হাজীগঞ্জে পল্লী বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে জনজীবনে ভোগান্তি চরম
শাখাওয়াত হোসেন শামীম :
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে পল্লী বিদ্যুতের মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিং জনজীবনকে চরম ভোগান্তিতে ফেলেছে। রোজাদার গণ পড়ছেন বিপাকে। ঘরে-বাইরে নেই শান্তি, সেহরি, ইফতার ও তারাবিতে পোহাতে হচ্ছে ভোগান্তি। রাতে ঘন্টার পর ঘন্টা লোডশেডিং,রোজাদার না রাতে ঘুমাতে পারছেন না দিনে। সাহরি,ইফতার এবং তারাবীতেও নেই শান্তি।
বুধবার ৩ এপ্রিল সকাল থেকে বিকাল সাড়ে তিনটা পর্যন্ত উপজেলার পৌর এলাকায় ৪ থেকে ৫ বার লোডশেডিং করা হলেও গ্রামাঞ্চলে ৬ থেকে ৭ বার লোডশেডিং করা হয়েছে। ফলে দিন-রাত ২৪ ঘন্টার মধ্যে দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ পাচ্ছে না গ্রাহকরা।
উপজেলার বিভিন্ন ঈদ মার্কেট গুলোতে মানুষের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তারা বাড়িতে না পারছেন ঘুমাতে,পানির টাংকিতে পানি না থাকায় না পারছেন গোসল করতে,ঈদ মার্কেটে গিয়ে না পারছেন সুখে শান্তিতে ঈদ মার্কেটিং করতে।
এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি চান ব্যবসায়ী ও
সাধারণ মানুষ। প্রচন্ড দাপদাহে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে সর্বস্তরের জনগণ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়,গত কয়েকদিন থেকে হাজীগঞ্জ উপজেলায় পল্লী বিদ্যুতের লোডশেডিং বৃদ্ধি পেয়েছে। এদিকে প্রচন্ড তাপদাহ,ভেপসা গরম আবার সেই সাথে পল্লী বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিং। ফলে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। এতে করে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন উপজেলার পল্লী বিদ্যুতের হাজার হাজার গ্রাহক। এছাড়া ব্যবসায়ীরা সারাদিন দোকানদারি শেষে বাড়িতে ফিরে বিশ্রাম বা শান্তি মত ঘুমাতেও পাড়ছে না। এ লোডশেডিংয়ে শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থ্য ব্যক্তি এবং হাসপাতালে ভর্তিরত ব্যক্তিদের কষ্ট সবচেয়ে বেশি।
পল্লী বিদ্যুতের বেশ কয়েকজন গ্রাহকরা বলছেন, গ্রামাঞ্চলে একবার বিদ্যুৎ চলে গেলে আসার কোন সময় থাকে না। এক-দেড় ঘন্টা পর আসলেও কিছু সময় পর আবার লোডশেডিং করা হচ্ছে। তারা বলছেন,দিনের বেলা লোডশেডিং কম হলেও রাতে ঘন ঘন লোডশেডিং করা হয়। ফলে চড়ম ভোগান্তি পহাতে হচ্ছে।
ঈদের কেনাকাটা করতে আসা সোহাগ হোসেন জানান,গতরাত্রে সর্বমোট বিদ্যুৎ ছিল আড়াই ঘন্টা আমাদের ঘুমে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটেছে, সকালবেলা একটু ঘুমাবো তাও শান্তিতে ঘুমাতে পারিনি। সকাল থেকে আবারও লোডশেডিং শুরু,এ সুযোগে আসলাম ঈদের কেনাকাটা করতে এখানেও শান্তিতে দোকানে কেনাকাটা করা যাচ্ছে না। মাস শেষে আমরা ঠিকই বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করি,কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাই এ ভোগান্তি আর কতদিন।
স্থানীয় অটোচালক মোঃ শরিফ হোসেন জানান আমাদের রিজিক অন্বেষণ এর একমাত্র পথ এ ইজিবাইক। রাতে চার্জ না হওয়ার কারণে দিনের বেলা অটো নিয়ে বের হতে পারি না। ফলে দৈনন্দিন বাজার করা বন্ধ, ইফতারও করতে পারিনা ঈদের কেনাকাটাও করা হয়নি। সঠিক সময়ে আমাদেরকে বিদ্যুৎ দিলে আমরা দু’বেলা দুমুঠো খাবার খেয়ে জীবন বাঁচাতে পারবো।
হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন রান্ধুনীমুড়া মনিনাগ মজুমদার বাড়ির জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আবু মুসা জানান মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিং এর কারণে সাহরি ও ইফতার ঠিকমতো করতে পারিনা। তারাবি কিংবা তাহাজ্জুদে একটু প্রশান্তি নিব তাও সম্ভব হয় না। শুধু মাহে রমজান আসলেই কেন এমনটা হয় কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের প্রশ্ন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর জিএম মোহাম্মদ আতিকুজ্জামান চৌধুরী বলেন,চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ কম পাওয়ায় লোডশেডিং করতে হচ্ছে। শিগগিরই আশা রাখি তা সমাধান করার চেষ্ট চলছে বলে তিনি জানান।