বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাংচুরের প্রতিবাদে চাঁদপুরে আওয়ামী লীগের বিশাল বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ

এইচ.এম নিজাম :
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাংচুর ও অবমাননার প্রতিবাদে চাঁদপুরে আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল রোববার বিকেলে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে চাঁদপুর জেলা, সদর উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের আয়োজনে বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মূল শহর কালীবাড়ি মোড় তথা শপথ চত্বর, জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়, চিত্রলেখা মোড়, ছায়াবাণীসহ বিভিন্ন স্থানজুড়ে বিকেলের এই প্রতিবাদ মিছিলটি ছিল স্মরণকালের বৃহৎ একটি প্রতিবাদ ও সমাবেশ। যার মূল নেতৃত্বে ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বিশিষ্ট চিকিৎসক চাঁদপুরের সকলের প্রিয় জে আর ওয়াদুদ টিপু। মিছিলপূর্ব সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী। এছাড়া জেলা, সদর উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশে জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ ইউসুফ গাজী বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশের জন্ম হতো না। এ দেশ স্বাধীন হতো না। আর সেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যের অবমাননা এ জাতি মেনে নেবে না। সা¤প্রদায়িক শক্তি আবারও দেশে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এর সকল কিছুর পেছনে রয়েছে জামাত-বিএনপি জোট। তিনি বলেন, দেশের প্রতিটি উপজেলায় জাতির পিতার একটি করে ভাস্কর্য তৈরি করা হবে। মৌলবাদী ও সা¤প্রদায়িক গোষ্ঠীর বিষদাঁত আমরা ভেঙ্গে দিব। এদেশের ইতিহাস ঐতিহ্যকে ধারণ করার জন্য ভাস্কর্য। পূজার জন্য নয়। বিশ্বে এরকম বহু ভাস্কর্য রয়েছে।
জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডাঃ জে আর ওয়াদুদ টিপু বলেন, মূর্তি আর ভাস্কর্য এক নয়। মূর্তি হচ্ছে যাকে উপাসনা করা হয়। আর ভাস্কর্য কোন ব্যক্তি বা রাষ্ট্রের ইতিহাস-ঐতিহ্যকে স্মরণ করার জন্য তৈরি করা হয়। যা সারা পৃথিবী ছড়িয়ে। আমাদের মুসলিম বিশ্বের অধিকাংশ রাষ্ট্রতেই রাষ্ট্রনায়ক থেকে শুরু করে স্মরণীয় বরণীয় যারা ছিলেন, এমনকি আছেন তাদের স্মরণে ভাস্কর্য রয়েছে। নতুন করে এই ভাস্কর্য নিয়ে রাজনীতি করে ধর্মকে পুঁজি করে যারা আজ হীন অপকর্মে লিপ্ত, তারা সাবধান হয়ে যান। বঙ্গবন্ধুর এই সোনার বাংলার মাটিতে কখনো, কোনদিনই সা¤প্রদায়িক গোষ্ঠীর স্থান হবে না। বাংলার মানুষ এদেরকে যুগে যুগে জবাব দিয়েছে। ভবিষ্যতেও দিবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর পরিবার আমরা রাজপথের সৈনিক। কোন অন্যায় বা আপোস আমরা করি না। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিকরা এবং এদেশের কোটি কোটি মানুষ আজ ধিক্কার জানাচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশের কিছু মৌলবাদী গোষ্ঠী মূর্তি ও ভাস্কর্যের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষকে ভুল বার্তা দিচ্ছে। তাদের স্পর্ধা কোথায় গিয়ে আজ পৌঁছেছে? তারা জাতির পিতার ভাস্কর্যের উপর আঘাত হেনেছে। এরা সেই শক্তি যারা এদেশের স্বাধীনতা চায়নি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীন বাংলাকে মেনে নিতে পারেনি। আজ তাদের সাথে কারা এই অপকর্মে মিলছে তাও এখন মানুষ উপলব্ধি করছে। তিনি বলেন, আমরা ধৈর্য্যরে সাথে এখনো শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করে যাচ্ছি। কিন্তু এদের আস্ফালন ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ, ধর্মান্ধতা, ধর্মকে পুঁজি করে ব্যবসার প্রসার যদি হয় তাহলে আমাদের হয়তো শান্তিপূর্ণ অবস্থান থেকে ফিরে এসে কঠোর হতে হবে। চাঁদপুরের সর্বস্তরের মানুষও আজ ঘৃণ্য এই অপকর্মের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে। তিনি বলেন, চাঁদপুরের আওয়ামী পরিবারের পক্ষ থেকে আমরা এই বিজয়ের মাসে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
এছাড়াও প্রতিবাদ সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ্ব তাফাজ্জল হোসেন এসডু পাটোয়ারী ও অ্যাডঃ মজিবুর রহমান ভূঁইয়া, অ্যাডঃ বিনয় ভুষন মজুমদার, অ্যাডঃ রনজিত রায় চৌধরী, প্রচার সম্পাদক মাছুদ আলম মিল্টন, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আইয়ুব আলী বেপারি, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বাবুল, যুবলীগের যুগ্ম আহŸায়ক মাহফুজুর রহমান টুটুল, মোহাম্মদ আলী মাঝি প্রমুখ।
এছাড়া প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলে জেলা, সদর উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগ যুবলীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল চাঁদপুর শহরের প্রধান প্রাধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে দলীয় কার্যালয়ে এসে শেষ হয়।

 

শেয়ার করুন

Leave a Reply