আজ থেকে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় ২ মাস মাছ ধরা নিষিদ্ধ, নদীতে নামলেই জেল-জরিমানা

নিজস্ব প্রতিবেদক :
ইলিশের পোনা জাটকা রক্ষায় রোববার রাত ১২টা থেকে চাঁদপুরের পদ্মা ও মেঘনায় মার্চ ও এপ্রিল এ দুই মাস মাছ ধরা বন্ধ থাকবে। নদীর অভয়াশ্রম এলাকা চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত প্রায় ৭০ কিলোমিটার এলাকায় এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকবে। জাটকা রক্ষা কর্মসূচি সফল করতে মাইকিংসহ বিভিন্ন ধরনের প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে জেলা টাস্কফোর্স। মাছ ধরা বন্ধ থাকায় বেকার ৪০ সহ¯্রাধিক নিবন্ধিত জেলেকে প্রণোদনা হিসেবে ফেব্রæয়ারি থেকে চার মাস ৪০ কেজি করে চাল সহায়তা দিবে সরকার। এরপরও নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কেউ নদীতে মাছ শিকার করতে গিয়ে ধরা পড়লেই ভোগ করতে হবে জেল-জরিমানা।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জাটকা সংরক্ষণ কর্মসূচি বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে জেলা টাস্কফোর্স, মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ, সদর ও হাইমচর উপজেলা টাস্কফোর্স জনপ্রতিনিধি, জেলে নেতা ও জেলেদের নিয়ে প্রস্তুতিমূলক সভা করেছেন।
মতলব উত্তর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মনোয়ারা বেগম বলেন, জাটকা সংরক্ষণের জন্য জেলেপাড়া ও আড়তগুলোতে মাইকিং করে, লিফলেট বিতরণ ও ব্যানার সাঁটিয়ে প্রচারণা করা হচ্ছে এবং ২৪ ঘণ্টা অভিযান চলবে।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুল বাকী বলেন, আগামী দুই মাস নদীতে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ। এ সময়ে জাটকা ইলিশ পরিবহন, বাজারজাত ও মজুত নিষিদ্ধ থাকবে। এই আইন অমান্য করলে নৌপুলিশ, জেলা পুলিশ, কোস্টগার্ড ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের ভ্রাম্যমাণ আদালত আইনগত ব্যবস্থা নেবেন। কোন জেলে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নদীতে মাছ শিকার করতে গিয়ে ধরা পড়লে কমপক্ষে ১ বছর থেকে শুরু করে ২ বছর পর্যন্ত কারাদÐ বা সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দÐ হতে পারে।
তিনি বলেন, ইতিমধ্যে জাটকা রক্ষা কর্মসূচি বাস্তবায়নে বিভিন্ন স্থানে লিফলেট বিতরণ, মাইকিং, পোস্টারিং ও ব্যানার লাগানো হয়েছে।
নিষিদ্ধ সময়ে জেলেদের চার মাস চাল সহায়তা দিচ্ছে সরকার। আমরা প্রথম কিস্তিতে জেলার ৪০ হাজার ৫টি মৎস্যজীবী পরিবারের জন্য দুই মাসের প্রতি মাসে ৪০ কেজি হিসাবে মোট ৩ হাজার ২শ’ .৪ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী ২৩ মার্চের মধ্যে এ চালগুলো চাঁদপুর, হাইমচর, মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলায় প্রশাসনের মাধ্যমে বিতরণের নির্দেশনা রয়েছে। দ্বিতীয় কিস্তিতে চাল বরাদ্দ সাপেক্ষে বিতরণ করা হবে।
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, অভিযানের সময় নদীতে নামলেই আইনি ব্যবস্থায় আনা হবে। জাতীয় সম্পদ রক্ষায় জনপ্রতিনিধিসহ সবাইকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। অভিযান চলাকালীন সময়ে নদীপথে স্পিডবোট চলাচল বন্ধ থাকবে।
তিনি বলেন, কিছু জেলে ভুল করে নিষিদ্ধ সময়ে মাছ ধরে থাকে। অভিযানের সময় মাছ ধরা থেকে বিরত থাকলে কি কি সুবিধা পাবে তা তাদেরকে ভালোভাবে বুঝাতে হবে। আমরা সবসময়ই জেলেদের স্বার্থে তথা বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থেই কাজ করে যাচ্ছি।

শেয়ার করুন

Leave a Reply