হাইমচরে পানচাষিদের মাথায় হাত

আশিক বিন রহিম, হাইমচর থেকে ফিরে
এমনিতেই করোনাভাইরাসের কারণে সঠিক দাম না পেয়ে লোকসানে রয়েছে চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার পানচাষীরা। এমন ক্ষতের উপশম না হতেই ‘মরার উপর খাড়ার ঘা’ হলো অস্বাভাবিক জোয়ারের পানি। হঠাৎ মেঘনার পানি বেড়ে উপজেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণের অস্থায়ী বাঁধের দুটি স্থান ভেঙে প্রায় ৫ শতাধিক পানের বরজ প্লাবিত করেছে। কয়েকশ’ বরজে পানি ঢুকে নষ্ট হয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকার পান। এতে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন পানচাষিরা।


সরেজমিন গিয়ে জানাযায়, প্রায় ৭০ বছর আগে থেকে চাঁদপুরের হাইমচর এলকায় পান চাষ হয়ে আসছে। বাজারে পানের চাহিদা বাড়ার পাশাপাশি অর্থিকভাবে লাভবান হওয়ায় নদীঘেঁষা হাইমচরে কৃষকরা পান চাষে বেশ আগ্রহী হয়ে উঠে। সময়ের সাথে সাথে হাইমচরের পানের চাহিদা বিদেশেও রয়েছে। এতে নতুন সম্ভাবনা দেখা দেয় এই খাতে।
হাইমচর উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এই উপজেলায় ২২০ হেক্টর জমিতে পান চাষ হয়েছে। এখানে প্রায় ২০০ এর বেশি পান চাষি এ এলাকায় পান চাষ করছেন।
স্থানীয় কৃষকদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, এবছর পানের উৎপাদন ভালো হলেও বিক্রি নেই তেমন। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে দিনের পুরো সময় চা-পানের দোকানগুলো বন্ধ থাকায় পানচাষিদের পান বিক্রিতে এর প্রভাব পড়ে। এদিকে ৫ আগস্ট হঠাৎ মেঘনার পানি বেড়ে গিয়ে উপজেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণে উত্তর আলগী মোহজনপুর এবং সাবু মাস্টারের মোড়ের অস্থায়ী বাঁধের দুটি স্থান ভেঙে যায়। বিপদ সীমার ৭৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবহিত মেঘনার পানি সেচ প্রকল্পের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে পানের বরজ প্লাবিত করেছে। মুহূর্তেই কয়েকশ’ বরজে পানি ঢুকে নষ্ট করে ফেলে লক্ষ লক্ষ টাকার পান। বর্তমানে প্রায় প্রায় ৫ শতাধিক পানের বরোজে হাঁটু সমান পানি অবস্থান করছে। এতে বাধ্য হয়ে অপ্রাপ্ত পান ঘরে তুলতে হচ্ছে। আর পানের বরোজে ২দিনের বেশি পানি থাকলে পানের লতাগুলো মরে যাবে।
স্থানীয় পান চাষি মুকবুল হোসেন জানায়, এমন অপ্রত্যাশিত দুটি ঘটনায় বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন চাষিরা। পানচাষের সঙ্গে জড়িত হাজার হাজার মালিক ও শ্রমিকদের পরিবার দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
তিনি আরো জানান, এই ক্ষতির থেকে পান চাষিদের ঘুড়ে দাঁড়াতে সরকারি সহযোগিতা প্রয়োজন। তাই হাইমচরে পান চাষিদের অসহায়ত্বের কথা বিবেচনায় রেখে সরকার তাদের সহযোগিতা করবে বলে আশা করেন তারা।

শেয়ার করুন

Leave a Reply