ডিগ্রি মুছে ফেলছেন চাঁদপুরের সেই ১৪ রোগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক

নিজস্ব প্রতিবেদক :
চাঁদপুর প্রতিদিনসহ কয়েকটিট গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর অবশেষে ব্যানার-ফ্যাস্টুন থেকে ডিগ্রির পরিচয় মুছতে শুরু করেছেন চাঁদপুরের আলোচিত ‌’১৪ রোগের বিশেষজ্ঞ’ চিকিৎসক ডাঃ মোঃ ইফতেখার উল আলম। চাঁদপুর শহরের স্টেডিয়াম রোডে নিউ আল কারিম ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের সামনে স্যাঁটানো বিশাল ব্যানার থেকে তিনি ডিগ্রিগুলো রঙ দিয়ে মুছে দেন। ৮ সেপ্টেম্বর বুধবার দুপুরে এই দৃশ্য দেখা যায়। এরপর আবারও রাতের আঁধারে আরেকটি ডিগ্রি মুছে ফেলা হয়।


এর আগে বিধবার সকালে দৈনিক চাঁদপুর প্রতিদিনসহ জেলার শীর্ষস্থানীয় দৈনিক পত্রিকাগুলোতে ১৪ রোগের ভুয়া ডিগ্রি বিষয়ে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। যা পাঠক সমাজে টক অব দা টাউন হিসেবে রুপ পায়।
একটি সূত্র থেকে জানা যায়, প্রকাশিত সংবাদের সূত্র ধরে কথিত ১৪ রোগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডাঃ মোঃ ইফতেখার উল আলমকে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে ডাকা হয়।

প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৪ রোগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডাঃ মোঃ ইফতেখার উল আলমের এই বাহারী ডিগ্রী দেখেই গ্রামাঞ্চল থেকে আসা সাধারণ রোগীরা আকৃষ্ট হলেও প্রশ্ন তুলেছেন সচেতনরা। তবে এ নিয়ে কথা বলতে গেলেই অদৃশ্য ক্ষমতার হুমকি-ধমকি দিয়ে থামিয়ে দেন কৌতূহলী রোগীর প্রশ্ন। নতুন করে আবার এখন প্রশ্ন জেগেছে, আসলে তিনি এমবিবিএস ডিগ্রিধারী কিনা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিষয়টি ক্ষতি দেখা প্রয়োজন।

চাঁদপুরে দীর্ঘ সময় ধরে চাঁদপুরে একাধিক প্রাইভেট ক্লিনিকে রোগী দেখছেন ডাঃ মোঃ ইফতেখার উল আলম। তার ভিজিটিং কার্ডে মার্ক করে লেখা রয়েছে- মেডিসিন, বক্ষব্যাধী, শ্বাসকষ্ট, উচ্চরক্তচাপ, কামজ্বর, কিডনী, গ্যাস্টোলিভার, পরিপাকতন্ত্র, ব্রেণ, প্যারালাসিস, ডায়াবেটিক, বাতব্যথা, চর্ম-যৌন ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ। এই ১৪টি ডিগ্রি আদৌ সঠিক, নাকি প্রতারণার ফাঁদ তা জানতে চাঁদপুর সিভিল সার্জন ও চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ মোঃ সাখাওয়াত উল্লাহর স্মরণাপন্য হন একজন ভুক্তভোগী। এসময় ১৪টি জটিল রোগের বিশেষজ্ঞ ডিগ্রীর কথা শুনে চমকে যান খোদ জেলার স্বাস্থ্যবিভাগের সর্বোচ্চ এই কর্মকর্তা।

এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ সাখাওয়াত উল্লাহ জানান, এই নামে চাঁদপুরের কোন চিকিৎসকে আমি চিনি না। একজন চিকিৎসক এতোগুলো রোগের বিশেষজ্ঞ ডিগ্রিধারী হওয়াটা খুবই কঠিন বিষয়। এতোগুলো ডিগ্রীর বৈধ কাগজপত্র না থাকলে তিনি এগুলো ব্যবহার করতে পারেন না। তবে সত্যিই যদি তার এতসব ডিগ্রী থেকে থাকে তবে ভিন্ন কথা।
ডাঃ মো সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, তিনি কি সরকারি না বেসরকারি চিকিৎসক সেটিও জানি না। তার কোন কাগজপত্র আমাদের কাছে জমা দেননি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। ১৪টি ডিগ্রি সঠিক কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে। প্রতারণার প্রমান পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

শেয়ার করুন

Leave a Reply