি এখন পর্যন্ত জানি না কোন প্রার্থী কোন আসন থেকে মনোনয়ন কিনেছেন।’

তিনি বলেন, ‘আমি একজন মানবাধিকারকর্মী। আমার মানবাধিকারের মূলমন্ত্র হচ্ছে নবীজির বিদায় হজের ভাষণ। এর চেয়ে চমৎকার মন্ত্র আর কিছু হতে পারে না। কাজেই আমার চিন্তাভাবনা একটু ভিন্ন।’

ফরিদগঞ্জের ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ব্যক্তি হিসেবে ভালো মানুষ শাহজাহান। একসময় ফরিদগঞ্জের মানুষ তাকে পছন্দ করতেন। ফরিদগঞ্জে তার নামে বিএনপির একটি গ্রুপ ছিল। তবে বিগত নির্বাচনগুলোতে বিএনপির মনোনয়ন চাইলেও দলীয় টিকিট পাননি। এই আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ১৯৯১ সালে, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৬ সালে পুনরায় এবং ২০০১ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন প্রয়াত বিএনপি নেতা আলমগীর হায়দার। ২০০৮ সালে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করেন বিএনপি নেতা লায়ন হারুনুর রশিদ, ২০১৪ সালে বিএনপি নির্বাচনে যায়নি আর ২০১৯ সালের নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন পান এম এ হান্নান।

শেয়ার করুন