৬১ লাখ টাকা : অটোচালকের সততায় অবাক পুলিশ সুপার দিলেন পুরস্কার

সততার কারণে অটোরিক্সা চালককে পুলিশ সুপারের পক্ষ থেকে পুরস্কৃত করা হয়।

ইব্রাহীম রনি :
চাঁদপুরে যাত্রীর ফেলে যাওয়া ৬১ লাখ টাকা যত্ন করে রেখে তা পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন ১৫ বছর বয়সী কিশোর অটোরিকশাচালক  সজীব। তার এমন সততায় অবাক হয়েছেন জেলার পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান। অটোরিক্সা চালকের সততার জন্য তাকে তিনি দিয়েছেন ৫ হাজার টাকা পুরস্কার।
পুলিশ জানায়, রবিবার বিকাশ এজেন্ট তার কর্মীকে দিয়ে ইউসিবিএল ব্যাংকের স্থানীয় একটি শাখা থেকে উত্তোলন করে যাওয়ার পথে অটোরিক্সায় ফেলে রেখে যান। এরপর টাকাগুলো ফেরত দেয়ার জন্য ওই যুবক টাকাগুলো নিয়ে আধাঘন্টা অপেক্ষা করে। কিন্তু কেউ না আসায় ফিরে যায় পুরাণবাজারের গ্যারেজে। পরবর্তীতে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলে টাকা উদ্ধারে মাঠে নামে পুলিশ।
পুলিশ সুপার তার ফেইসবুক আইডিতে লিখেছেন, আজ (২১/০৬/২০২০) দুপুরে (আনুমানিক সাড়ে বারোটার দিকে) যখন রেঞ্জ ডিআইজি চট্টগ্রাম স্যারের সভাপতিত্বে রেঞ্জের ১১টি জেলার ক্রাইম কনফারেন্স চলছিল, তখন একটি ফোন আসে, চাঁদপুর জেলার প্রধান বিকাশ এজেন্টের ৬১ লক্ষ টাকা ছিনতাই হয়েছে।
অতঃপর বিকাল চারটা থেকে শুরু হওয়া আইজিপি স্যারের ভিডিও কনফারেন্স শেষ হওয়ার পরে বিষয়টি নিয়ে কাজ করতে যেয়ে অবাক করা একটি ফোন এলো।
“স্যার পুলিশ পাঠান, একটা ব্যাগ পাওয়া গেছে!”
ফোনে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সেই সিএনজি চালক এবং ব্যাগ চাঁদপুর সদর থানায় এনে, সকল সাংবাদিকের সামনে খোলার পরে ৬১ লক্ষ টাকা (সম্পূর্ণ টাকা) পাওয়া যায় এবং বিকাশ এজেন্টকে পুরো টাকা বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
অবাক বিষয়:
“সিএনজি চালক টাকার ব্যাগ বুঝতে পেরে ভয় পেয়ে যে গ্যারেজে সিএনজি রাখে, সেই গ্যারেজের অন্য আরেকজনকে দিয়ে, পুলিশকে মেসেজটি জানিয়েছিল।”
“সিএনজিচালকের মত অবাক করা লোক,
এখনো পৃথিবীতে আছে।’
পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান বলেন, এটি অলৌকিক ব্যাপার। সৎ মানুষ এখনো পৃথিবীতে আছে। তার সততায় মুগ্ধ হয়ে আমি তাকে সামান্য পুরস্কার দিয়েছি।
তিনি বলেন, টাকাগুলো আসলে ছিনতাই হয়নি। টাকাগুলো মিসিং হয়েছিল। টাকাগুলো অটোতে রেখে চলে গিয়েছিলেন। অটোরিক্সাচালক টাকাটা পাওয়ার পর পুলিশকে জানানো হয়েছে। পরে আমরা গিয়ে পুরো টাকাটাই পেয়েছি।

হারিয়ে যাওয়া ৬১ লাখ টাকা বিকাশ এজেন্টকে বুঝিয়ে দেয় মডেল থানা পুলিশ।

উল্লেখ্য, রবিবার বেলা সাড়ে ১১টায় বিকাশ এজেন্ট কর্মী মাসুদ হোসেন শহরের ইউসিবিএল ব্যাংক থেকে ৬১ লাখ টাকা উত্তোলন করেন। ব্যাংক থেকে নেমে ব্যাগভর্তি সেই টাকা নিয়ে একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় উঠে শহরের জোড় পুকুরপাড় এলাকায় এসে নামেন মাসুদ। কিন্তু ভুলক্রমে অটোরিকশাতেই টাকাগুলো রেখে নেমে যান তিনি। সেখানে বিকাশের এজেন্ট আলমগীর হোসেন জুয়েল নিজের ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে মাসুদের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এরপর তারা দুইজন ফরিদগঞ্জে কাজে চলে যান। প্রায় আধঘণ্টা পর মাসুদ বুঝতে পারেন যে টাকার ব্যাগটি তিনি অটোরিকশায় ফেলে এসেছেন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply