হাজীগঞ্জের নোয়াপাড়ায় গৃহবধূকে শ্লীলতাহানি-ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক :
হাজীগঞ্জের নোয়াপাড়া এলাকায় এক গৃহবধূকে শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালী মিজান খন্দকারের বিরুদ্ধে। আত্মীয়তার সম্পর্কের সুবাদে তিনি ভিকটিমের বাড়িতে গিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে উত্যক্ত ও কুপ্রস্তাব দেন। এতে রাজী না হওয়ায় কয়েকবার তার ঘরে ঢুকে তাকে জোরপূর্বক ধরে তার শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেন। এ বিষয়ে কাউকে কিছু জানালে তার সন্তানকে খুন করার হুমকিও দেন তিনি। সর্বশেষ গত ১০ অক্টোবর শ্লীলতাহানির শিকার অসহায় ওই গৃহবধূ লজ্জায় বিষয়টি এলাকার কাউকে না জানালেও সৌদী আরবে থাকা তার স্বামীকে জানান। পরে স্বামী দেশে আসার পর ২০ অক্টোবর চাঁদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দম ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন। এখন উল্টো থানায় অভিযোগ দিয়ে ওই প্রবাসীকে হয়রানির চেষ্টা চলছে অভিযোগ ভিকটিম ও তার স্বামীর।
অভিযোগে ভিকটিম উল্লেখ করেন, আমার স্বামীর সম্পর্কের ফুফাতো ভাই মিজান খন্দকার লম্পট প্রকৃতির। আমার স্বামী সৌদী প্রবাসী। আমি ঘরে ছোট সন্তানদের নিয়ে একা থাকার কারণে মিজান বেশ কিছুদিন ধরে আপত্তিকর ভাষায় কথা ও কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলে। কিন্তু আমি তাতে সাড়া না দেয়ায় তিনি আরও ক্ষেপে গিয়ে আরও বেশি উত্যক্ত করা শুরু করে। সর্বশেষ গত ১০ অক্টোবর সন্ধ্যা ৭টার দিকে মিজান যৌন কামনা চরিতার্থ করার জন্য গৃহবধূর ঘরে ঢুকে তাকে জড়িয়ে ধরে মুখ চেপে ধরে। পরে শরীরের স্পর্শকাতর বিভিন্নস্থানে হাত দিয়ে যৌন নিপীড়ন করে। এ সময় ওই গৃহবধূ তার থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ধস্তাধস্তি শুরু করলে বুক, গলায় নখের আচড় দেয়। পরে সন্তানরা ঘুম থেকে জেগে কান্নাকাটি শুরু করে। একপর্যায়ে অবস্থা বেগতিক দেখে গৃহবধূর পেটে লাথি মেরে পালিয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে দুই শিশু সন্তানসহ তাকে খুন করার হুমকিও দেন।
পরবর্তীতে স্বামীকে জানালে তিনি সৌদী আরব থেকে দেশে এসে ওয়ার্ড মেম্বারসহ স্থানীয় গন্যমান্য কয়েকজনকে বিষয়টি জানান।
ভিকটিমের স্বামী ইব্রাহীম বলেন, আমী গরিব মানুষ। পেটের দায়ে স্ত্রী-সন্তানদের রেখে বিদেশ করছি। আমার স্ত্রী ঘরে ছোট সন্তানদের নিয়ে থাকে। কিন্তু বাড়ির কয়েকজনের সাথে তার সম্পর্কের কারণে সে এখানে আসে। আমার স্ত্রীকে বিভিন্ন সময় কুপ্রস্তাব দিয়েছে। তাতে রাজী না হওয়ায় সে আমার স্ত্রীকে একাধিকবার ঘরে ঢুকে তার শরীরে হাত দিয়েছে, নির্যাতন ও ধর্ষণের চেষ্টা করেছে। নানা রকমের হুমকিও দিয়েছে। এ অবস্থায় থানায় অভিযোগ দেয়ার চেষ্টা করলে মিজান এবং তার সহযোগী কয়েকজন আমাকে শেষ করে ফেলার হুমকি দেয়। আমরা উপায়ন্তু না পেয়ে আদালতে মামলা করেছি। এখন মামলা তুলে নেয়ার জন্য আমাদেরকে নানা ধরনের হুমকি-ধমকি দেয়া হচ্ছে। আমার স্ত্রীকে নির্যাতনের সুষ্ঠু বিচার ও মিজানের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মিজান খন্দকার বলেন, তাদের বাড়িতে জমি নিয়ে বিরোধ ছিল। তা মীমাংসা করে দেয়ায় আমার উপর ক্ষিপ্ত। তাই সে আমাকে হয়রানি করার জন্য সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন অভিযোগ করেছে।
এ বিষয়ে হাটিলা পশ্চিম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন লিটু বলেন, এক প্রতিবেশীর মাধ্যমে আমি ঘটনাটি জেনেছি। অভিযুক্ত মিজানকে কোন দিন আওয়ামী লীগের কর্মকান্ডে দেখিনি। এখনতো অনেকেই আওয়ামী লীগের নাম বিক্রি করতে চান। তিনি বলেন, এখন যেহেতু বিষয়টি আদালতে গিয়েছে আমরা চাই সঠিক তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীর বিচার হোক।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম মজিবুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক রাসেল পাটওয়ারী বলেন, এ ধরনের কোন অপরাধী আওয়ামী লীগের কর্মী হতে পারে না। অপরাধী যেই দল বা মতেরই হোক না কেন দোষী হলে বিচার হবে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply