চাঁদপুর পৌরসভা নির্বাচনে কে হচ্ছেন বিএনপির প্রার্থী

আশিক বিন রহিম :
অবশেষে সকল জল্পনাকল্পনার অবসান ঘটিয়ে আগামী ১০ অক্টোবর শনিবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে স্থগিত হওয়া চাঁদপুর পৌরসভার নির্বাচন। গতকাল ৩ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন (ইসি) এই সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছেন। এর আগে সকলকল প্রস্তুতি থাকার পরেও প্রথম ঘোষিত তারিখের (২৯মার্চ) মাত্র ১৬ দিন আগে বিএনপির মনোনিত মেয়রপ্রার্থী শফিকুর রহমান ভূঁইয়া (৬০) মৃত্যুতে ১৩ মার্চ নির্বাচন স্থাগিত করা হয়।
এদিকে ২০১৫ সালের নির্বাচনে অংশ না নিলেও এবার চাঁদপুর পৌরসভা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিএনপির প্রার্থী কে হচ্ছেন- এ নিয়ে ইতিমধ্যে বিএনপি এবং বিরোধী দলের শিবিরেও চলছে আলোচনা-গুঞ্জন। কারণ, ঈশ্বনীয় জনপ্রিয়তা থাকা সাবেক পৌর চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান ভুইয়ার মৃত্যুর পর দলটি এখনো পর্যন্ত যোগ্য একক প্রার্থী মনোনিত করতে গলদঘর্ম হচ্ছে। তবে ইতোমধ্যে বেশ কয়েরজন প্রার্থী বিএনপির মনোনয়ন পেতে দৌঁড়েঝাপ শুরু করেছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই দীর্ঘ দিন দলের কার্যক্রম কিংবা রাজপথে দলীয় কর্মসূচিতে অংশ গ্রহণও করতে দেখা যায়নি। কারো কারো পদ-পদবি থাকলেও সাধারণ ভোটাদের কাছে নেই পরিচিত।
একক প্রার্থী নির্বাচনের এ বিষয়ে চাঁদপুর জেলা বিএনপির অ্যাড. সলিম উল্লাহ সেলিম জানান, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার ভোট চুরির মাধ্যমে গণতন্ত্রকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। সেই নির্বাচনে আমরা যাব কিনা তা নিয়ে এখনো ভাবছি। নির্বাচনে অংশ নিলেও এটিকে আমরা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিবো। সে ক্ষেত্রে আমরা নিজেদের মধ্যথেকে যোগ্য প্রার্থীকে নির্বাচন করব। চূড়ান্ত প্রার্থীর নাম দলীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রেসবিফিং করে জানিয়ে দেওয়া হবে।
অপরদিকে বিএনপির একাধিক সূত্রে জানা যায়, এখন পর্যন্ত একক মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে শক্তিশালী প্রার্থীরা হলেন : চাঁদপুর পৌর বিএনপির সভাপতি আক্তার হোসেন মাঝি, চাঁদপুর সরকারি কলেজের সাবেক জিএস হাজী মোশারফ হোসেন, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি শাহজামাল মিশন ও ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কাজী মোহাম্মাদ ইব্রাহিম জুয়েল। নাম প্রাকাশে অনিচ্ছুক দলের একাধিক নেতাকর্মীর সাথে কথা বলে জানা যায়, যেহুতু সর্বদিক থেকে আওয়ামী লীগ খুবই শক্তিশালী এবং ঐক্যবদ্ধ, সেহতেু প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিএনপিকে খুবই সতর্ক থাকতে হবে। তৃণমূল নেতাকর্মী কিংবা সাধারণ ভোটারদের সাথে সম্পর্ক নেই এমন নেতাকে মনোনয়ন দিলে চরম ম্ল্যূ দিতে হবে দলটিকে।
তবে উল্লেখিত ৪ প্রার্থীর মধ্যে তৃণমূল নেতাকর্মীদের পছন্দের তালিকায় রয়েছেন পৌর বিএনপির সভাপতি আক্তার হোসেন মাঝি নয়তো জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী মোহাম্মাদ ইব্রাহিম জুয়েল। তাদের দাবী, বয়সের প্রাজ্ঞতা এবং সাধারণ ভোটার কাছে আক্তার মাঝির পরিচিতি এবং গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। তবে ২০০৪ সালের পৌর নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে তার কারণে বিএনপির প্রার্থী শফিকুর রহমান ভুইয়া পরাজয় বরণ করেন। আর মাঠ গুছানো থেকে শুরু করে তৃণমূল নেতাকর্মী এবং সাধারণ ভোটারদের কাছে জনপ্রিয় কাজী মোহাম্মাদ ইব্রাহিম জুয়েল। তাছাড়া তরুণ প্রজন্মের প্রিয় এই ছাত্রনেতাকে সদ্যপ্রয়াত শফিকুর রহমান ভুইয়ার যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে ধরা হয়। কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম জুয়েল বিএনটির একক প্রার্থীর মনোনয়ন পেলে এরবারে পৌরসভা নির্বাচনে লড়াই হবে দুই জুয়েলের। কারণ, আওয়ামী লীগ মনোনিত একক প্রার্থীর নামের শেষে শব্দটিও জুয়েল। তবে সবশেষে কে হবেন বিএনপির প্রার্থী তার জন্যে কৌতূহলী জনসাধারণকে আর কয়দিন অপেক্ষা করতে হবে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply