নষ্ট হচ্ছে অভিযানে জব্দকৃত জেলেনৌকা, জরিমানা দিয়ে নৌকা ছাড়িয়ে নিয়েছেন অনেকে

নিজস্ব প্রতিবেদক :
চলতি বছরের মার্চ-এপ্রিল দুই মাস জাটকা রক্ষা কর্মসূচি বাস্তবায়নের সময় চাঁদপুর অভয়াশ্রম এলাকা থেকে জব্দকৃত শ’খানিক জেলে নৌকার মালিকানা শনাক্ত না হওয়ায় ইঞ্জিনসহ রোদ, বৃষ্টি ও ঝড়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এসব নৌকাগুলোর মূল্য বাজার দরে কোটি টাকারও বেশি। তবে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জানিয়েছেন, জেলা টাস্কফোর্সের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গরীব জেলেদের নৌকাগুলো জরিমানা করে ছেড়ে দেয়া হবে। যাদের নৌকা জব্দ করা হয়েছে তারা এডিএম কোর্টে আবেদন করলে জরিমানা করে নৌকাগুলোর মালিক দিয়ে দেয়া হবে। ইতোমধ্যে কয়েকটি নৌকা ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তবে এখনো বেশ কিছু নৌকা রয়ে গেছে। শেষ পর্যন্ত মালিকা সনাক্ত না হলে এগুলো টেন্ডারে বিক্রি হবে।
চাঁদপুর নৌ থানা ও লঞ্চঘাটের পূর্ব পাশের জেটির পাশে দেখা যায় অর্ধশতাধিক ছোট বড় জেলে নৌকা। যেগুলোর মধ্যে কোনো কোনো নৌকায় একাধিক ইঞ্জিন রয়েছে। বড় নৌকাগুলোর বর্তমান বাজার মূল্য আড়াই লাখ টাকা। একদম ছোট সাইজের ইঞ্জিন চালিত নৌকার দাম ৫০ হাজার টাকা। সে হিসেবে জব্দৃকত ৪০-৫০টি বড় নৌকার মূল্যমান হয় কোটি টাকা।
চাঁদপুর সদরের জেলে নেতা তসলিম বেপারী বলেন, অভিযান চলাকালীন সময়ে আমরা জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বলেছি নৌকাগুলো তাৎক্ষণিক টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি করার জন্য। কিন্তু তা আর হয়নি। যে কারণে কোটি টাকা মূল্যমানের নৌকাগুলো নষ্ট হচ্ছে। কারণ, নৌকাগুলোর মালিক শনাক্ত ছাড়া জরিমানা কিংবা ছাড় দেওয়া হয় না। কারণ এসব নৌকা জব্দের সময় মামলা করে জব্দ তালিকা করা হয়। বর্তমানে এসব নৌকা নৌ পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চলতি বছরের জাটকা সংরক্ষণের দুই মাস (মার্চ-এপ্রিল) শুধুমাত্র হাইমচর উপজেলায় অভিযানকালে ২৮টি জেলে নৌকা জব্দ হয়। সেগুলো মৎস্য আইনের বিধান অনুযায়ী উপজেলা টাস্কফোর্সের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ১১ লাখ ৪১ হাজার ৮০৫টাকা তাৎক্ষণিক টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি হয়। এসব টাকা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা শেষে সরকারি কোষাঘারে জমা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
এদিকে, অভয়াশ্রম এলাকার মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ ও সদর উপজেলায় একই নিয়মে জব্দকৃত জেলে নৌকা টেন্ডারে বিক্রি করার নিয়ম থাকলেও বিক্রি হয়নি। যে কারণে জেলেদের জব্দকৃত নৌকাগুলো যেখানেই আছে, সেখানে পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুল বাকি বলেন, জব্দকৃত নৌকাগুলো তাৎক্ষণিক টেন্ডারে বিক্রি হয়নি। তবে এখনো অনেকে নৌকার মালিক জেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করে জরিমানা দিয়ে ছাড়িয়ে নিচ্ছেন। মালিক শনাক্ত না হলে এসব নৌকা টেন্ডারে বিক্রি হবে।
তিনি বলেন, বর্তমানে কোস্টগার্ডের এখানে কয়েকটি নৌকাসহ আরও কয়েকটি নৌকা পড়ে আছে। এগুলোর মালিকদের কেউ কেউ আমাদের সাথে যোগাযোগ করছেন। আমরাও তাদেরকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছি। অনেকেই নৌকা ছাড়িয়ে নিয়েছেন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply