ঈদের ছুটিতে বাড়ি ফেরা
ঈদ উল আজহার শুভেচ্ছা।
কুরবানী মুসলমানদের জন্য একটি ধর্মীয় ইবাদত। যিলহজ্জ মাসের ১০ থেকে ১২ তারিখের মধ্যে এই ইবাদত পালন করতে হয়।
ঈদ উল আজহা আল্লাহর জন্য আত্মত্যাগের একটি দৃষ্টান্ত মাত্র। সারা বছরই আল্লাহর নৈকট্য লাভের প্রত্যাশায় নিজ সম্পদ অন্য মানুষের কল্যাণে ত্যাগ করতে হবে। এই ত্যাগের মনোভাব যদি গড়ে ওঠে। তবে বুঝতে হবে, কুরবানীর ঈদ স্বার্থক হয়েছে, কুরবানী স্বার্থক হয়েছে।
ঈদ উল আজহা সমাগত। আমাদের উপর যে কুরবানীর নিয়ম নির্ধারিত হয়েছে, তা মূলতঃ ইবরাহীম (আঃ) কর্তৃক শিশু পুত্র ইসমাঈল (আঃ)-কে আল্লাহর রাহে কুরবানী দেওয়ার অনুসরণে ‘সুন্নাতে ইবরাহীমী’ হিসাবে চালু হয়েছে। মক্কা নগরীর ‘মিনা’ প্রান্তরে আল্লাহর দুই আত্মনিবেদিত বান্দা ইবরাহীম(আঃ) ও ইসমাঈল(আঃ) আল্লাহর কাছে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের মাধ্যমে তুলনাহীন ত্যাগের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন। ‘ঈদুল আযহা’ বা কুরবানীর ঈদ তারই স্মৃতিচারণ হিসেবে আল্লাহ পাক আমাদের মাঝে রেখেছেন ।
ঈদের ছুটিতে বাড়িতে যাওয়া বাবা মা আত্মীয় স্বজনের সাথে ঈদ উদজাপন করা কতইনা আনন্দের। ঈদ উল আজহা গরু বা বকরি কেনা আমাদের আগ্রহ ও উচ্ছাস দেখার মতো। আবার অনেকে ঈদ দেশের বাহিরে অবস্থানকারী স্বজনের সাথে করেন।
ভ্রমনে পূর্বে অবশ্যই সুন্দর একটা পরিকল্পনা থাকা চাই। প্রয়োজনীয় ঔষধ সাথে নিতে হবে। ভ্রমণের সময় আরামদায়ক ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান করা উত্তম।
যারা দীর্ঘমেয়াদি রোগে ভোগেন, যেমন—ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি বা লিভারের রোগী, হার্টের বা বাত ব্যথার রোগী, এমনকি যাদের হাঁপানি বা শ্বাসজনিত রোগ আছে, তারা তাদের প্রয়োজনীয় ওষুধ নিতে ভুলবেন না। সঙ্গে নেওয়া যেতে পারে মশা নিরোধক ওডোমোস। সঙ্গে বাচ্চা থাকলে তাদের স্বাস্থ্যের দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে।
ঈদের এ সময়টি গরম আবহওয়া যদিও বৃষ্টি আনেকটা স্বস্তি নিয়ে এসেছে। আবার ডেঙ্গু, করোনা ও সিজনাল ফ্লু ও হচ্ছে।
জ্বর-ঠাণ্ডা, মাথাব্যথা ইত্যাদি সমস্যা হওয়াটা স্বাভাবিক। এছাড়া বমি, পেট খারাপও হতে পারে। জ্বর ঠান্ডা, বমি ও পাতলা পায়খানার ওষুধ এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুসারে অ্যান্টিবায়োটিক সঙ্গে রাখা জরুরি।
ভ্রমণে যাওয়ার পূর্বে অবশ্যই অতিরিক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। নিজের ঘরের তৈরি খাবার এবং প্রয়োজনীয় বিশুদ্ধ পানি সঙ্গে রাখতে পারেন। কারণ বাইরের খাবার খেয়ে যে কোনো সময় অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন। অপরিচিত কারো দেওয়া খাবার বা পানীয় পান করবেন না।
ভ্রমণের পূর্বে পর্যাপ্ত ঘুমানোর প্রয়োজন। প্রায়ই যানজটের জন্য দীর্ঘক্ষণ রাস্তাতেই কেটে যায়। এমতাবস্থায় শরীরে যথেষ্ট পরিমাণে শক্তির জোগানের জন্য ভ্রমণের আগে পর্যাপ্ত ঘুম দরকার।
দীর্ঘক্ষণ একস্থানে বসে থাকলে রক্তচলাচল কমে যায়। তাই সম্ভব হলে যাত্রাবিরতিতে কিছুক্ষণ হাঁটাচলা করে নিন। ট্রাভেল করার সময় দির্ঘসময় বসা আবস্থায় থাকলে পায়ের ব্যায়াম করা উচিত। এতে রক্তচলাচল স্বাভাবিক থাকবে।
আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণের প্রকৃষ্ট নমুনা এই ঈদ উল আজহার কুরবানীতে প্রতীয়মান হয়। সবার ভ্রমণ সুন্দর ও নিরাপদ হোক। ঈদ উদজাপন আল্লাহর কাছে গ্রহনযোগ্য ও সুন্দর হউক।
ঈদ মোবারক।
লেখক পরিচিতি :
ডা. মো. ফিকুর রহমান পাটওয়ারী
এমবিবিএস, এফসিপিএস (মেডিসিন), এমসিপিএস (মেডিসিন), এমডি (কার্ডিওলজি), এফএসিসি(আমেরিকা ) , এফইএসসি(ইউরোপ) ,এফএসসিএআই(আমেরিকা) ,এফএপিএসআইসি(সিঙ্গাপুর)
ক্লিনিক্যাল ও ইন্টারভেনশনাল হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ
মেডিসিন বিশেষজ্ঞ
সহযোগী অধ্যাপক কার্ডিওলজি ও ইউনিট প্রধান
কার্ডিওলজি বিভাগ
কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, ঢাকা।
01711675846
01919675846