আমরা খুব অল্প সময়ের মধ্যে জাতির পিতার নেতৃত্বে একটি সংবিধান পেয়েছি : কামরুল হাসান

চাঁদপুরে জাতীয় সংবিধান দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা :
সংবিধান হচ্ছে আইনের উৎস ও অভিভাবক : পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ
নিজস্ব প্রতিবেদক :
৪ নভেম্বর। ১৯৭২ সালের এই দিনে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত গণপরিষদে বাংলাদেশের সংবিধানটি গৃহীত হয়। এবারই প্রথম সরকার সংবিধানের ৫০ বছর উপলক্ষে এবার ৪ নভেম্বরকে সংবিধান দিবস হিসাবে ঘোষনা করে সরকারি পর্যায়ে পালন করার সিদ্ধান্ত নেয়। সেই আলোকে আজ শুক্রবার জাতীয় সংবিধান দিবস- ২০২২ চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কর্তৃক আয়োজিত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

জেলা প্রশাসক কামরুল হাসানের সভাপতিত্বে তার সম্মেলন কক্ষে এ আলোচনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ পিপিএম (বার)।

চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান বলেন, দেশের সংবিধান হচ্ছে সকল আইনের উৎসের প্রধান জায়গা । আমাদের বিচার বিভাগ, শাসন বিভাগসহ যতো রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান রয়েছে, সবগুলোই সংবিধানের আইনে পরিচালিত। তিনি বলেন, আমরা সৌভাগ্যবান যে, আমরা খুব অল্প সময়ের মধ্যে জাতির পিতার নেতৃত্বে একটি লিখিত সংবিধান পেয়েছি। আজ এই সংবিধান আছে বলেই আমরা আমাদের প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড সুচারুভাবে চালাতে পারছি। কামরুল হাসান আরও বলেন, চাঁদপুরবাসী গর্বিত একারনে যে, এই জেলার একজন কৃতিসন্তান সংবিধান প্রনেতা ৩৪ সদস্যের একজন। তিনি হলেন গণপরিষদের সম্মানিত সদস্য হাসান হাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, আমাদের সবসময়ই দেশের নাগরিক হিসাবে সংবিধানকে মর্যাদা দিতে হবে। এর সকল ভাগে অনুচ্ছেদে যা বলা আছে, তা দেশের প্রতিটি মানুষের জন্যে নিবেদিত।মৌলিক অধিকার, আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে আমাদের সম্পর্কসহ সকল বিষয়ে সংবিধানে নির্দেশনা রয়েছে। এই নির্দেশনা মেনেই আমাদের চলতে হবে। তিনি বলেন, সংবিধান সম্পর্কে নাগরিকের ধারনা থাকতে হবে। বিশেষ করে আজকে স্কুল কলেজে কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা পড়ছে, তাদের মধ্যে বাংলাদোশের সংবিধান সম্পর্কে ধারনা থাকতে হবে। জেলা প্রশাসক বলেন, আগামী বছর থেকে আমরা সংবিধান সম্পর্কিত জ্ঞানমূলক একটি প্রতিযোগিতা শিক্ষার্থীদের মাঝে করার ব্যবস্থা নেবো।

পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ বলেন, সংবিধান হচ্ছে, সকল আইনের অবিভাবক। জাতির পিতার নেতৃত্বে আমাদের দেশের লিখিত সংবিধান একটা স্বল্প সময়ের মধ্যে উৎকৃষ্ট সংবিধান। তিনি বলেন, দেশের সংবিধান সম্পর্কে প্রতিটি নাগরিকেরই ন্যুনতম ধারনাটাও থাকতে হবে।তাই আমি মনে করি, সংবিধান দিবসকে উপলক্ষ করে প্রতি বছরই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এর, তৈরির ইতিহাস, অনুচ্ছেদ আইনের ধারাগুলো থেকে তথ্য উপাত্ত নিয়ে একটা কুইজ আকারের প্রতিযোগিতার আয়োজন করলে এ সংবিধান সম্পর্কে তাদের ধারনা হবে এবং এর আইন সম্পর্কে তারা জানতে পারবে। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ বলেন, গত ৫০ বছরে অনেকবারই আমাদের সংবিধানকে সামরিক জান্তা তথা অবৈধ সরকারগুলো এর মর্যাদাকে ক্ষুন্ন করেছে। সংশোধনের নামে কালো আইন তৈরি করেছে। জাতি তাদের কখনো ক্ষমা করেনি এবং করবেও না।


জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল তাঁর আলোচনার শুরুতেই দেশের হাতে লিখা সংবিধানের দালিলিক প্রমান তুলে ধরেন এবং ঐ সংবিধানে তাঁর পিতা চাঁদপুরের সর্বজন শ্রদ্ধেয় প্রয়াত আবদুল করিম পাটওয়ারী যিনি সে সময়ের গণপরিষদের সদস্য ছিলেন, তাঁর নিজ হাতের স্বাক্ষরটি প্রদর্শন করেন এবং বলেন, আমি গর্ববোধ করি, আমার বাবা বাংলাদেশের সংবিধানের জন্মকালিন সময়ে গনপরিষদের একজন অন্যতম সদস্য। তিনি বলেন, সংবিধান আমাদের চালিকাশক্তি। আলোচনায় আরো অংশ নেন,
চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী, চাঁদপুর সরকারি কলেজের একজন অধ্যাপক, সিনিয়র সাংবাদিক শাহাদাত হোসেন শান্ত, একজন স্কুল শিক্ষার্থী প্রমুখ। আলোচনা সভায় বিভিন্ন বিভাগ ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন