প্রধানমন্ত্রী সার্বক্ষণিক দেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মনিটরিং করছেন : সচিব মোঃ মোহসীন

এইচ. এম নিজাম :
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মহসীন শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন যিনি এই করোনা মহামারী কালে এদেশকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশ্বের আর কোন দেশের প্রধানমন্ত্রী এমন আছেন কিনা আমার জানা নাই, যিনি সার্বক্ষণিক এই দুর্যোগের ব্যবস্থাপনার জন্যে মনিটরিং করে যাচ্ছেন এবং ৬৪ টি জেলার সাথে তিনি সারাক্ষণ কথা বলেন, ভিডিও কনফারেন্স করেন ,তৃণমূল থেকে শুরু করে সব জনপ্রতিনিধিদের সাথে কথা বলেন। সত্যিকার অর্থে এমন প্রধানমন্ত্রী অন্য কোথাও নেই। আমরা অনেক সৌভাগ্যবান জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পেয়ে । বিভিন্ন কারণে চাঁদপুর একটি সুপরিচিতি জেলা । এ জেলার অনেকেই জেলার বাহিরে গিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য বা কাজ করে অনেক সুনাম অর্জন করেছেন।

গতকাল শুক্রবার চাঁদপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে জেলার কোভিড – ১৯ স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনায় কাজ তত্ত্বাবধান ও পরিবীক্ষণ এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পরিবীক্ষণ ও সমন্বয় বিষয়ে জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তাহনের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সচিব বলেন, এই চাঁদপুর জেলাকে সরকার অনেক গুরুত্ব সহকারে দেখেন। তার মধ্যে চাঁদপুর শহর রক্ষা বাঁধের জন্য সরকার বারবার নতুন নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। আজ আপনারা করোনা দিয়ে শুরু করতে পারেন। আজকে এই অনুষ্ঠানে প্রজেক্টরের মাধ্যমে করোনা দিয়ে ব্যবস্থাপনার যেসব কর্মসূচি দেখানো হয়েছে তার পূর্বেই এই চাঁদপুর জেলা কে অন্য জেলার মানুষদেরকে অনুসরণ করতে বলা হয়েছিল।

সচিব আরও বলেন, আমি সকালে আসার পর জেলা প্রশাসকের কাজ থেকে শুনলাম যে এ জেলার অনেকে স্বেচ্ছায় করোনা প্রতিরোধে জেলা প্রশাসনের সাথে ভলান্টিয়ার হিসেবে কাজ করছেন । এটার জন্যে আপনার অবশ্যই ধন্যবাদ প্রাপ্য ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
সচিব মোঃ মোহসীন বলেন, এ মতবিনিময় সভায় এসে চাঁদপুর সম্পর্কে আমি যে ধারণা পেলাম তাতে আমি খুবই আনন্দিত হলাম। এখন বুঝলাম চাঁদপুরকে প্রথম জেলা হিসেবে পরিদর্শন করার জন্যে বেছে নেয়াটা আমার যথাযথই ছিলো। তিনি বলেন, আমার পূর্বের সচিব মহোদয় চাঁদপুরকে যেভাবে দেখেছেন, আমার ক্ষেত্রেও কোনো অংশে কম হবে না। আপনারা যেভাবে কাজ করছেন, জেনে খুব খুশি হলাম। চাঁদপুর সবদিক থেকেই এগিয়ে থাকবে। ডব্লিউএইচও’র তথ্য মতে, এই করোনা মহামারী অনেকদিন যাবত থাকবে। তাই এর সাথে মানিয়ে নিয়ে সকল ধরনের সঙ্কট থেকে আমাদের বেঁচে থাকতে হবে, সঙ্কটকে মোকাবেলা করতে হবে। শাসন দিয়ে নয়, সহযোগিতা এবং সহমর্মিতা দিয়ে আমাদের এসব মোকাবেলা করতে হবে। তিনি চাঁদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনির প্রসঙ্গে বলেন, তাঁর সাথে আমার গত রাতে কথা হয়েছে। তিনি অত্যন্ত মেধাবী একজন মানুষ। তাঁর সাথে কথা বলতে গিয়ে জানলাম তিনি এখন প্রতি রাতে চার ঘণ্টা অনলাইনে কোভিড-১৯ বিষয়ে পড়াশোনা করেন, ট্রেনিং নেন। তাঁকে আল্লাহ এমনিতেই উপরে উঠান নি। মেধা, যোগ্যতা আছে বলেই আজ তাঁর দেশে-বিদেশে এই অবস্থান।
সচিব মোহসীন চাঁদপুরের সকল সেক্টরের প্রতিনিধিদের নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানান। এতে এ জেলারই সুফল ও সুনাম বয়ে আনবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি অন্য জেলা থেকে বদলি হয়ে আসা সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা অত্যন্ত সৌভাগ্যবান যে আপনারা সরকারি চাকরি করেন। আপনারা ভেবে দেখুন প্রধানমন্ত্রী আপনাদের বেতন কতটুকু বাড়িয়ে দিয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধারা এদেশকে স্বাধীন করেছিলেন বলেই আজকে আমরা এই জায়গাতে বসতে পারছি। তখন তাঁরা যুদ্ধ করেছিলেন এ দেশকে স্বাধীন করার জন্য আর এখন আমরা এই করোনার জন্য যুদ্ধ করতে হবে । নিজের দায়িত্ব নিজে না বুঝলে কেউ আপনাকে জোর করে বুজাতে পারবে না । নিজের দায়িত্বকে নিজেই বুঝতে হবে।
মতবিনিময় সভায় সভাপত্বি করেন চাঁদপুর জেলা প্রশাসক (ভিসি) মোঃ মাজেদুর রহমান খান।
সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কানিজ ফাতেমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ আইনুল কবির, ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান ,জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ওসমান গনি পাটোয়ারী , মতলব উত্তরের চেয়ারম্যান এম এ কুদ্দুস , সিভিল সার্জন ডাঃ সাখাওয়াত উল্লাহ, প্রেসক্লাবের সহসভাপতি গিয়াস উদ্দিন মিলন, সাধারণ সম্পাদক এএইচএম আহসান উল্লাহ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান।
মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। মতবিনিময় সভার পূর্বে সকাল সাড়ে ৯ টায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মোহসীন চাঁদপুর সার্কিট হাউসে এসে উপস্থিত হলে জেলা প্রশাসক ফুল দিয়ে বরণ করেন। পরে সচিব ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর সদর হাসপাতালে অক্সিজেন প্যান্ট তৈরীর কাজ পরিদর্শন করেন এবং হাসপাতালের সেবক সেবিকাদেরও তাদের কাজের ও নিজের খবরা -খবর নেন ।

শেয়ার করুন

Leave a Reply