চাঁদপুরে ৫ দফা দাবিতে অর্থমন্ত্রী বরাবর ছাত্র ফ্রন্ট-এর স্মারকলিপি

প্রেস বিজ্ঞপ্তি :
মঙ্গলবার (১২মে ) সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট চাঁদপুর জেলা শাখার আহ্বায়ক রহিমা আক্তার কলির নেতৃত্বে জেলা প্রশাসক এর মাধ্যমে অর্থমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ করে। সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়, করোনা সংক্রমনের কারনে বিপর্যস্ত জনজীবন।এই সংকট কাটিয়ে উঠতে সারাদেশের কৃষি-স্বাস্থ্য-শিক্ষা সকল খাতেই বিশেষ আর্থিক বরাদ্দ প্রয়োজন। আগামী মাসেই ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের জাতীয় বাজেট প্রণয়ন করা হবে। বরাবরই অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে শিক্ষাখাতকে অবহেলা করা হয়। একটি দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে ও দেশকে এগিয়ে নিতে শিক্ষাখাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া আবশ্যক।
ইউনিসেফ এর প্রস্তাবনায় একটি দেশের জাতীয় আয়ের শতকরা ৮ ভাগ অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু প্রতি বছরেই শিক্ষাখাতের পর্যাপ্ত বরাদ্দকে উপেক্ষা করা হয়েছে। ফলস্রুতিতে সারাদেশের প্রাথমিক স্তর থেকে শুরু করে সকল উচ্চ শিক্ষা স্তর পর্যন্ত সুষ্ঠু পরিবেশ মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। ছাত্র ফ্রন্ট এর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, বাজেটের স্বল্পতার কারণে শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ ক্রমাগত সম্প্রসারিত হচ্ছে।
বেসরকারি স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় গুলো চলছে ভয়াবহ শিক্ষাব্যবসা। অধিকাংশ কৃষক-শ্রমিকের এ দেশে তাই শিক্ষার অধিকার ক্রমাগত সংকুচিত হচ্ছে। বর্তমানে আর্থিক সামর্থ্যের মাপকাঠিতে শিক্ষালাভের সুযোগ মিলছে। শিক্ষাক্ষেত্রের এই বিপুল অর্থব্যয় নির্বাহ করতে না পেরে লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী ছিটকে পড়ছে উচ্চ শিক্ষার দোরগোড়া থেকে। গত ১০ বছরে শিক্ষার ব্যয় এতো বেড়েছে যে প্রাথমিক স্তর শেষ করে মাধ্যমিক স্তরেই লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী ঝরে পড়ছে।
সারাদেশে উচ্চ শিক্ষালাভের সুযোগ সংকুচিত করা হয়েছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সংকট ক্রমাগত ঘনীভূত হচ্ছে। গত কয়েক বছরে দফায় দফায় শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে ফেটে পড়লেও সংকট নিরসনে পর্যাপ্ত বরাদ্দের কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এসমস্ত সংকটের মধ্যে দিয়ে চলছিল আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা। এর সাথে সংকট সৃষ্টি করছে করোনা।
এ বছরে করোনা সংক্রমনের কারনে লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন হুমকীর মুখে পড়েছে। অর্থনৈতিক সংকটের এ সময়ে অসংখ্য পরিবারে যখন বেঁচে থাকাই কঠিন তখন শিক্ষাব্যয় নির্বাহ একটি বাড়তি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়, চাঁদপুরের কলেজগুলোতে পর্যাপ্ত হল-হোস্টেল ও কলেজ বাস ( শুধু মাত্র চাঁদপুর সরকারি কলেজে ১টি বাস আছে) না থাকায় ৮০ ভাগ শিক্ষার্থীকে মেসভাড়া করে থাকতে হয়৷ শহরের মেসগুলোেতে অবস্থানকারী শিক্ষার্থীরা বেশিরভাগই টিউশনি করে চলতো, অনেকে পরিবারেও কিছুটা সহযোগিতা করতো। লক ডাউনে দুই মাস টিউশনি নেই। শিক্ষার্থীরা মেসে না থাকলেও মেস মালিকরা দু মাসের বকেয়া ভাড়া আদায়ের চেষ্টা করছে। অনেক মেসমালিক আবার এই মেসভাড়ার ওপর নির্ভরশীল। এই সংকট নিরসনে এই সংকটগ্রস্থ মেসের শিক্ষার্থীদেরকে মেসের ভাড়া পরিশোধের জন্য বিশেষ আর্থিক বরাদ্দ প্রয়োজন। একই সাথে এ বছরের সকল প্রকার বেতন-ফি ও সেমিস্টার ফি বাতিল করা প্রয়োজন।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট চাঁদপুর জেলা শাখার পক্ষ থেকে অর্থমন্ত্রী বরাবর উত্থাপিত দাবিসমূহ:
* জাতীয় বাজেটের ২৫ ভাগ শিক্ষা খাতে বরাদ্দ দাও।
*শিক্ষার্থীদের মেস ভাড়া পরিশোধে প্রজ্ঞাপন জারি কর। বিশেষ বরাদ্দ দাও।
* সকল সরকারি-বেসরকারি স্কুল -কলেজ- বিশ্ববিদ্যালয়ের এ বছরের বেতন ফি বাতিল কর। অনলাইন ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ কর।
* অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের তালিকা তৈরি করে আর্থিক সহযোগিতা কর।
* গবেষণা খাতে বরাদ্দ বাড়াও।

শেয়ার করুন

Leave a Reply