চাঁদপুরে ২ মাসে ৭৫ জেলের জেল-জরিমানা, ২৯৪ লক্ষ মিটার জাল জব্দ : পদ্মা-মেঘনায় মাছ ধরা শুরু

ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী :
ইলিশের পোনা জাটকা সংরক্ষণে দুই মাসের সরকারি নিষেধাজ্ঞাশেষে গত মধ্যরাত থেকে পদ্মা-মেঘনাসহ নদীতে শুরু হয়েছে মাছ ধরা। নিষিদ্ধ সময়ে জেলেরা তাদের জাল-নৌকা মেরামতের কাজ সেরে নিয়েছেন। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় নিষিদ্ধ সময়ে এবার নদীতে জাটকা নিধন হয়েছে ব্যাপকহারে। প্রশাসন করোনাভাইস সংক্রমণরোধে ব্যস্ত থাকায় অন্যান্য বছরের মতো নদীতে কঠোর অভিযান চালানো হয়নি। নিধনকৃত জাটকা পাচার ও বিক্রি হয়েছে হয়েছে পাশ্ববর্তী জেলাসহ স্থানীয় গ্রাম-গঞ্জে।
জেলা মৎস্য অফিস জানিয়েছে, জেলা প্রশাসন, জেলা মৎস্য অফিস, নৌ বাহিনী, পুলিশ, নৌ পুলিশ, কোস্টগার্ড সমন্বয়ে গঠিত টাস্কফোর্স গত দুই মাসে ৪৮৮টি অভিযানে ৭৫ জন জেলেকে কারাদÐ ও অর্থদÐ করা হয়েছে। জাল জব্দ হয়েছে ২৯৪ লক্ষ মিটার, জাটকা জব্দ করা হয়েছে ১৬ মেট্রিক টন। জরিমানা করা হয়েছে ২ লাখ ১৬ হাজার টাকা। মামলা হয়েছে ৬২টি।
চাঁদপুর সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুদীপ ভট্টাচার্য বলেন, করোনার কারণে প্রশাসন ব্যস্ত থাকায় এবার অভিযানে কিছুট সমস্যা হয়েছে এটি ঠিক। তবে আশা করি, ইলিশের উৎপাদন আগামীতে আরও বাড়বে।
চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক শবে বরাত জানান, এবার অভিযান ছিলো ঢিলেঢালা। করোনার সুযোগ নিয়ে অসাধু জেলেরা জাটকা নিধন করেছে বিগত বছরগুলোর তুলনায় অনেক বেশি। এসব জাটকা মুন্সিগঞ্জ মাওয়া হয়ে, মতলব নারায়ণগঞ্জ হয়ে অন্য জেলাগুলোতে বিক্রির জন্য পাচার হয়েছে। তিনি শংকিত সামনের বছর কাক্সিক্ষত ইলিশ উৎপাদন নিয়ে।
চাঁদপুর নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জাহিদুল ইসলাম জানান, আমরা জাটকা নিধনরোধ এবং করোনায় অন্যান্য যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার জন্য ৩টি বড় লঞ্চ নদীতে নামিয়েছি। কিন্তু এই সুবিশাল নদী অঞ্চলে জাটকা নিধনরোধে এতো বড় নৌযানে কাজ হয় না, লাগে ছোট ¯িপ্রডবোট। কিন্তু ওই বোট আছে মাত্র একটি।
এদিকে শবেবারত জানান, ইলিশের সবচাইতে বড় আড়ৎ চাঁদপুর বড়ষ্টেশন মাছঘাটের ২শ ১২ জন আড়ৎদারসহ এ অঞ্চলের নদী তীরবর্তী অন্যান্য আড়তগুলোর মাছ ব্যবসায়ীরা তাদের গদিঘরে ইলিশ ও এ দু’ বড় নদীর অন্যান্য মাছ বিকিকিনির প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। তবে শ্রমিকরা মাছঘাটে কাজে কতটুকু আসে সেটিই দেখার বিষয়।

চাঁদপুর জেলা মৎস কর্মকর্তা আসাদুল বাকি বলেন, আমরা টাস্কফোর্সের অভিযানে বিপুল পরিমাণ জাল নদী ও আশ পাশ থেকে উদ্ধার করে পুড়িয়ে ধ্বংস করেছি। ৭৫ জন জেলেকে জেল-জরিমানা করা হয়েছে দেয়া হয়েছে। তাদেরকে এ সময়ে সরকারিভাবে ৪০ কেজি করে চাল সহায়তাসহ বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য বিভিন্ন উপকরণ দেয়া হয়েছে। তারপরও কোথাও কোথাও কিছু অসাধু জেলে রাতের আধারে মাছ ধরেছে। তিনি বলেন, যদি ১০/২০ ভাগ জাটকাও জেলেরা ধরে থাকে তাহলেও ইলিশের অভাব হবে না। নদীতে এখনো প্রচুর ইলিশ পোনা বিচরণ করছে, যেগুলো আগামী এক বছরে পরিপক্ক ইলিশরূপে ধরা দেবে জেলেদের জালে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply