চাঁদপুর শহরে উঠছে বানের পানি

এইচ.এম নিজাম :
কয়েকদিন যাবত ধারাবাহিকভাবে মুষলধারে বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা ও ডাকাতিয়ার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। উজান থেকে নেমে আসা জোয়ারের ঢল আর ভারী বর্ষণে চাঁদপুরে পদ্মা মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মেঘনার পানি চাঁদপুর পয়েন্টে বিপদসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় জোয়ারের সময় শহরের কয়েকটি রাস্তা ও পাড়া-মহল্লায় পানি উঠে যাচ্ছে। এছাড়া বৃষ্টির পানিও অনেক এলাকায় আটকা পড়ছে।


শহর ঘুরে দেখা গেছে, গত দু’ দিন ধরে শহরের নাজিরপাড়া, রহমতপুর কলোনী, মাদ্রাসা রোড, তালতলা, প্রফেসর পাড়া ও বিষ্ণুদী এলাকা জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। পানিতে শহরের বিভিন্ন এলাকা পানিবন্দি হয়ে পড়ে। এতে করে শহরবাসীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। আবার ভাটির সময় পানি কমে যাচ্ছে।
শহরের বাইপাস সড়ক বঙ্গবন্ধু রোড, তালতলা থেকে বিপনিবাগ পর্যন্ত কুমিল্লা রোডসহ প্রায় গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে পানি উঠে গেছে। সুয়ারেজ ড্রেন দিয়ে প্রবেশ করা জোয়ারের পানি আর ভারী বর্ষণে সড়কে খোঁড়া খন্দক সৃষ্টি হচ্ছে।
এদিকে দেশের উত্তরাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় চাঁদপুরে ও বন্যার আশংকা করা হচ্ছে। এমনটাই বলেছেন চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ বাবুল আক্তার। গত মঙ্গলবার মেঘনা নদীর জোয়ারের পানির পরিমাণ ৪.৫৩ সেন্টিমিটার রেকর্ড করা হয়।
এ প্রকৌশলী বলেন, জোয়ারের সময় বানের পানি ঢুকছে আবার ভাটার সময় তা নেমে যাচ্ছে। বিশেষ করে নিচু এলাকাগুলোতে এ অবস্থা বিরাজ করছে।
পানি বৃদ্ধির পাশাপাশি নদীর তীরবর্তী অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় চলছে নদী ভাঙ্গন। চাঁদপুর সদর উপজেলার ইব্রাহিমপুর, হানারচর, রাজরাজেশ্বর, তরপুরচন্ডী আনন্দবাজার, বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন ও শহরের পুরানবাজার এলাকার বাসিন্দারা ভাঙ্গনের শিকার হচ্ছেন।
এদিকে পদ্মা মেঘনার মিলনস্থলে নদীর পানি ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করায় হুমকির মধ্যে রয়েছে শহররক্ষা বাঁধ।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ বাবুল আক্তার এর সাথে কথা বললে তিনি জানান, জোয়ারের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় চাঁদপুরে বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে এই সময়ে পানি বেশিক্ষণ থাকে না। জোয়ারে পানি বৃদ্ধি পেলেও ভাটায় তা কমে যায়। তিনি বলেন, চাঁদপুর শহর রক্ষা বাঁধ ও দুটি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্ট গুলোতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। শহররক্ষা বাঁধের জন্য প্রায় ৩ হাজার বালু ভর্তি জিও ব্যাগ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply