মুজিব শতবর্ষে ভূমিহীন গৃহহীন পূনর্বাসনের মহতী উদ্যোগে নিয়োজিত থাকায় আমরা ভাগ্যবান

হীরামনি :
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিলো সোনার বাংলা গড়ে তোলা, যে সোনার বাংলার প্রতিটি মানুষ তাদের মৌলিক চাহিদা পুরণ করে উন্নত জীবনের অধিকারী হবে। জীবনমানের উন্নতি সাধনে মানুষের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক চাহিদা ‘গৃহ’, এই গৃহকে প্রাধান্য দিয়ে মুজিব শতবর্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন ঘোষণা দিলেন “বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না” তখনই ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য গৃহ প্রদান নীতিমালা -২০২০ প্রণয়ন করে সে আলোকে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের তালিকা সংরক্ষণ করে গৃহ নির্মাণের কাজ ঝরের গতিতে শেষ করা হয়েছে। এই কাজে বাংলাদেশের বিভিন্ন উপজেলায় ১ম ধাপে নির্মিত ৬৬১৮৯ টি পরিবারকে গৃহ প্রদান করা হচ্ছে আজ। প্রতিটি দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট সেমি পাকা ঘরে আছে রান্নাঘর ও টয়লেট এর সুব্যবস্থা। গৃহ প্রদানের এই মহতী অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যার উদ্যোগে গৃহহীনরা এই গৃহগুলো পাচ্ছে। প্রতিটি উপজেলায় বরাদ্দকৃত ঘরের নির্মাণ কাজ শেষ করতে গিয়ে কর্মকর্তা কর্মচারী ও সংশ্লিষ্টদের অম্লমধুর অভিজ্ঞতা অর্জিত হয়েছে। যাদের জমি ও ঘর কিছুই নেই সেই ‘ক’ শ্রেণির পরিবারের জন্য ন্যুনতম ২ শতাংশ করে খাস জমি উদ্ধার করতে গিয়ে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। তাছাড়া খাস জমির অন্য যে একটি বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করা ছিলো সেটি হলো উঁচু খাস জমি যেখানে ঘরের ভিটি করার জন্য আলাদা করে মাটি কাটার প্রয়োজন হবে না। এই বৈশিষ্ট্যকে ঠিক রেখে বেঁধে দেয়া অল্প সময়ে জমি খুঁজে বের করা খুবই কষ্টসাধ্য বিষয় ছিলো তবুও চেষ্টায় ত্রুটি না রেখে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ঘরের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মধ্যে ঘর হস্তান্তর কার্য শুরুর আগেই জমি বন্দোবস্ত দিয়ে কবুলিয়তের কাজ যথাযথভাবে সম্পাদিত হয়েছে। খাস জমি উদ্ধার ও গৃহ নির্মাণ কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের ক্ষেত্রে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ যথাসাধ্য সহযোগিতা করেছেন।

ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় গৃহহীনের মাঝে একটি ঘর হস্তান্তর করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মারুফা সুলতানা খান হীরামনি

অনুমোদিত নকশা ও প্রাক্কলন অনুযায়ী গৃহ নির্মাণ কাজ সম্পাদন করতে আমরা দিনরাত পরিশ্রম করতে হয়েছে সংশ্লিষ্টদের। কুয়াশাচ্ছন্ন ভোর থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করতে হয়েছে। শীতকাল বিধায় নির্মাণ শ্রমিকদেরকে যথেষ্ট কষ্ট স্বীকার করতে হয়েছে। প্রাক্কলন অনুযায়ী মানসম্মত ইট, কাঠ, টিন, রড, সিমেন্টসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর যোগান দিতে গিয়ে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে।
উপকারভোগী পরিবারদের সাথে কথা বলতে গিয়ে তাদের মুখ থেকে বর্তমানে বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে নানা ধরনের শ্রুতিমধুর বাক্য শুনা গেছে। যেমন- “শেখের বেটিরে আল্লায় বাঁচায়ে রাহুক”, “আমরা স্বপ্নেও ভাবি নাই এমন পাকা ঘর পামু”, “আল্লায় শেখের বেটিরে সুখে রাহুক, হায়াত বাড়াইয়া দিক” ইত্যাদি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার উছিলায় গৃহ নির্মাণ কাজে সংশ্লিষ্টরাও উপকারভোগীদের কাছ থেকে দোয়া পাচ্ছে।
মুজিব শতবর্ষে সরকারের গৃহীত গৃহহীন ও ভূমিহীনদের পুনর্বাসন করার এই মহতী উদ্যোগের সময় আমরা সরকারি কর্মচারী হিসেবে নিয়োজিত আছি বিধায় নিজেদের ভাগ্যবান মনে করছি। এমন একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপে অংশগ্রহণ করে সফলভাবে কার্য সম্পাদন করা সত্যিই সৌভাগ্যের ব্যাপার।
লেখক পরিচিতি : মারুফা সুলতানা খান হীরামনি। সহকারী কমিশনার (ভূমি) সালথা উপজেলা, ফরিদপুর।

শেয়ার করুন

Leave a Reply