ভাঙা ঘরে মানবেতর জীবন বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাশেমের

কামরুজ্জামান হারুন :
যৌবনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন আবুল হাশেম। তিনি চাঁদপুরের হাজিগঞ্জ এলাকায় একাধিক সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেন। বৃদ্ধ বয়সে একটু মাথা গোচার ঠাই করে দেয়ার আকুল আবেদন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে।
দেশ স্বাধীন করলেও বৃদ্ধ বয়সে অভাবের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে জীবন চলছে তার। তার ওপর থাকার ঘড়টিও ভাঙা। রোদ-বৃষ্টি-পানির সঙ্গে প্রতিনিয়ত লড়াই করে টিকে থাকতে হয় সেই ভাঙা ঘরে।
মতলব উত্তর উপজেলার কলাকান্দা ইউনিয়নের হানিরপাড় গ্রামের এই মুক্তিযোদ্ধা জানালেন তার দুঃখ আর কষ্টের কথা।
চরম দারিদ্রতার কষাঘাতে দিন পার করা মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাশেম তার মাসিক সম্মানি ভাতার ১২ হাজার টাকা দিয়ে কোনো রকমে সংসার চালান।
স্ত্রী, ২ ছেলে ও ১ মেয়ে রয়েছে তার। এরমধ্যে ১ মেয়ের বিয়ে হয়েছে। বড় ছেলে ঢাকায় টং দোকন করে নিজের খরচ বহন করে। আর ছোট ছেলেও বেকার।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, এক কক্ষ বিশিষ্ট জরাজীর্ণ ভাঙা দু’চালা টিনের ঘরে বসবাস করছেন এই মুক্তিযোদ্ধা। অর্থের অভাবে সংস্কার করতে পারছেন না তার বসত ঘরটি। একটু বৃষ্টি হলেই টিনের চালা থেকে ছিদ্র দিয়ে পানি পরে ঘরের আসবাবপত্র ভিজে যায়।
মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাশেম বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধ করেছি। দেশ স্বাধীনের পরে লঞ্চে কাজ করেছি। কোনো মতে থাকার জন্য একটি দুচালা টিনের ঘর করেছি। নগদ পুঁজি বলতে কিছুই নেই যার কারণে ঘর মেরামত করতে পারছি না।
বর্তমানে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের ঘর নির্মাণের জন্য আর্থিক সহযোগিতা করার ঘোঘণা দিয়েছেন। আমি অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন বরাদ্দের জন্য আবেদন করেছি। আবাসন নির্মাণের জন্য অর্থ বরাদ্দ পেলে আমার উপকার হবে। আমাকে আর ভাঙা ঘরে থাকতে হবে না।
মুক্তিযোদ্ধ আবুল হাশেমের স্ত্রীও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি কামনা করে বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য শেখের বেটি দালান দিতেছে। আমগো একটা দালান দিলে ভালা হয়।
কলাকান্দা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য অলিউল্লাহ দর্জি বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাশেম খুবই অসহায়। ভাঙ্গা একটি দু’চালা ছোট ঘরে তার বসবাস। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একটু দৃষ্টি দিলে অসহায় বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাশেমের খুবই উপকার হবে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply