হাজীগঞ্জের শিশু আরাফ খুনের ঘটনায় চট্টগ্রামে বাসার দারোয়ানসহ আটক ২

শাখাওয়াত হোসেন শামীম :
শিশু আরাফ বাড়ির দারোয়ানের ঋণের বলি হয়ে খুন হন। পুলিশের কাছে দেয়া জবানবন্দি থেকে বেরিয়ে এসেছে দুই বছরের শিশু আরাফ হত্যার রহস্য। জানা গেছে, চট্রগাম মহানগরের ১৯ নং ওয়ার্ড ম্যাচফ্যাক্টুরি এলাকার সৈয়দ মুনছুর আলী সড়কের নুরুল আমিনের বাসার দারোয়ান হাছান প্রায় ১৫ লাখ টাকা ঋণের বোঝা নিয়ে আছে। পাশ্ববর্তী ফরিদ নামের একজনকে পরামর্শে হাছান ও তার মা শিশু আরাফ কে হত্যা করে। তাদের উদ্দেশ্য শিশু আরাফকে খুন করলে বাড়ীর মালিক নুরুল আমিনের কিছু খরচা হবে। আর ওই খরচা হাছানের হাতের উপর দিয়ে হলে কিছুটা লাভবান হবে। সেই টাকায় হাছানের পরিবারের ঋণ পরিশোধ হবে। হাছান ও তার মা গ্রেফতারের পর এখন সবই এলোমেলো।


জানা গেছে, ওই ভবনের মালিক নুরুল আলম আসন্ন কাউন্সিলর নির্বাচনে আওয়ামীলীগ থেকে পদপ্রার্থী। তার ভাই একই ওয়ার্ডে বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর। এই দুই ভাইয়ের হত্যার বলি হয়েছে কিনা সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গত রোববার বিকালে নিখোঁজের তিন ঘন্টা পর ভবনের ছাদের ট্যাংকিতে শিশু আরাফের মৃতদেহ পাওয়া যায়। সোমবার হাজীগঞ্জ উপজেলার গর্ন্ধব্যপুর ইউনিয়নের তারালিয়া গ্রামে দাফন করা হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে আটককৃতদের চট্টগ্রাম ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে জবানবন্দী নেয়া হয় বলে জানান বকলিয়া থানা অফিসার ইনচার্জ নেজাম উদ্দিন।
আটককৃতরা হলেন, চট্রগাম মহানগরের ১৯ নং ওয়ার্ড ম্যাচফ্যাক্টুরি এলাকার সৈয়দ মুনছুর আলী সড়কের নুরুল আমিনের ৭ তলা বাড়ির দারোয়ান হাছান ও তার মা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে শিশু আরাফের বাবা আবদুল কাইয়ুম বলেন, বাড়ীর দারোয়ান ও তার মা ওই ভবনের সাত তলা বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতো।
শিশুর মা বলেন, নিখোঁজের সময় হাছান বাড়ীর গেইটে ছিল। এবং তার মা বোরকা পরা অবস্থায় ছিল। তখনই আমাদের সন্দেহ হয়েছে। পুলিশ প্রশাসন আমার আরাফের হত্যাকারীদের গ্রেফতার করেছে।
মঙ্গলবার সকালে শিশু আরাফের বাড়ী হাজীগঞ্জ উপজেলার ৯নং গন্ধর্ব্যপুর ইউনিয়নের তারালিয়া গ্রামের মিজি বাড়ীতে গিয়ে দেখে গেছে কান্নার বিলাপ। শিশু আরাফের মা-বাবা, নানা, দাদা, ফফু ও খালাসহ স্বজনরা হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানান।
এ বিষয়ে চট্রগামে মহানগরের বাকুলিয়া থানায় শিশু আরাফের বাবা আবদুল কাইয়ুম একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করছেন চট্রগাম মহানগর বাকুলিয়া থানার উপ- পরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা মো. আমির হোসেন। আবুদল কাইয়ুম একটি ওষুধ কোম্পানির সিনিয়র কর্মকর্তা হিসেবে চাকুরি করেন। গত ডিসেম্বর মাসে নুরুল আমিনের এই বাসার নিচতলায় ভাড়া উঠেন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply