ঈদ এলো ঘরে ঘরে
উৎসব নয়, প্রার্থণাময় অন্যরকম ঈদের সাক্ষি হতে যাচ্ছে দুনিয়া
: আশিক বিন রহিম :
পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেলে সোমবার অনুষ্ঠিত হবে পবিত্র ঈদুল ফিতর। মুসলিমদের জন্যে এটি সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। ঈদের দিনটি ধনী-গরিব, আশরাফ-আতরাফ নির্বিশেষে সবাইকে এক কাতারে দাঁড় করায়। এদিক থেকে ঈদ কেবল আনন্দের বার্তাই নিয়ে আসে না, উদ্ভাসিত হয় ইসলামের সাম্যের এক বড় পরিচয়। অথচ এবারই প্রথম ভিন্নরকম ঈদ উদ্যাপনের সাক্ষি হতে যাচ্ছে পুরো মুসলিম বিশ্ব। যার কারণ বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাস নামের অদৃশ্য অসুখ। যা ইতিমধ্যে সমগ্র পৃথিবীকে ধমকে দিয়েছে। ঘরবন্ধি করে রাখছে মানুষদের। এতে করে মানুষের মাঝেও নেই তেমন কোনো ঈদ প্রস্তুতি বা ঈদের আমেজ। মানুষ এখন মরণব্যধি এই মহামারী থেকে বাঁচার কৌশল নিয়েই ব্যস্ত।
বাংলাদেশে ঈদে সাধারণত মানুষ ঘরমুখো হয়। দেশের মহাসড়কগুলোতে নামে মানুষের ঢল। ঢাকাসহ বড় শহরগুলো থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষ গ্রামে ছুটে যান এবং আত্মীয়স্বজনের সাথে সময়টা কাটান। ঈদের আনন্দ ভাগ করে নেন, একে অন্যের সাথে।যুগ যুগ ধরে এই সংস্কৃতি চলে আসছে। কিন্তু এবার তাতে আঘাত হেনেছে করোনাভাইরাস মহামারি। তাই উৎসব নয়, প্রার্থনাময় ঈদ যাপনের প্রস্তুত হচ্ছে সমগ্র মুসলিম দুনিয়া।
এদিকে করোনার প্রর্দূর্ভাব ঠেকাতে দেরীতে হলে কঠোর হয়েছে সরকার। গেল আড়াই মাস ধরে সারা দেশে চলছে লগডাউন। দোকানপাট বন্ধ ছাড়াও মানুষের অপ্রয়োজনে ঘর থেকে বের হতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ঈদ নিয়েও বারতি শতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। পাশাপাশি ঈদের সময় মানুষের যানবাহন চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করার কথাও সরকার তুলে ধরছে।
গত ১৬ই মে পর্যন্ত যে সাধারণ ছুটি ছিলো। তার মেয়াদ ঈদের পরে ৩০ শে মে পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। একইসাথে ঈদের আগে এবং পরে সাত দিন সারাদেশে সড়ক এবং নৌপথে যাত্রীবাহী সব ধরণের যানবাহন চলাচলের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা থাকছে। ঈদের সময় ব্যক্তিগত যানবাহনও কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করার কথা বলা হয়েছে।
এদিকে এবারে ঈদের জামায়াতগুলো সিমিত পরিসরে মসজিদে করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। মুসল্লি বেশি হলে প্রয়োজনে কয়েক ভাগে জামায়াত করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন যে, ৩০শে মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি বর্ধিত হবে। এবং ঈদ চলাকালীন সময়ে বিশেষ করে ঈদের আগের চারদিন এবং ঈদের পর দুই নিয়ে মোট সাত দিন কাভার্ডভ্যান বা পণ্যবাহী যান এবং জরুরি সেবা ছাড়া মানুষ চলাচলের সব যাবাহন ওপর কঠোরতা অবলম্বন করা হবে।যে যেখানে আছে, সেখানে থেকেই ঈদ উদযাপন করবে।”
অপরদিকে, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে পৃথক বাণীতে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এসব বাণীতে তাঁরা শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি দেশবাসীর মঙ্গল কামনা করেছেন।