চাঁদপুরে বাখরাবাদ গ্যাসের অভিযান : ১০ দিনে ২৬৪ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক :
চাঁদপুর শহরে বাখরাবাদ গ্যাস সিস্টেম লিমিটেডের বিশেষ অভিযানে ২৬৪টি গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এর মধ্যে বাণিজ্যিক ৬টি, বাকি ২৫৮টি আবাসিক গ্যাস সংযোগ ছিল। এছাড়া ১০ দিনের এ অভিযানের গ্রাহকদের কাছ থেকে স্পট কালেকশন হয়েছে ৩৫ লাখ টাকা এবং অভিযান শুরু হওয়ার পর ব্যাংকে বকেয়া বিল জমা পড়েছে প্রায় দেড় কোটি টাকা।
সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা আবাসিক গ্যাস সংযোগগুলোর মধ্যে ৭০টির বকেয়া ছিল এবং বাকিগুলো সব অবৈধ গ্যাস সংযোগ ছিল।
বাখরাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষ জানায়, চাঁদপুরে বিপুল সংখ্যক অবৈধ গ্যাস সংযোগের খবরে অভিযান শুরু করে বাখরাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষ। এ অভিযানে মাঠে নেমেছে ২১টি স্পেশাল টিম। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘বিশেষ সংযোগ বিচ্ছিন্ন টিম’। প্রতিটি টিমে ৪ জন করে মোট ৮৪ জন লোক কাজ করছে। যারা ঢাকা থেকে এসেছে। এই অভিযান ৩১ মে থেকে শুরু হয়েছে এবং যা আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত চলবে। শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত এ অভিযান চলছে।
জানা গেছে, চলমান সময়ে নতুন করে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার কোন সিদ্ধান্ত না হলেও সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে অনেকেই অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ চালাচ্ছেন। অথচ চাঁদপুর বাখরাবাদ গ্যাস সিস্টেম লিমিটেডের আওতায় চাঁদপুর সদর, হাজীগঞ্জ, শাহরাস্তি এবং মতলব দক্ষিণ রয়েছে। যেখানে আবাসিক ২৩ হাজার ৮৫০টি, বাণিজ্যিক ২০৬টি, সিএনজি ৫টি, ক্যাপটিক ৩টি, ১টি পাওয়ার এবং ২টি ইন্ড্রাস্ট্রি বৈধ গ্রাহক হিসেবে রয়েছে। কিন্তু কতিপয় ঠিকাদার ও বাখরাবাদ গ্যাস সিস্টেম লিমিটেডের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে অবৈধ সংযোগের কারণে সরকার লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, চলমান এই বিশেষ অভিযানে বিচ্ছিন্নকৃত অবৈধ গ্যাস সংযোগ কতিপয় ঠিকাদারের যোগসাজশে গ্যাস বিচ্ছিন্নকারী টিম চলে যাওয়ার অবৈধ গ্রাহকগণ পরে পুনরায় সংযোগ চালু করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বাখরাবাদ গ্যাস সিস্টেম লিমিটেড চাঁদপুরের ব্যবস্থাপক (বিক্রয়) প্রকৌশলী মো. মাহমুদুজ্জামান বলেন, যতদিন প্রয়োজন অবৈধ গ্যাস সংযোগের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান থাকবে। এ পর্যন্ত ৩৫ লাখ টাকা স্পট কালেকশন করা হয়েছে। আর অভিযান শুরুর পর প্রায় দেড় কোটি টাকা বকেয়া বিল ব্যাংকে জমা দিয়েছেন গ্রাহকরা। আশা করছি আগামী ১৫ তারিখের মধ্যেই পুরো বকেয়ার টাকা আদায় করা সম্ভব হবে। আমাদের হট লাইন হচ্ছে ১৬৫২৩। যেকোন অভিযোগ বা পরামর্শ আমাদের এই নাম্বারে জানাতে অনুরোধ করছি।
তিনি বলেন, চলমান অভিযানে বিচ্ছিন্ন করা সংযোগ আমরা চলে আসার পর পুনরায় চালু করার অভিযোগ পেয়েছি। এমন একটি অভিযোগে চাঁদপুর সরকারি কলেজের উত্তর পাশের মাসুদ আলম নামের একজনের সংযোগ স্থায়ীভাবে বিচ্ছিন্ন করেছি। যাদের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পর আবারও সংযোগ দিচ্ছেন তাদের গ্যাস রাইজারটি উঠিয়ে নেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, কেউ যদি আমাদের অভিযানে বিচ্ছিন্ন করা সংযোগ আমরা চলে আসার পর পুনরায় অবৈধভাবে চালু করার চেষ্টা করেন। তাহলে আমরা শুধু রাইজার নয় একদম মূল জায়গা থেকে ওই গ্যাস সংযোগ স্থায়ীভাবে বিচ্ছিন্ন করবো। আর তিনি কখনই গ্যাস সংযোগ পাবেন না। এরসাথে কেউ জড়িত হলে এর দায়ভার কর্তৃপক্ষ নেবেন না।

শেয়ার করুন

Leave a Reply