অনেক সমবায় সংগঠন নিস্ক্রিয় হয়ে পড়েছে, যেগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করতে হবে : ডিসি মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দীন
৫৪তম জাতীয় সমবায় দিবস উদযাপন,র্যালি ও আলোচনা সভা সম্পন্ন
মোঃ আলমগীর হোসেন পাটওয়ারী :
“সাম্য ও সমতায়, দেশ গড়বে সমবায়”— এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে চাঁদপুরে উৎসবমুখর পরিবেশে পালিত হয়েছে ৫৪তম জাতীয় সমবায় দিবস।

গতকাল ১ নভেম্বর শনিবার সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে জেলা প্রশাসন, জেলা সমবায় দপ্তর ও বিভিন্ন সমবায় সমিতির আয়োজনে র্যালি, জাতীয় সংগীত, পতাকা উত্তোলন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
দিবসটি উপলক্ষে সকালে চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে এক বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে সদর উপজেলা মিলনায়তনে এসে শেষ হয়।
র্যালি শেষে জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও জাতীয় এবং সমবায় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এরপর সদর উপজেলা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে, জেলা প্রশাসক- মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বলেন,
একসময় বাংলাদেশের সর্বত্র সমবায়ের এক জোয়ার ছিল। স্বাধীনতার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত এই দেশে কৃষিনির্ভর জনগোষ্ঠীকে একত্রিত করে আত্মনির্ভরতার পথে এগিয়ে নিতে সমবায় আন্দোলন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আজকের এই অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার পেছনেও রয়েছে সেই সমবায় চেতনার অবদান। সমবায়ের উদ্দেশ্য হলো মানুষকে একত্রিত করা, সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে তোলা এবং সেই সঞ্চয় থেকে নিজেদের ও রাষ্ট্রের মূলধন তৈরি করা। আগে যাদের ব্যবসা করার সামর্থ্য ছিল না, আজ অনেক সমবায় প্রতিষ্ঠান শত শত মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করেছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দীন, আরো বলেন, দেশের বহু ব্যাংক সমবায় সদস্যদের আমানতের ওপর নির্ভর করে চলে। কিন্তু বর্তমানে অনেক সমবায় সংগঠন নিস্ক্রিয় হয়ে পড়েছে, যেগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করতে হবে তরুণ ও শিক্ষিত সমাজকে সমবায়ের প্রতি আগ্রহী করতে হবে—এখান থেকেই উদ্যোক্তা ও কর্মসংস্থানের নতুন দিগন্ত খুলে যাবে। যদি আমাদের সমবায় সংগঠনগুলো সঠিকভাবে কাজ করত, তাহলে আজ এত বেকার তরুণ ভুল পথে যেত না। সমবায়ের মাধ্যমে তারা নিজস্ব পুঁজি গড়ে তুলতে পারত, উদ্যোক্তা হতে পারত।
শেষে জেলা প্রশাসক বলেন, সমবায়ের মূল লক্ষ্য হলো সঞ্চয়, মূলধন ও উদ্যোক্তা সৃষ্টি। সরকার সবাইকে চাকরি দিতে পারবে না, তাই আমাদের নিজেদের উদ্যোগে আত্মনির্ভর হতে হবে। সমবায় হলো একসাথে চলার প্রতীক—সবাই যদি নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন করি, তাহলে সমবায় আন্দোলনের মাধ্যমে বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাবে।
অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ এরশাদ উদ্দিন এর সভাপতিত্বে
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, সহকারী পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্)- মোঃ লুৎফর রহমান এবং সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার- এস.এম.এন জামিউল হিকমা।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, জেলা সমবায় অফিসার- মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন।
আলোচনা সভায় অন্যান্য বক্তারাও সমবায় আন্দোলনের গুরুত্ব ও আধুনিক সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এর ভূমিকা নিয়ে মতামত দেন।
অনুষ্ঠানে জেলার বিভিন্ন সমবায় সমিতির সদস্য, জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা এবং শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান শেষে জেলার বিভিন্ন সমবায় সমিতির সেরা সদস্যদের হাতে পুরস্কার তুলেদেন অতিথিরা।










