কচুয়ায় মিশু হত্যা : সজিব-নুরার স্বীকারোক্তি, হত্যার কারণ অস্পষ্ট

মানিক ভৌমিক :
কচুয়ায় নবম শ্রেণির স্কুলছাত্রী জান্নাতুল নাঈম মিশু হত্যায় মোঃ সজিব হোসেন (১৯) ও নুর আলম নুরা (২৫) ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। আসামীদ্বয় স্বীকার করে জান্নাতুল নাঈম মিশুকে শ্বাস রোধ করে হত্যা করেছে এবং লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে বিলের মধ্যে হেলেঞ্চা ঘাসের নিচে ডুবিয়ে রাখে। তবে সাংবাদিকদের সাথে প্রেস ব্রিফিং-এ কচুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ ওয়ালি উল্ল্যাহ হত্যার কারণ উল্লেখ করেননি। তিনি বলেছেন, এটা পরিকল্পিত হত্যাকান্ড, অধিকতর তদন্তের স্বার্থে কারণ এখনই উল্লেখ করা যাবে না।
আসামী মোঃ সজিব হোসেন, ফরিদগঞ্জ থানার, গাব্দেরগাঁও (ঢালী বাড়ির) আমির হোসেনের ছেলে। সজিব তার নানার বাড়ি হায়াৎপুরে (নতুন বাড়ি) পালিত পিতা মোঃ সেলিমের নিকট থাকতো। অপর আসামী নুর আলম নুরা বড় হায়াৎপুর (নতুন বাড়ি)’র মনির হোসেনের ছেলে।
মেয়েকে হারিয়ে মিশু হত্যা মামলার বাদী মিশুর মা সারাক্ষণ বিলাপ করছেন। আসামীদের শাস্তি দাবী করেছেন।
এলাকার জনপ্রতিনিধি ওয়ার্ড মেম্বার মানিক হোসেন বলেন, আসামী নুর আলমের পরিবারের প্রায় সকল সদস্যই বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত। নুর আলমের ছোট ভাই রাসেল একটি শিশু ধর্ষন মামলায় বর্তমানে জামিনে আছে। নুর আলমের বোন মরিয়ম কয়েক বছর পূর্বে একটি সাজানো ধর্ষনকান্ড সংঘটিত করে অনেক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এছাড়া গরু চুরির অপরাধে এ পরিবারের বিরুদ্ধে শালিস হয়েছে। বর্তমানে গ্রামবাসী নুর আলমের পরিবারের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে আছে এবং গ্রামবাসী এ পরিবারকে এলাকা থেকে উচ্ছেদের দাবী করছে।
মিশু হত্যার বিষয়ে মানিক মেম্বার বলেন, আসামীরা মিশুকে ধর্ষন অথবা ধর্ষনের চেষ্টা করেছে। আসামীদের চিনে ফেলায় তাকে হত্যা ও গুম করার চেষ্টা করেছে বলে আমি মনে করি। আমি হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ সাজা ফাঁসির দাবি করছি।
এদিকে আজ কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপায়ন দাস শুভ ঘনাস্থল পরিদর্শন করেন।
প্রসঙ্গত, কচুয়া উপজেলার বড়-হায়াতপুর গ্রামের অধিবাসী ও প্রবাসী আবু হানিফের মেয়ে ও সাদিপুরা চাঁদপুর এম.এ খালেক স্কুল এন্ড কলেজের নবম শ্রেনীর মেধাবী ছাত্রী জান্নাতুল নাঈম মিশু গত শুক্রবার ঈদের আগের দিন দুপুরে বাড়ির পাশে বিলে ঘাস কাটতে গিয়ে নিখোঁজ হয় । ঈদের পরের দিন শনিবার পাশ^বর্তী বিলের খালে তার গলিত লাশ দেখতে পায় এলাকাবাসী। পরে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দিলে তার লাশ উদ্ধার করে চাঁদপুর মর্গে প্রেরণ করে কচুয়া থানা পুলিশ। ওই ঘটনা তার মা ফাতেমা আক্তার সেফালী বাদী হয়ে কচুয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করে।
পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে সোমবার রাতে দুই আসামীকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply