অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ, চাঁদপুর জেলা পরিষদ উপসহকারি প্রকৌশলী ইকবালকে কচুয়ায় বদলি

নিজস্ব প্রতিবেদক :
চাঁদপুর জেলা পরিষদে প্রায় ৪ বছরেরও বেশি সময় ধরে কর্মরত উপসহকারি প্রকৌশলী ইকবাল হোসেনকে বদলী করা হয়েছে। তার এই বদলীর আদেশ মার্চ মাসে হলেও অজ্ঞাত কারণে তা ২ জুন জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষের হাতে পৌঁছেছে। এতোদিন কুমিল্লা জেলা পরিষদ থেকে প্রেষনে বদলী হয়ে আসা এই প্রকৌশলী চাঁদপুর জেলা পরিষদে বদলী হয়ে আসেন। মূলত: তিনি এলজিইডি’র উপসহকারি প্রকৌশলী। তাই এবার তাকে কচুয়া উপজেলা প্রকৌশলী অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী পদে বদলী করা হয়েছে।
বিভিন্ন তথ্য সুত্রে জানা গেছে, গত ২২ মার্চ ২০২০ইং তারিখে তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী (প্রশাসন) পক্ষে প্রধান প্রকৌশলীর এক স্বাক্ষরিত পত্রে চাঁদপুর জেলা-পরিষদে প্রেষনে কর্মরত উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ ইকবাল হোসেনকে তার প্রেষনাদেশ প্রত্যাহার পূর্বক স্ব-বেতন স্কেলে কচুয়া উপজেলা প্রকৌশলীর দপ্তরে উপ-সহকারী প্রকৌশলী পদে বদলির আদেশ জারী করে। যার স্মারক নং-৪৬,০২,০০০০,০০১,১৯,০৪৩,১৮-২৩৪৪।
একাধিক বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, উপসহকারি ইকবালের বিরুদ্ধে একাধিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠে। গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে খোদ জেলা পরিষদ প্যানেল চেয়ারম্যান জসীম উদ্দীন, একজন প্রভাবশালী স্থানীয় সাংসদও সংশ্লিষ্ট উর্ধবতন দপ্তরে অভিযোগ করলে আনীত অভিষোগ ধরে তদন্ত করার নির্দেশও আসে। কিন্তু সেই তদন্তও ইকবাল হোসেন ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেন।
জানা গেছে, ইকবাল গত ক’ বছরে ঢাকায় বাড়ি গাড়ি করে কয়েক কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। জেলা পরিষদে থেকে নিজেও নিয়ম বহির্ভূতভাবে ঠিকাদারি করেছেন।
এদিকে চাঁদপুরে থাকার জন্য ইকবাল হোসেন নানা চেষ্টা তদবীর চালিয়ে যাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত : এর আগেও এই প্রকৌশলী একই অভিযোগে স্ট্যান্ড রিলিজ হয়ছিলেন। তাকে বরখাস্ত করা হয় এবং গ্রেফতারও করা হয়। তৎকালিন জেলা পরিষদ প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তার বিরুদ্ধে অভিযোগপ এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিলো।
অভিযোগের ব্যাপারে গতকাল রাতে জেলা পরিষদ প্যানেল চেয়ারম্যানের সাথে আলাপ করলে তিনি বলেন, কোন অজ্ঞাত কারণে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত হলো না, তা আর জানলাম না। তিনি আরো বলেন, এই কর্মকর্তা শুধু দুর্নীতি বা অনিয়মই করেন না, তিনি নানা সময়ে সরকারের উন্নয়ন বিরোধী কথা বলেন।
চাঁদপুর জেলা পরিষদের প্যানেল প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মিজানুর রহমান জানান, আমি (০২জুন) মঙ্গলবার এ আদেশটি পেয়েছি। তবে ইকবাল হোসেনের কর্মস্থলে আরেকজন না আশা পর্যন্ত তাকে ছাড়পত্র দিতে পারছি না। বদলীর দেড়মাস পর কেন অর্ডার পেলেন, এই সম্পর্কে তিনি বলেন এটি এখন পেয়ে আমিও বিব্রত। দুর্নীতি, তদন্ত এসব বিষয়ে তিনি বলেন, হ্যাঁ এমন অভিযোগ হয়েছিলো। উর্ধ্বতনরা তদন্ত কমিটিও করেছিলেন। কিন্তু কি কারণে তা হয়নি সে আর আমি বলতে পারছি না।
কচুয়া প্রকৌশলী কর্মকর্তা সৈয়দ জাকির হোসেন জানান, আমাদের ওই দপ্তরটিতে কর্মরত লোক না থাকায় কাজের খুবই সমস্যা হচ্ছে। আমি গতকাল (০৩জুন) বুধবার আদেশটি হাতে পেয়েছি এবং তিনি কবে যোগদান করবে চাঁদপুরে যোগাযোগ করবো।
এদিকে উপসহকারী প্রকৌশলী ইকবালের বিরুদ্ধে অভিযোগের ব্যাপারে কথা হলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ভিযোগ দাঁড় করিয়েছিলেন প্যানেল চেয়ারম্যান। তার এলাকার এমপি মহোদয়ই তা প্রত্যাহার করে নেন। তদন্ত কমিটির বিষয়ে তিনি বলেন, এমন কোন কমিটির কথা আমি জানি না এবং হয়ওনি।

শেয়ার করুন

Leave a Reply