শাহমাহমুদপুরে রহস্যজনক অগ্নিকান্ডে ঘর পুড়ে ছাই

মিজান পাটওয়ারী :
চাঁদপুর সদর উপজেলার ৪নং শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের রনবলিয়া গ্রামে রহস্যজনক অগ্নিকান্ডে এক অসহায় ব্যক্তির ঘর পুড়ে ছাই হয়েছে। মঙ্গলবার (১৮ মে) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে এ অগ্নিকান্ড ঘটে। চাঁদপুর ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে দমকলবাহিনী পথিমধ্যে আসলে প্রতিবেশী ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
বুধবার (১৯ মে) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড রনবলিয়া গ্রামের ঢালী বাড়ির মৃত সাদেকুর রহমান ঢালীর একমাত্র ছেলে মোঃ ফারুক হোসেন ঢালীর বসত ঘরে রাতে আঁধারে অগ্নিকান্ডে পুড়ে যাওয়া সব যেন ছাই হয়ে পড়ে আছে। এতে আসবাবপত্র ও খাদ্য সামগ্রীসহ প্রায় ১ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতিসাধন হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার দাবি করছে। পাশাপাশি এ অগ্নিকান্ডকে কেউ পূর্ব শত্রুতা বশত করেছেন বলে ক্ষতিগ্রস্থ ওই পরিবার ও এলাকাবাসী দাবি করছেন।
ভুক্তভোগী ফারুক হোসেন ঢালী জানান, আমি ছোট খাটো একটা চাকরী করে কোন রকমভাবে জীবিকা নির্বাহ করে আসতেছি। ঈদের ছুটি কাটিয়ে গত সোমবার চট্টগ্রামে চলে যাই। গত রাতে এমন দুর্ঘটনার কথা শুনে সাথে সাথে রওনা দিয়ে সকালে বাড়ি এসে দেখি সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তবে এটা একটা ষড়যন্ত্র করে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। ৯নং ওয়ার্ড আ’লীগের সহ সভাপতি ও প্রতিবেশী মোঃ শফিকুর রহমান ঢালী জানান, রাত সাড়ে ১২টার দিকে আমি ডাক চিৎকার শুনে ঘর থেকে বেরিয়ে দেখি ঘরের একটি কক্ষের পশ্চিম পাশ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। সবাই আসতে আসতে এই সময়ে পুরো ঘরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে প্রায় সবই যেন কয়লায় পরিণত হয়ে গেছে। তবে যে জায়গা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে সেখানে বিদ্যুতের সংযোগ কিংবা গ্যাস সিলিন্ডার কিছুই ছিলো না। এতে বুঝা যায় ষড়যন্ত্র করেই এ অগ্নিকান্ড ঘটিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটি যেকোন সহযোগিতা পেতে আমি প্রশানের সহযোগিতা কামনা করছি।
৯নং ওয়ার্ড আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ তাজুল ইসলাম পাঠান বলেন, আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে যা দেখেছি তা এই ব্যক্তির জন্য বড় একটি দুর্ঘটনা। চট্টগ্রামে ছোট একটি চাকরি করে স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে কোনরকমভাবে জীবনযাপন করে আসছে। এ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তার জন্য অনেক সময় লেগে যাবে। জনবান্ধব আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অসংখ্য ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার সহযোগিতা পেয়ে উপকৃত হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় ভুক্তভোগী ফারুক ঢালীও সরকারী কোন সহযোগীতা পেলে কিছুটা সস্তি ফিরে আসবে বলে আমি আশা করি। এদিকে প্রতিবেশীরা জানান, ২০১৩ সালে ফারুক হোসেন ঢালীর পিতা মৃত সাদেকুর রহমান ঢালী বাদী হয়ে তারই আরেক ভাই মোঃ সিরাজুল ইসলাম ঢালীর বিরুদ্ধে পুড়ে যাওয়া বসত ঘরের আড়াই শতাংশ ভিটা নিয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। যা এখনো চলমান রয়েছে। অনেকে ধারনা করছেন তারাই হয়তো এ ঘটনা ঘটিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার জানিয়েছেন, উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরির প্রস্তুতি চলছে।
খবর পেয়ে বুধবার সকালে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন শাহমাহমুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান স্বপন মাহমুদ, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আখতারুজ্জামান পাটওয়ারী, সাধারণ সম্পাদক মোঃ কামাল হাজী, ৯নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন খোকা, ৭নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মোক্তার হোসেন মিজি, সমাজসেবক কবির হোসেন রনিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।

শেয়ার করুন

Leave a Reply