বাজারের ফুটপাত গুলোকে দখলমুক্ত করতে হবে: জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন
প্রতিটি ঘটনাকেই আমরা গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছি: পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব
নিজস্ব প্রতিবেদক :
চাঁদপুর জেলা প্রশাসন আয়োজিত জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার (১০ নভেম্বর) সকালে জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সভায় সভাপতির বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন।
জেলা প্রশাসক আদালতের মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে বলেন, আদালতে চলমান মামলাগুলো যতদ্রুত নিষ্পত্তি করা যায় তাতে ভালো হবে। এ ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। মামলা নিষ্পত্তি হলে সমাজে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে। রাষ্ট্রের স্বার্থে আমরা ভালোভাবে কাজ করবো।
প্রতিনিয়ত উপজেলাতে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, শান্তির উপজেলা তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছেন উপজেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসক রাজনৈতিক সভা ও ওয়াজ মাহফিল প্রসঙ্গে বলেন, আমরা চাই বড় ধরণের কোন রাজনৈতিক সভা সমাবেশ বা ওয়াজ মাহফিল হলে সেসসয় যেন প্রশাসনকে অবহিত করা হয়৷ বর্তমানে বেশ কিছু সভা বা ওয়াজ মাহফিল হচ্ছে প্রশাসনকে না জানিয়ে। সেক্ষেত্রে আমি অল্পসময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা সভা করবো। উপজেলা পরিষদের ভিতরে সভা সমাবেশ করা ঠিক হবে না। সেক্ষেত্রে উপজেলারও নেতাকর্মীদের সাথেও আলোচনা সভা করা দরকার।
নৌ-পুলিশ, কোস্টগার্ড ও উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, নদীতে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজের জন্যে প্রতিদিন অভিযান করতে হবে। কাউকেই আমরা অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করতে দিবো না। প্রতিদিন বালুর উপরে অভিযান করতে হবে।
জেলা প্রশাসক মাদক প্রসঙ্গে বলেন, রেলওয় পুলিশ মাদকের উপর অভিযান করবেন এবং আগামী মাসের তার রিপোর্ট দিবেন।
এছাড়াও তিনি বলেন, প্রতিদিনই মাদকের বিরুদ্ধে যৌথভাবে অভিযান করতে হবে। বিভিন্ন স্পট বা জায়গা রয়েছে যা মাদক বিক্রেতা বা সেবনকারীরা আড্ডাস্থল হিসেবে পরিচিত, সেসব জায়গায় অভিযান পরিচালনা করতে হবে। । সেক্ষেত্রে একটি কর্ম পরিকল্পনা করতে হবে। আমরা চাই না জেলায় কোন মাদকসেবী থাকুক।
জেলা প্রশাসক কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সুপারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, কিশোর গ্যাং নিয়ে আত্মতৃপ্তির কোন সুযোগ নেই। তাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে।
এসময় হাজীগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, উপজেলা প্রশাসন অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের ব্যাপরে যথাযোগ্য ভূমিকা পালন করেছে। এধরণের অভিযানগুলো অব্যাহত রাখতে হবে।
যানজট নিরসনে জেলা প্রশাসক বলেন, যানজট নিরসনে পৌরসভার সাথে ট্রাফিক পুলিশের জনবল বাড়ানো প্রয়োজন। আগামী ১ মাসের মধ্যে অন্য জেলা বা উপজেলার সিএনজি বা ইজিবাইক চলাচল করতে পারবে না। বাজারের ফুটপাতগুলো দখল হয়ে গেছে। সেসব ফুটপাতগুলো দখলমূক্ত করতে হবে।
সভায় পুলিশ সুপার (এসপি) মুহম্মদ আব্দুর রকিব বলেন, কোন ঘটনাকে আমরা ছোট করে দেখি না। প্রতিটি ঘটনাকেই আমরা গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছি। কিশোর গ্যাং এর ক্ষেত্রে আইনের কঠোর প্রয়োগ শুরু করেছি। আইনের প্রয়োগ শুরু হলেই কিশোর গ্যাং এর প্রকোপটা কমে আসবে। অস্ত্র যখন হাতে থাকে তখন তারা বাচ্চা থাকে না। অভিভাবকদের মধ্যে সচেতনার প্রয়োজন। আমরা চাই না মামলা দিয়ে তার ভবিষ্যতের সমস্যা হোক। সেক্ষেত্রে অভিভাবক বেশি সচেতনতা প্রয়োজনের তাদের সন্তানের প্রতি।
এসপি আরো বলেন, মাদক পুরোপুরি নির্মূল করা না সম্ভব হলেও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অভ্যাহত রয়েছে। স্থানীয়রা যদি তথ্য দেয়া হয় তাহলে আমাদের আরো বেশি সহযোগিতা হবে। আমরা একটি টিম হিসেবে কাজ করছি। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় জেলাকে ভালো রাখার জন্যে কাজ করে যাচ্ছি। সবার প্রচেষ্টায় জেলা আইন-শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রয়েছে।
এসময় সভায় আরো বক্তব্য দেন স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক ও পৌর প্রশাসক মো. গোলাম জাকারিয়া, র্যাব ১১এর কমান্ডার মিটুন কুমার কুন্ডু, নৌ-পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের সহকারি পুলিশ সুপার ইমতিয়াজ আহমেদ, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. একেএম মাহবুবুর রহমান, জেলা মৎস কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী হাসান, জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি কুহিনুর বেগম, নারী ও শিশু আদালতের স্পেশাল পিপি শামসুল ইসলাম মন্টু, চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক গোপাল সাহা প্রমূখ।
আলোচনা সভার শুরুতে জেলা আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে ডকুমেন্টারি উপস্থাপন করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট (এডিএম) একরামুল ছিদ্দিক।