হাইমচরে ছোট ভাইকে হত্যা করতে ৩ জনকে ভাড়া করে বড় ভাই

হাসান আল মামুন :
হাইমচরে মিস্টার হত্যা মামলার দুই আসামীকে আটক করা হয়েছে। হাইমচর উপজেলার আলগী দক্ষিণ ইউনিয়নের চরপোড়ামুখী গ্রামে আল আমিন (১৬) ও রবিন (১৬) নামক দুই আসামীকে আটক করেছে হাইমচর থানা পুলিশ। আটককৃত আসামীদের তথ্য মতে বড় ভাই আকতারের কথায় ছোট ভাই মিষ্টারকে হত্যা করা হয়। বড় ভাই আকতার তার ছোট ভাই মিস্টারকে হত্যা করতে ৩ জনকে ৬ লাখ টাকায় ভাড়া করে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। এদিকে মিস্টারের হত্যার বিষয়টি নিয়ে এলাকার লোকজনের মাঝে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। দুই ভাইয়ের মধ্যে মধুর সম্পর্ক থাকা সত্তে¡ও আসামীদের তথ্য অনুযায়ী ছোট ভাইয়ের খুনি বড় ভাই। এ নিয়ে এলাকায় রয়েছে আলোচনা ও সমালোচনার ঝড়।
গত ২২ এপ্রিল বিকেল ৫টায় চরপোড়ামুখী বাদশা রাঢ়ী সুপারী বাগানে মিস্টার রাঢ়ীকে হত্যা করা হয়। ২৩ এপ্রিল সকালে মিষ্টারের লাশ এলাকাবাসী দেখতে পায়। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে হত্যায় ব্যবহৃত রুমাল, লাঠি উদ্ধার করে। ২৩ এপ্রিল মিস্টারের পিতা হাসিম রাঢ়ী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামী উলে­খ করে মামলা দায়ের করে। মামলা নং-৬ তারিখ ২৩ এপ্রিল ২০২০।
২৬ এপ্রিল রোববার আল-আমিন (১৬) ও তার জেঠাত ভাগিনা রবিন কাজী (১৬)কে আটক করে হাইমচর থানা পুলিশ। তাদের উভয়ের বাড়ি চরপোড়ামুখী গ্রামে।
হাইমচর থানার অফিসার ইনচার্জ জহিরুল ইসলাম জানান, মিস্টার হত্যায় আটক আলামিনের তথ্যমতে মিস্টারকে হত্যা করলে তার ভাই আকতার রাঢ়ী আল-আমিন, রবিন ও পলাতক (নাম প্রকাশ করা হলো না) একজনসহ মোট ৩ জনকে মোট ৬ লাখ টাকা দিবে। টাকার লোভেই তারা মিস্টারকে হত্যা করে।
মিস্টার হত্যা মামলায় আটক আল-আমিন ও রবিনকে সোমবার চাঁদপুর কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে। পলাতক রুমালওয়ালা এবং মিস্টারের ভাই আকতারকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
নিহত মিষ্টারের বাবা এ প্রতিনিধিকে জানান, আমার দুই ছেলের মধ্যে ছিল মধুর সম্পর্ক। দুই ভাই এক সাথে কাজে যেত ও একসাথে কাজ থেকে ফিরতো। কখনো তাদের মধ্যে ঝগড়া বা কথা কাটাকাটি করতে আমি দেখিনি। আমার ছেলেদের কোন শত্র“ও ছিলনা।
আপনার বড় ছেলে ছোট ছেলেকে হত্যা করেছে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, একমাত্র আল­াহ ছাড়া কেউ বলতে পারবে না কে হত্যা করেছে আমার ছেলেকে। আমার ছেলেকে মারার পরের দিন ঘটনাস্থলের পার্শ্ববর্তী সেলিনা নামক মহিলা বলেছিলেন রাতে তিনি আমার ছেলের চিৎকার শুনেছে সে ওয়াসীমকে বাগানে পাঠিয়েছেন।
এ ব্যাপারে প্রত্যক্ষদর্শী সেলিনা বেগম জানান, সেদিন রাতে আমি মিস্টারের চিৎকার শুনে বাহিরে নেমে ওয়াসীমকে দেখি বাহিরে দাড়িয়ে আছে। ওয়াসীমকে বললে সে লাইট নিয়ে বাগানে যায়। সেখান থেকে এসে বলেছে কে বা কারা যেন মারামারি করতেছে।
এ ব্যাপারে ওয়াসীমের কাছে জানতে চাইলে সে বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, আমি কিছু জানি না। আমি কাজ করে খাই, আমাকে এসবের মধ্যে জড়াবেন না।
এলাকাবাসীর সাথে আলাপকালে তারা জানায়, মিস্টার ও আকতার দুই ভাই ছিলেন শান্তশিষ্ট। তারা দুজনই সবসময় কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন। তারা এলাকার কোন লোকজনের সাথে তেমন মেলামেশা করতেন না। মিস্টারকে কে হত্যা করেছে সে বিষয়টি ওয়াসীম দেখেছে। সে এখন বিষয়টি লুকিয়ে যাচ্ছে। যে দুজন আসামী আটক হয়েছে তারা ওয়াসীমের মামাতো ভাই। প্রকৃত অপরাধীকে খুঁজে বের করার জন্য সঠিক তদন্ত চায় এলাকাবাসী।

শেয়ার করুন

Leave a Reply