চাঁদপুরে মোবাইল চুরির ঘটনায় প্রবাসীর স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ

জখম হওয়া প্রবাসীর স্ত্রী। ইনসেটে বখাটে যুবক

আশিক বিন রহিম :
চাঁদপুরে মোবাইল চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে রোকেয়া বেগম (৩৫) নামের এক প্রবাসীর স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। বর্তমানে ৪ সন্তানের জননী ওই নারী
শরীরে ধারালো অস্ত্রের ৩টি আঘাত নিয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। গত ৪ জুন বিকেলে চাঁদপুর হাইমচর উপজেলার উত্তর আলগী ইউনিয়নের বিঙ্গুলিয়া গ্রামের ঢালী বাড়িতে এই অমানবিক ঘটনা ঘটে।
আহত রোকেয়া বেগম ওই বাড়ির সৌদি প্রবাসী আনোয়ার হোসেন ঢালী স্ত্রী এবং আনু বেপারির মেয়ে। তিনি দুই মেয়ে ও দুই পুত্র সন্তানের জননী। এই ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত মোবাইল চোর ও সন্ত্রাসী যুবক সবুজ খান (২২) পালাতক রয়েছে।
রোকেয়া বেগম জানান, গত ৪ জুন শুক্রবার সকালে বসত ঘর থেকে তার ব্যবহৃত মোবাইলটি চুরি হয়ে যায়। বহু খোঁজাখুঁজির পর ঘরের পিছনে বাগানে পরিত্যক্ত অবস্থায় মোবাইলটি পাওয়া যায় এবং তার কিছুক্ষণ আগে ওই বাগানে প্রতিবেশী সেকান্দর খানের ছেলে সবুজ খানকে দেখা গেছে। এতে বাড়ির লোকজন নিশ্চিত হন যে সবুজ খানই মোবাইলটি চুরি করেছে।
চোর চিনে ফেলার খবর শুনে বিকেলে বাজার থেকে ফিরে সবুজ খান আচমকাই দেশীয় অস্ত্র নিয়ে রোকেয়া বেগমের উপর হামলা করে। ‘তোকে খুন করে ফেলবে’ বলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে উপর্যুপরি একের পর এক ছুরিকাঘাত করতে থাকে। সবুজের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তার সিনা, ডান হাত এবং কোমরে মারাত্মক জখন হয়। পরে রোকেয়া বেগমের ডাক-চিৎকারে বাড়ির লোকেরা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে। খবর পেয়ে রোকেয়ার দেবর মফিজুর রহমান ঢালী বখাটে সবুজ খানকে ধরাতে তাদের বাড়িতে গেলে সবুজের জেঠা ছালামত খা এবং জেঠাতো বোন রোজিনা বেগমসহ অন্যান্যরা তাকেও আটকে রেখে বেদম পিটিয়ে জখম করে এবং সবুজকে পালিয়ে যেতে সহযোগীতা করে।
পরে আত্মীয়-স্বজনরা তাদের উদ্ধার করে প্রথমে হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। রোকেয়া বেগমের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়া সেখান থেকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। প্রচুর রক্তক্ষরণ হওয়ায় সেখানেও কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রোকেয়া বেগমকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে রেফার করেন। ৩ দিনের চিকিৎসায় শেষে তার অবস্থা উন্নতি না হলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে বর্তমানে তাকে বাড়িতে এনে রাখা হয়েছে।
রোকেয়া বেগমের দেবর মফিজুর রহমান ঢালী বলেন, সবুজ খান এলাকায় মাদক বিক্রি, মোবাইল চুরি সহ নানা ধরনের অপরাধমূলক কাজের সাথে লিপ্ত রয়েছে। বহু আগে সে এলাকাবাসির চাপে নারায়নগঞ্জ চলে যায়। কিন্তু সেখানে গিয়েও বড় ধরনের অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ে। এরপর আবারও দেশের বাড়িতে এসে মাদবসেবন, বিক্রি, মোবাইল ছিনতাই সহ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পরে।
তিনি আরো জানান, সবুজ খানের জেঠা ছেলামত খানের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে সে এলাকায় একের পর এক সন্ত্রাসী কাজ করে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে হাইমচর থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।

শেয়ার করুন

Leave a Reply