শিক্ষার্থীদের মাঝে সাংস্কৃতিক মনোভাব ও নেতৃত্বগুণ জাগানোর জন্য ধর্মীয় ও বিজ্ঞান বিষয় নিয়ে সাপ্তাহিক জলসা করবেন : জেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ রুহুল্লাহ
চাঁদপুর আহমাদিয়া ফাযিল মাদরাসায় মতবিনিময় সভা
নিজস্ব প্রতিবেদক
চাঁদপুর আহমাদিয়া ফাযিল( ডিগ্রী) মাদ্রাসা পরিদর্শনে আসেন চাঁদপুরের নবাগত জেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ রুহুল্লাহ।
এই পরিদর্শনে তাঁর সাথে আরো ছিলেন, সহকারী জেলা শিক্ষা অফিসার জাকির হোসেন পাটওয়ারী।
বুধবার ( ১৫ জানুয়ারি) সকালে শহরের নতুন বাজারস্থ ঐতিহ্যবাহী এ মাদ্রাসায় এলে তাঁকে স্বাগত জানান, মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ মজুমদার, উপাধাক্ষ্য মাওলানা মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, শিক্ষক প্রতিনিধি সহকারি অধ্যাপক ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী, সহ অন্যান্য শিক্ষক কর্মচারীবৃন্দ। পরে তিনি শিক্ষক মিলনায়তনে শিক্ষকদের সাথে মতবিনিময়ে মিলিত হন। মতবিনিময় সভায় জেলা শিক্ষা অফিসার জনাব মোহাম্মদ রুহুল্লাহ বলেন, শিক্ষার্থীদের পড়ানো এবং জ্ঞানার্জনে শিক্ষকদের বেশি পরিমাণে স্টাডি করতে হবে। আপনারা যতোবেশি জানবেন ততোই শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পারবেন। তিনি বলেন, মাদরাসা শিক্ষায় গুনগত মান বাড়াতে হবে। সাধারণ শিক্ষার এবং তার পাশাপাশি অবশ্যই এর কোরাণ হাদিস শিক্ষাকে প্রাধান্য দিতে হবে।
মুসলমান হিসেবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ এবং দুনিয়া ও আখেরাতে কল্যাণের জন্য আল্লাহ পাকের নিকট সাহায্য চাওয়ার লক্ষ্যে নিয়মিত তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া , নামাজে দীর্ঘ সেজদা এবং সেজদায় কুরআন ও হাদীসের প্রার্থনা মূলক দোয়া সমূহ বেশি বেশি পড়ার উপরে জোর দেবেন । তথা আমাদের রাসুলের জীবন ও কর্মকে অনুসরণ করে চলার শিক্ষা দেবেন। তিনি বলেন, রাতে এশার নামাজ ও খাওয়ার পরে বেশি রাত না জেগে ঘুমিয়ে পড়া ও গভীর রজনীতে উঠে তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করা ও সকাল বেলায় ফজরের পরে না ঘুমিয়ে কোরআন মাজীদ তেলাওয়াত ও বিভিন্ন বিষয়ে স্টাডি করার উপরে জোর দেন। এছাড়া আরবী শিক্ষক যারা জুমা ও অন্যান্য বয়ান করেন, তারা ভালোভাবে স্টাডি করে কোরআন ও হাদিসের সঠিক বাণী প্রচারের জন্য পরামর্শ দেন তিনি। যাতে মানুষ সংশোধিত হয় ও উপকৃত হয়। শিক্ষার্থীদের কে সুশিক্ষা দানের নিমিত্তে শিক্ষকদেরকে নিজে সুশৃংখল ও এবাদতকারী হওয়ার উপরে গুরুত্ব দেন তিনি । তিনি শিক্ষকদেরকে মোবাইলের অপব্যবহারের বিষয়ে সজাগ করে দিয়ে বলেন, মোবাইল হল বর্তমান সময়ে ডিজিটাল মাদক। এই মাদকে শুধু প্রজন্মই নয়, আমাদের সমাজের রাষ্ট্রের একটা বড় অংশ আসক্ত হয়ে পড়েছে। এর অপ্রয়োজনীয় তথা অপব্যবহার থেকে শিক্ষকরা এবং শিক্ষার্থীরা কিভাবে মুক্তি পাবেন, সেটার জন্য কাজ করতে হবে।
শিক্ষা অফিসার গত জুলাই বিপ্লবের আগের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, বিপ্লবের আগে প্রশাসন সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে অনিয়ম বিশৃঙ্খলা ছিল সেটা এখন কেটে যাচ্ছে। আর ঐ জুলাই বিপ্লব ও বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরাও নেতৃত্বের একটা বড় অংশে ছিলো এবং এখনো আছে । তারা অবদান রেখে যাচ্ছে ।
এদিকে তিনি দুপুরবেলায় মাদ্রাসায় মিড ডে চালুর ব্যাপারে পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, দুপুরের খাবারের আগের পিরিয়ডের শিক্ষক শিক্ষার্থীদের কে নিয়ে একসাথে দ্বিপ্রহরের আহার করবেন এজন্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীগণ বাসা থেকে পানি ও খাবার নিয়ে আসবেন।এই অভ্যাস শুরু করলে সফলতা আসবে। শিক্ষার্থীদের মাঝে সাংস্কৃতিক মনোভাব ও নেতৃত্বগুণ জাগানোর জন্য ধর্মীয় ও বিজ্ঞান বিষয় নিয়ে সাপ্তাহিক জলসা যেখানে কোরান তালাওয়াত, হামদ, নাথ, ইসলামিক গান, বিতর্কসহ নানা বিষয় থাকবে। এতে করে শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রানের সন্চার হবে। নিজের পাঠ পরিক্রমার পাশাপাশি সে তার জ্ঞান প্রসারে এবং সকল প্রকার জড়তা কাটাতে পারবে। ভেতরে বাহিরে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে তার সকল প্রতিভাকে বিকশিত করতে পারবে।
তিনি আরো বলেন,শিক্ষক,শিক্ষার্থী অভিভাবক এই তিনের মেলবন্ধনেই আদর্শ শিক্ষার্থী গড়ে উঠবে।
মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মো. মাসুম বিল্লাহ মজুমদার তাঁকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, আপনার এই পরিদর্শন এবং মূল্যবান বক্তব্য আমাদের শিক্ষকগনকে অনুপ্রেরণা যুগাবে।