মাহবুবুর রহমান সেলিম

মাহবুবুর রহমান সেলিম। যার জীবনের লেখালেখির ক্যানভাস ছিল নানা মাত্রায় বিস্তৃত এবং বিষয়বৈচিত্র্যে অনেকটাই ভরপুর। সাহিত্যের নানা শাখা-প্রশাখায় ছিল অবাধ বিচরণ। সিদ্ধহস্তে কাব্যচর্চা নিজস্ব স্বকীয়তায় এবং আপন গুণে। স্কুল জীবন থেকেই বই পড়ার নেশা ছিল। প্রতিদিনের বিকেলটা কাটত শহরের বিভিন্ন লাইব্রেরীতে। পাঠ্যাভাস তারই সুবাদে লিখতে শুরু করেন আপন অনুভূতি নিয়ে। ছড়া এবং কবিতার মাধ্যমে এমনকি তথ্যবহুল প্রবন্ধ লিখায় যাত্রা শুরু তার।
হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ছাত্র তিনি। ১৯৭৩ সালে তৎকালীন সরকার দেশে প্রতিটি সরকারি স্কুলের ছাত্র সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করেছিলো। তখন তিনি তার স্কুল থেকে বিপুল ভোটে ছাত্রর সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন এবং তখন থেকেই শুরু হলো আরেকটি অধ্যায়। তিনি সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেন পুরোপুরি। কয়েকটি পত্রিকায় সংবাদ পাঠাতে শুরু করেন। খুব সম্ভবত আমি চাঁদপুরে প্রথম দেওয়াল পত্রিকা বের করেন, যা ছিল একটি নেটে আবৃত কাঠের বাক্সের মধ্যে সাঁটানো। শহরের এক স্কুল থেকে আরেক স্কুল সর্বশেষে চাঁদপুর কলেজ লাইব্রেরীর সামনে। এটা ছিল তৎকালীন সাহিত্য অঙ্গনে একটা নতুন সংযোজন তাতে শোভা পেত নবীন কিশোর কিশোরীদের লেখা। এরপর তিনি “আলোড়ন” নামে একটি মাসিক পত্রিকা বের করেন চাঁদপুর থেকে।
১৯৭৬ সালে চাঁদপুর কলেজকে সরকারিকরণের জন্য সাতটি ছাত্র সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছিল একটি ঐক্য পরিষদ। তিনি ছিলেন সেই ঐক্য পরিষদের আহবায়ক। প্রয়োজনের খাতিরে পরবর্তীতে দেশের বাইরে যেতে হয়। বিদেশের মাটিতে একটা দীর্ঘ সময় কাটিয়ে আবার দেশে ফিরেন এরমধ্যে তার দুটি মেয়ে সন্তানের জন্ম হয় ওরাও আস্তে আস্তে বড় হতে থাকে। বড় মেয়ে এ লেভেল এবং ছোটজন ও লেভেল শেষ করে তার সাথে দেশে ফিরেন। তারপর আবার সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেন এবং “শিল্প চুড়া” নামে একটি সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠন গড়ে তোলেন। এবং তারই মাধ্যমে চাঁদপুরের বিভিন্ন প্রগতিশীল ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করার চেষ্টা করেন। পরবর্তীতে তিনি “মাদকমুক্ত চাঁদপুর গড়ি” যা একটি শক্তিশালী মাদক বিরোধী সংগঠন। তিনি সেই সংগঠনের জেলা কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন। জেলাকে মাদক মুক্ত করার প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়াও ঢাকা থেকে প্রকাশিত একটি পাক্ষিক পত্রিকা “অর্থ কাগজ” নামে, যা শিক্ষাঙ্গন এবং বিভিন্ন ব্যাংকপাড়ায় বহুল প্রচলিত এবং চাঁদপুরের থেকে প্রকাশিত দৈনিক একাত্তরের পত্রিকায় প্রধান নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে যোগদান করেন।
চাঁদপুর প্রতিদিনের এক যুগ পদার্পণের এই শুভক্ষণে তিনি বলেন, যাদের সান্নিধ্যে আমি অনেক উৎসাহ এবং প্রেরণা পেয়েছি বিভিন্নভাবে। বিশেষ করে আজকে যে পত্রিকাটির একযুগ পূর্তি হতে যাচ্ছে দৈনিক “চাঁদপুর প্রতিদিন” তার সম্পাদক ও প্রকাশক এবং বর্তমানে চাঁদপুর প্রেসক্লাবের দ্বিতীয়বারের মতো সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী কথা। চাঁদপুরে প্রথম নারী উদ্যোমী মেলা অনুষ্ঠিত হয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে যার উদ্বোধন করেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডাক্তার দীপু মনি। সেখানেও এই সম্পাদকসহ আমাদের একটা বলিষ্ঠ ভূমিকা ছিল। আমি চাঁদপুর প্রতিদিনের লেখক এবং তার উত্তোরোত্তর সাফল্য কামনা করছি।

শেয়ার করুন

Leave a Reply